চট্টগ্রাম ইপিজেডের আরএসবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড খেলা ও জিমের পোশাক রপ্তানি করে; শনি ও রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের জন্য এসব পণ্যের ১২টি চালান প্রস্তুত রেখেও তারা পাঠাতে পারেনি।
কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের অপসারণের দাবিতে দেশের কাস্টম হাউজগুলোতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য যাওয়া-আসা ছিল বন্ধ।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ আরএসবি কোম্পানির কর্ণধার। এনবিআরে আন্দোলনের কারণে রপ্তানির চালান আটকে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা ভর করে তার মনে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, শুধু যে রপ্তানির চালান পাঠাতে সমস্যা হয়েছে–তা নয়, পোশাক তৈরির জন্য আমদানি করা কাঁচামালের আটটি চালানও ছাড় করাতে পারেননি তারা।
সেজন্য বন্দরে তাকে বাড়তি মাশুলও গুণতে হচ্ছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ‘গুডউইল’ও নষ্ট হবে।
শুধু যে তৈরি পোশাক খাতের এ উদ্যোক্তা সংকটে পড়েছেন, তা নয়। চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের অন্যান্য বন্দর ও শুল্ক স্টেশনেও কাজ না হওয়ায় দেশজুড়ে আমদানি-রপ্তানির কাজ স্থবির হয়ে পড়েছিল। তাতে বন্দরে বন্দরে বেড়েছে পণ্যজট। শিল্প কারখানায় কাঁচামালের সরবরাহ নিয়েও সংকট তৈরির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ কারণে এনবিআর কর্মীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ প্রথম দিন শনিবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করেন বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার কথা তারা
তুলে ধরেন।
কঠোর হল সরকার, অনড় অবস্থা টললো আন্দোলনকারীদের
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের টানা আন্দোলনের মধ্যে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ দ্বিতীয় দিন রোববার নড়েচড়ে বসে সরকার। এনবিআরের সেবা ’অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণা করে আন্দোলনরতদের কাজে যোগ দিতে কঠোর হুঁশিয়ারি আসে।
এরমধ্যেই আন্দোলনরত ছয় এনবিআর কর্মকর্তার ‘দুর্নীতির’ তথ্যানুসন্ধান শুরুর তথ্য দেয় দুদক।
আগের সূচি অনুযায়ী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল তাতে বসতে চাননি অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। কমপ্লিট শাটডাউন চালু রাখা অবস্থায় তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলতে অপারগতা জানান।
এরমধ্যে সংকটের সমাধানে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করার কথা জানায় সরকার।
দিনভর নানা নাটকীয়তার মধ্যে পরে ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থ উপদেষ্টা। সেখানেই মেলে সমাধানের সূত্র। ওই বৈঠকে ‘ইতিবাচক আশ্বাসের’ ভিত্তিতে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ শাটডাউন কর্মসূচি তুলে নেয়।
দাবি সরকারের কাছে, ভুগলেন ব্যবসায়ীরা
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সিমেন্ট প্রস্তুতকারক হোলসিম সিমেন্ট ও প্রিন্টিং খাতের কোম্পানি আকিজ প্রিন্টিংয়ের আমদানি করা কাঁচামাল এসে পড়ে রয়েছে স্থলবন্দরে।
যথাসময়ে এগুলো খালাস করতে না পারলে কারখানার উৎপাদন লাইন চালু রাখায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তুলে ধরেন কোম্পানি দুটির পণ্য খালাসের কাজ করা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে দেশের কাস্টম হাউজগুলোতে কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলে কোম্পানি দু’টি মাল খালাস করতে পারেনি।
তাতে কোম্পানি দুটির কর্মকর্তাদের তরফে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল লতিফ তার গ্রাহকদের কাঁচামাল সংকট তৈরির আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত এক সপ্তাহ ধরে বেনাপোল বন্দরে তার ১৫ থেকে ২০ গাড়ি মাল আটকে রয়েছে। এর মধ্যে আকিজ প্রিন্টিং ইঙ্কের কাঁচামাল আছে, হোলসিম সিমেন্টের কাঁচামাল আছে, বার্জার পেইন্টের মাল আছে।
“কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলম বিরতি ও কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে এসব মালামাল কয়েকদিন ধরে বন্দর থেকে ছাড় করাতে পারছি না।“
