মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ভূমিকম্প দেশটির জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের জন্য কূটনৈতিকভাবে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পে প্রায় ২ হাজার ৯০০ জন নিহত হয়েছেন, যা দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগের ফলে কূটনৈতিক যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রায় স্থগিত ছিল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ভূমিকম্পের আগে থেকেই মিন অং হ্লাইং থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। থাই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার তিনি ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে যোগ দেবেন।

এই সফরটি জান্তা প্রধানের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার একটি সুযোগ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত, চীন ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর কাছে মিয়ানমারে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বিশ্লেষক অংশুমান চৌধুরী বলছেন, বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তিগুলো এই সংকটকে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য কাজে লাগাতে চাইবে। জান্তা প্রশাসনও এই সুযোগ নিয়ে নিজেদের অপরিহার্যতা তুলে ধরতে চাইবে।

ভূমিকম্পের পর থেকে মিন অং হ্লাইং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই আলোচনার ফলে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রবাহিত হচ্ছে।

সম্প্রতি সামরিক বাহিনী বিরোধীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ব্যর্থ হওয়ার কারণে জান্তার ওপর চাপ বাড়ছিল। তবে ভূমিকম্প-পরবর্তী পরিস্থিতি তাদের জন্য কূটনৈতিকভাবে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকের পর মিন অং হ্লাইং আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন।

তবে, সমালোচকরা বলছেন, জান্তা প্রশাসন এই দুর্যোগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে এবং বিরোধী দল ও সাধারণ নাগরিকদের সহায়তা দিতেও দ্বিধা করছে। বিভিন্ন দেশ থেকে সহায়তা আসলেও জান্তা বাহিনী সামরিক অভিযান বন্ধ করেনি।

আঞ্চলিক বিশ্লেষক সিহাসাক ফুয়াংকেটকেও বলেন, জান্তা প্রশাসন মনে করে, তারা চীন, রাশিয়া ও ভারতের সহায়তায় টিকে থাকতে পারবে।

তবে বিমসটেক সম্মেলন মিন অং হ্লাইংয়ের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার আরেকটি সুযোগ হয়ে উঠতে পারে। ভারত ইতোমধ্যে মিয়ানমারে সহায়তা পাঠিয়েছে, যা জান্তা প্রধানের জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মিন অং হ্লাইংয়ের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্লেষক চৌধুরী বলেন, মোদি ইতোমধ্যে জান্তা প্রধানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে জান্তা প্রধানের সম্ভাব্য বৈঠক নিয়েও আলোচনা চলছে।

কয়েকজন বিশ্লেষক মনে করেন, থাইল্যান্ড এই পরিস্থিতিতে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করছে, কারণ মিয়ানমারের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক বিশ্লেষক থিতিনান পংসুধিরাক বলেন, মিয়ানমারে এখন একটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ চলছে। এই অবস্থায় থাইল্যান্ডকে অত্যন্ত সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews