প্রতিবাদ সমাবেশে বিশিষ্টজন

পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়নই পাহাড়ে সংকটের সমাধান

পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজনীতিবিদসহ বিশিষ্টজন। তারা বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনায় পাহাড়িদের প্রতি বৈষম্যের নিরসন করতে হবে। সেখানে অশান্তির প্রকৃত কারণ উপলব্ধি করে নিরসনের পদক্ষেপ নিতে হবে। অস্ত্রের হুমকি দিয়ে এবং আদিবাসীদের নির্মূল করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যাবে না।
গতকাল রোববার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়িদের ওপর গুলিবর্ষণ, হত্যা, ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও উপাসনালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশ থেকে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাবর্ত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমের অগ্রাধিকারে রাখাসহ আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবির মধ্যে রয়েছে– অবিলম্বে পাহাড়ে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ; রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা হামলার ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন, পাহাড়ি অধিবাসীসহ পার্বত্য জেলার জুম্ম জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গুলিতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা প্রদান, জুম্ম জনগোষ্ঠীর ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার পুনর্নির্মাণ ও দোকানপাট-বাড়িঘরের মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান। 

সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বহুজন বলছে– সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু দেশ প্রকৃত অর্থে স্বাধীন হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের টানাপোড়েন চলছে, যার অবসান এখনও হয়নি। আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় অর্জন হলেও দেশ অন্য আধিপত্যবাদীদের কবলে পড়েছে। পাহাড়িদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, সেনাপ্রধান যুদ্ধ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ যুদ্ধ ঘোষণার দায়িত্ব সেনাপ্রধানের নয়, স্বৈরাচার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের। সেনাপ্রধান কেন পাহাড়ে উস্কানি সৃষ্টি করছেন? যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা বন্ধ করে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। রাষ্ট্র, প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহকারী সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, দেশে আর মৃত্যুর মিছিল দেখতে চাই না। মব জাস্টিসের নামে আইনের লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ের সমস্যাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সংবিধানে পাহাড়ি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, পাহাড়ের সমস্যাকে নিরাপত্তার চশমায় না দেখে পাহাড়িদের চশমা দিয়ে দেখতে হবে। এ সমস্যা সমাধানে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে ও মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসার সঞ্চালনায় সমাবেশে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী রুপম।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews