এই ধ্বংসের অন্যতম মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা ছিল সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করা। এই সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এর ফলে শেখ হাসিনা টানা তিনটি একতরফা নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছেন এবং ক্ষমতায় নিজের অবস্থান শক্ত সংহত করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই সংশোধনী নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার ছিল। কিন্তু তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তিনি উন্মুক্ত আদালতে ঘোষিত সংক্ষিপ্ত আদেশ পরে পাল্টে দেন এবং অবসর নেওয়ার ১৬ মাস পরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। অনেকেই মনে করেন, এটি শুধু বিচারিক অসদাচরণ নয় বরং এটি ছিল প্রতারণা বা জালিয়াতির মতো কিছু।
এ ধরনের আচরণ বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও সততার যেই মান থাকা উচিত, তার বড় বিচ্যুতি। এতে বিচার বিভাগের প্রতি জনসাধারণের আস্থা অনেকটাই নষ্ট হয়েছে। অনেকে সন্দেহ করেন, পূর্ণাঙ্গ রায় দিতে ইচ্ছা করে দেরি করা হয়েছিল, যাতে শেখ হাসিনা ওই সংক্ষিপ্ত আদেশ এড়িয়ে আইন পাস করতে পারেন। কারণ, সংক্ষিপ্ত আদেশে আরও দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে হতো। এ সুযোগটাই হাসিনা কাজে লাগান। সংসদের একটি কমিটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে দুই মেয়াদে বহাল রাখার সুপারিশ করলেও তিনি তা উপেক্ষা করে সেটি পুরোপুরি বাতিল করে দেন।