তার আমদানিকারকরা ‘আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’ দাবি করে চলমান আন্দোলনের ‘সুষ্ঠু সমাধানের’ প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি।
এনবিআরে অচলাবস্থা তৈরির কারণে দেশের ব্ন্দরে বন্দরে শুল্কায়ন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শুরুটা হয় সপ্তাহখানেক আগেই।
এটি চূড়ান্ত রূপ পায় শুক্রবারের মধ্যে চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা হলে শনিবার থেকে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মাধ্যমে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়, সংস্থাটির সকল অফিস থেকে ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিও।
এতে সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট ও শুল্ক স্টেশনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক সেবা কার্যক্রমের বাইরে সব কিছু বন্ধের লক্ষ্যে এনবিআরের অনলাইন সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এতে কলমবিরতির মধ্যে ঢিমেতালে চলা মাল খালাস ও শুল্কায়নের কার্যক্রম একদম বন্ধ হয়ে পড়ে ‘শাটডাউনের’ এ দুদিনে। আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কোনো ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল করা যায়নি এ সময়ের মধ্যে।
এতে করে দেশের বড় শুল্ক স্টেশন বেনাপোল, চট্টগ্রামসহ সব খানেই আমদানি ও রপ্তানির জট তৈরি হয়েছে।
এর সমাধানে সরকারকে অতি দ্রুত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান শাটডাউনের প্রথম দিনেই জানানো হয় বিজিএমইএ, বিটিএমএসহ ব্যবসায়ীদের ১১টি সংগঠনের তরফে।
শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোযার-উল-আলম চৌধুরী বলেন, “উদ্ভূত সমস্যা নিরসনে মোটেও সময় ব্যয় না করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নেতৃত্বে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিডার যৌথভাবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা খুবই জরুরি।”
বন্দরের কী হাল?
দেশের বৃহত্তম স্থল বন্দর বেনাপোলে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সিমেন্ট প্রস্তুতকারক হোলসিম সিমেন্ট ও প্রিন্টিং খাতের কোম্পানি আকিজ প্রিন্টিংয়ের আমদানি করা কাঁচামাল এসে পড়ে রয়েছে স্থলবন্দরে।
যথাসময়ে এগুলো খালাস করতে না পারলে কারখানার উৎপাদন লাইন চালু রাখায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তুলে ধরেন কোম্পানি দুটির পণ্য খালাসের কাজ করা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে দেশের কাস্টম হাউজগুলোতে কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলে কোম্পানি দু’টি মাল খালাস করতে পারেনি।
তাতে কোম্পানি দুটির কর্মকর্তাদের তরফে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল লতিফ তার গ্রাহকদের কাঁচামাল সংকট তৈরির আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত এক সপ্তাহ ধরে বেনাপোল বন্দরে তার ১৫ থেকে ২০ গাড়ি মাল আটকে রয়েছে। এর মধ্যে আকিজ প্রিন্টিং ইঙ্কের কাঁচামাল আছে, হোলসিম সিমেন্টের কাঁচামাল আছে, বার্জার পেইন্টের মাল আছে।
“কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলম বিরতি ও কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে এসব মালামাল কয়েকদিন ধরে বন্দর থেকে ছাড় করাতে পারছি না।”
তার আমদানিকারকরা ‘আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’ দাবি করে চলমান আন্দোলনের ‘সুষ্ঠু সমাধানের’ প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি।
চলমান দুদিনের আন্দোলনে চট্টগ্রামের ১৯টি বেসরকারি ডিপোতে পোশাক শিল্প মালিকদের কন্টেইনার জমছে। সাধারণত তৈরি পোশাক কারখানা থেকে পণ্য বেসরকারি ডিপোতে আসার পর সেসব কন্টেইনারে বোঝাই করার পর জাহাজীকরণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে কাস্টমসের কর্মীরা কাজ না করায় বেসরকারি ডিপো থেকে এসব কন্টেইনার বন্দরে যেতে পারছে না।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কাস্টমসকর্মীদের শাটডাউনের কারণে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ডিপো থেকে বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না। আবার আমদানি পণ্যের কন্টেইনার ডিপোতে আনা যাচ্ছে না।
