প্যারেন্টিং শব্দটি নতুন নয়, আবার এটাও সত্য যে শুধু বাবা-মা হওয়ার মানেই এই জটিল দায়িত্বটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকা নয়। আজকাল অসংখ্য অভিভাবক সন্তান লালন-পালন নিয়ে চিন্তিত, বিভ্রান্ত। কখনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন, কখনো পরিবার-পরিজনের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার চেষ্টা করেন—তবুও অনেক সময় সঠিক পথ খুঁজে পেতে হিমশিম খান।
অরুণ কুমার বিশ্বাস ও ডা. তপতী মণ্ডলের লেখা এই বইটি প্যারেন্টিংয়ের নানা দিক নিয়ে একটি সুস্পষ্ট গাইডলাইন দেবে। এখানে শুধু সন্তানের শারীরিক যত্নই নয়, তার মানসিক ও নৈতিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ গড়ে তোলার কৌশলও আলোচিত হয়েছে।
প্যারেন্টিংয়ের দায়িত্ব শুধু বাবা-মায়ের কাঁধে না পড়লেও, মূল দায়িত্ব তাদেরই। তবে বাস্তব জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতায় কখনো দাদা-দাদি, নানা-নানি বা অন্য আত্মীয়রাও এই ভূমিকা পালন করেন।
শিশুকে পুষ্টিকর খাবার, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি তাকে নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ, সহমর্মিতা ও শিষ্টাচার শেখানো জরুরি। পরিবারই শিশুর প্রথম স্কুল, আর এই স্কুলের পাঠই তার ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্যারেন্টিংয়ের চ্যালেঞ্জও বদলায়, তাই অভিভাবকদের হতে হয় সৃজনশীল। এই চিন্তা থেকেই ডা. তপতী মণ্ডল ও অরুণ কুমার বিশ্বাস তাদের বইয়ে উপস্থাপন করেছেন ‘ক্রিয়েটিভ প্যারেন্টিং’-এর ধারণা—যা আধুনিক যুগে সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার একটি কার্যকরী রূপরেখা।
যে শিশু স্নেহ ও ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে, তাকে পৃথিবীর সৌন্দর্য খুঁজে নিতে হয় না—সে নিজেই পৃথিবীকে সুন্দর করে গড়ে তোলে। তাই সন্তানের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে প্যারেন্টিংয়ের ওপর। যারা সন্তান প্রতিপালন নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত, এই বইটি তাদের জন্য এক অনবদ্য সমাধান হতে পারে।
প্রকাশক: পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.
মূল্য: ৩২০ টাকা
প্রচ্ছদ: প্রসূন হালদার