বিভিন্ন ডিপোর বাইরে রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি পড়ে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রতিদিন ডিপোগুলো থেকে গড়ে ২২০০ টিইইউস কন্টেইনার বন্দরে জাহাজীকরণের জন্য যায়।কিন্তু রোববারে একটি কন্টেইনারও বন্দরে পাঠানো যায়নি।
রোববারে খালি কন্টেইনার ডিপো থেকে বন্দরে গেছে ১৭৫০ টিইইউস এবং বন্দর থেকে ডিপোতে এসেছে ১৪৩৫ টিইইউস।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের খোঁজ নিলে ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এনবিআরের কর্মসূচি চলমান থাকায় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে দুপুর পর্যন্ত কোনো আমদানি-রপ্তানি হয়নি। শনিবার আসা ১৫১টি ট্রাক আটকে আছে।”
আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেনাপোল ও পেট্রাপোল দুই দেশের বন্দর এলাকায় অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে বলে বন্দর ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন। এসব ট্রাকে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখি গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল রয়েছে।
বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক পেট্রাপোল বন্দর এলাকা, বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁ পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এক দিন পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলে প্রায় ১১৫ কোটি বিদেশি মুদ্রা আয় থেকে ভারত সরকার বঞ্চিত হয়। যেহেতু এটা বাংলাদেশের ব্যাপার সেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ফের শুরু করা হবে।”
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানিকারক জবেদা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শফিকুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, “গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকার আরএম কার্পেট কোম্পানির ১১ টন কেমিক্যাল ও স্টিল মিলের স্পঞ্জ আয়রন আটকে আছে বেনাপোল বন্দরে। কাস্টমসের এ আন্দোলনের কারণে মালগুলো ছাড় করাতে পারছি না। কাঁচামালগুলো ছাড় করাতে না পারায় আমদানিকারকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
সংকটের শুরু যেভাবে
অবশেষে রাতে আন্দোলনকারীরা তাদের অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে এনবিআরে কাজে ফিরতে সম্মতি দেন। তবে টানা কর্মসূচির কারণে কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কাজের স্তূপ জমেছে; যা সামলাতে ভালোই বেগ পেতে হবে। ভ্যাট ও আয়করের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অর্থবছরের শেষ মাসে এসে রাজস্ব আদায় মুখ থুবড়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক পালাবদলে নির্বাচনকে ঘিরে অনিশ্চয়তায় যেখানে বিনিয়োগ থমকে আছে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও একধরনের দুশ্চিন্তা রয়েছে, তখন সরকার ও আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি কঠোর অবস্থান ও বার্তা চালাচালি সব মহলেও নেতিবাচক বার্তা দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আন্দোলনে নামার পেছনের কারণ তুলে ধরে সরকারের সমালোচনাও করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
কর্মকর্তাদের এ জায়গায় কে ঠেলে দিল- এমন প্রশ্ন রেখে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির এ সম্মানীয় ফেলো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের সাথে তো কোনো সমঝোতাই হয় নাই। আলোচনা-কিছু নাই।
“সরকার একটা এনবিআর সংস্কারে পরামর্শক কমিটি করেছিল, তাই না? সেইখানে তো এইভাবে সমাধানের কথা বলা হয় নাই যে এনবিআরকে দুই ভাগ করে দাও। এনবিআরকে বিলুপ্ত করে দাও।”
মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
তবে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই এনবিআর চেয়ারম্যান অধ্যাদেশ বাতিলে একটি সমন্বয় কমিটি করলে এবং আন্দোলনে থাকাদের স্ট্যান্ড রিলিজের আদেশ দিলে জটিলতা বাড়ে। পরে সংস্কার বিষয়ক একটা সেমিনার করার প্রস্তুতির জন্য কক্ষ বরাদ্দ চাইলে তা আটকে দেওয়ার ঘটনা তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে ফের পালে হাওয়া দে।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর বলেন, “রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন এই দুটাকে আলাদা করার ব্যাপারে তো মোটামুটিভাবে সবাই একমত। সুতরাং সেইটার আলোকে এবং যে কমিশনটা (পরামর্শক কমিটি) করা হয়েছিল সরকারের আদেশক্রমে, সেইটার যে প্রস্তাবগুলো ছিল সেটার আলোকে একটা সমঝোতা দ্রুতই খোঁজা উচিত বলে আমার মনে হয়।”
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্বে এসেই বিভিন্ন সংস্কার কমিশন তৈরি করে। সেগুলোর প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও এনবিআরের সংস্কারের এ পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে ধোঁয়াশা রাখা হয় বলে অভিযোগ এনবিআরের আন্দোলনকারীদের।
এটি প্রকাশের দাবি বারবার এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন থেকে করা হলেও এখন পর্যন্ত করা হয়নি। তবে অধ্যাদেশ জারির পর সে কমিটির কয়েকজন সংবাদমাধ্যমে তাদের সুপারিশ পাশ কাটিয়ে ভিন্নভাবে এনবিআর সংস্কারের হাত দেওয়া হয়েছে বলে বক্তব্য দেন। এতে করে এনবিআরের কর্মীরা আন্দোলনের রসদ পায়।

ক্ষত তৈরি হবে অর্থনীতির চাকায়
বিভিন্ন জরুরি পণ্য আমদানি ব্যহত হওয়ায় তার প্রভাব সাধারণের ওপরে পড়বে। সিমেন্ট, পেইন্টের কাঁচামালের মত সবধরণের পণ্যই আটকা পড়েছে বন্দরে।
শনিবারে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হোসেন খান বলেন, “এনবিআর কর্মচারীদের আন্দোলনে দৈনিক আড়াই হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। আমি বলব না, এ পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে।”
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, “বিভিন্ন কারখানার তিনটি চালানের পণ্যের শুল্ককর পরিশোধ করার পরও খালাস নিতে পারছি না।পাঁচটা চালানের কাজ চলমান রয়েছে। এসব পণ্য দ্রুত কারখানাগুলোর প্রয়োজন। তারা তাগাদা দিচ্ছে।”
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পিডি লাইট স্পেশালিস্ট কেমিক্যাল প্রাইভেট লিমিটেডের জরুরি প্রয়োজনীয় পিভিসি রেজিম, রোল রাইড, কার্বনব্ল্যাক এর মত পণ্যের চালানের শুল্ককর পরিশোধ করার পরও খালাস হচ্ছে না।
সিএন্ডএফ এজেন্ট নূর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সাজেদুর রহমান বলেন, বন্দরে ছয় দিন ধরে খালাসের অপেক্ষায় এক ট্রাক ব্লিচিং পাউডার পড়ে রয়েছে। যেটা কারখানার জরুরি প্রয়োজন। কিন্ত 'কমপ্লিট শাটডাউন‘কর্মসূচি চলছে বলে সেটির খালাস আটকে আছে।
ভারতের বনগাঁর এসপি ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মুনমুন বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার থেকে অ্যাসোটেড গুডস বোঝাই একটি ট্রাক পেট্রাপোল বন্দরে আটকে রয়েছে। ওপারের কাস্টমসের আন্দোলনের কারণে পাঠানো যাচ্ছে না। যেটা দিনে দিনে বেনাপোল বন্দরে ঢুকে যেত।এখন শুধু ট্রাক ভাড়া বাড়ছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার একজন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বলেন, দুইদিনের শাট ডাউনের কারণে তার আটটি কাজ আটকে আছে। ১২-১৩ কন্টেইনার পণ্যের চালান এবং বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে না পরায় আমদানি পণ্য ডেলিভারি নিতে পারছেন না।
অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অর্থনীতির ক্ষতি তো হচ্ছেই। এটা তো আর কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। রপ্তানির ক্ষতি হচ্ছে। আমদানিতে-রপ্তানিতে দীর্ঘসূত্রিতা হবে। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমবে এবং আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতা হবে। ভোক্তা এবং উৎপাদকের জন্য সমস্যা হবে।
“ব্যবসা-বাণিজ্য এগুলোর উপরে বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং সেজন্যই তো দ্রুত একটা সমঝোতার দিকে যাওয়া প্রয়োজন।”
এর ফলে বহিঃবিশ্বেও ‘ভাবমূর্তি নষ্ট’ তৈরি হচ্ছে তুলে ধরেন বিজিএমইএ পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ। বলেন, “এসব শাটডাউন কর্মসূচির কারণে আরএমজি সেক্টরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি বেশি। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
“শিপমেন্ট আটকে আছে। পণ্য না নিয়ে জাহাজ খালি চলে যাচ্ছে। এসব অরাজকতা মানা যায় না।”

কী হল সারাদিনে?
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন দেশের বিভিন্ন কর, ভ্যাট ও কাস্টম অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সকাল ৯টার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয় রাজস্ব ভবনে প্রবেশ আটকে দিলে সামনেই অবস্থান নিয়ে তাদের কর্মসূচি পালন করতে থাকেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই এনবিআরে প্রবেশে এমন বাধা দেখা যায় আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন বাহিনীর তরফে। রোববারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে সেখানে ছিল।
দুপরের পর থেকেই আন্দোলন থামার একটা ইঙ্গিত মেলে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ’র সঙ্গে আলোচনার জন্য আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে যাবেন; বিকেল ৪টায় ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
সেখানে কারা যাচ্ছেন তাদের তালিকাও প্রকাশ করা হয় সংবাদমাধ্যমের কাছে পরিষদের তরফে। বৈঠক সামনে রেখে ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি সাময়িক বন্ধ রাখেন। তবে তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চালিয়ে যাবেন এর মধ্যে।
বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়আন্দোলনকারীদের তরফে। তবে তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চালিয়ে যাবেন এর মধ্যে। এতে করে শুল্কায়নসহ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম কার্যত বন্ধ রয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে কঠোর অবস্থান নেয় সরকার। অর্থ উপদেষ্টা জানান, শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় এদিন এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হচ্ছে না।
সচিবালয়ে যাওয়ার মাঝপথেই আন্দোলনকারীদের ফেরত আসার খবর মেলে তখন।
এর মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে কর্মস্থলে না ফিরলে ‘কঠোর’ হওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে সংস্থাটির সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণারসিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার বলেও তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ওবৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থেসরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সকল কাস্টমসহাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহেরসকল শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
সরকারের এমন কঠোর অবস্থানে থাকার মধ্যে এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলা হয় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তরফে বলা।
যে ছয়জনের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান শুরুর খবর আসে, তাদের পাঁচজনই এনবিআরের চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির ‘নেতৃত্বে’ রয়েছেন।
রোববার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ''বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে, নিজে লাভবান হয়ে ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করার মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন— এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ছয়জনের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম চলছে।''
এরপর ব্যবসায়ীরা উদ্যোগী হয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসেন। উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদেরও সঙ্গে তারা অচলাবস্থার নিরসনে বসেন।
বৈঠক শেষে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা।
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠক
এনবিআর কর্মচারিদের আন্দোলনে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধের পর এর সমাধানে বিকালে কয়েকটি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন অর্থ উপদেষ্টা।
রোববার বিকালে শুরু হওয়া বৈঠকটি চলে সন্ধ্যা ৭টার পরও। এ সভা থেকে এনবিআরের অচলবস্থা কাটিয়ে উঠতে সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয় ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের।
বৈঠকে অংশ নেওয়া মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সমস্যার কথা বিস্তারিত বলেছি। সরকারও আন্তরিক সমস্যা সমাধানে। আমরা ব্যবসায়ী হিসেবে সরকারের সঙ্গে থাকব সমস্যা সমাধানে। প্রয়োজনে সরকার চাইলে এনবিআরের কর্মচারীদের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা করে সরকারকে জানাব।”
এ বৈঠক থেকে আশ্বাসের পর ব্যবসায়ী নেতাদের অনুরোধে এনবিআরের আন্দোলনরত পরিষদ কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
এ ঘোষণার পর আবার এমসিসিআই সভাপতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টা নিয়ে গঠিত কমিটি এনবিআরের কর্মচারীদের সঙ্গে যৌথভাবে বসবে। আশা করছি আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়ে সব স্বাভাবিক হবে।”
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান ছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সিরামিক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিসিএমইএর সভাপতি মঈনুল ইসলাম, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, মেট্রো চেম্বারের সহসভাপতি সিমিন রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান অংশ নেন।
উপদেষ্টা পরিষদের কমিটি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৈরি সংকট নিরসনে পাঁচজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি করেছে সরকার।
রোববার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
কমিটির সদস্যরা হলেন- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
এনবিআরের সংকট নিরসনে ৫ উপদেষ্টাকে নিয়ে কমিটি
এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার তথ্যানুসন্ধানে দুদক
এনবিআরের সেবাকে 'অত্যাবশ্যকীয়' ঘোষণার সিদ্ধান্ত
এনবিআরে 'অচলাবস্থা' কাটাতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চায় ঐক্য পরিষদ
'শাটডাউন' চালু রাখায় আলোচনা হয়নি, ফিরে এসেছেন এনবিআর কর্মকর্তারা
'খুবই ঝামেলার' মধ্যে আছি: এনবিআর চেয়ারম্যান
এনবিআরে 'অচলাবস্থা' কাটাতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চায় ঐক্য পরিষদ