গত আগস্ট মাসে পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ দলের উপর তেমন একটা প্রত্যাশা কেউ রাখেনি। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তাদেরই মাঠে পাকিস্তানকে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ করে দেয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এর পর থেকে বাংলাদেশ দলের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। ভারতে গিয়ে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে আসে দল। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টেও পাত্তা পাননি শান্তরা। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে আফগানিস্তানের কাছেও ওয়ানডে সিরিজ হেরেছেন তারা। একের পর এক হারে আগস্ট মাসে পাকিস্তান সফরের মধুর স্মৃতিটাই এখন ফিকে। সেই দুঃস্বপ্ন নিয়ে এবার বাংরাদেশের ক্যারিবিয়ান চ্যালেঞ্জ। কন্ডিশন বিচারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরটা ভীষণ কঠিন হলেও স্বপ্নের মতন একই ফল প্রত্যাশা করছেন নির্বাচন আব্দুর রাজ্জাক।
দুটি টেস্ট ও তিনটি করে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আছে বাংলাদেশ দল। চোটের কারণে নিয়মিত অধিনায়ক শান্ত, অভিজ্ঞ কিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম, পারিবারিক কারণে মুস্তাফিজুর রহমানরা নেই দলের সঙ্গে। তারপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজে ফের ভালো সময়টা ফেরাতে চায় বাংলাদেশ। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমকে এমন কথাই বললেন রাজ্জাক, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ট্যুরে আমাদের প্রত্যাশা বললে তো ভালো প্রত্যাশাই থাকবে। অবশ্যই টেস্ট ম্যাচ জেতার চিন্তা, শুরু অন্তত করতে পারি টেস্ট ম্যাচ জিতব বলে। সব সময় যে ক্লিক করে সেটা না। আমি আশা করব প্রত্যেকটা বিভাগ জ্বলে উঠবে। যেমন পাকিস্তানে স্বপ্নের মতন টেস্ট সিরিজ খেলেছি। আমি আশা করব ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওভাবেই খেলে দেশে ফিরব বিশেষ করে টেস্ট সিরিজ।’
বাংলাদেশ সময় আগামীকাল রাত ৮টায় অ্যান্টিগায় শুরু হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্ট। ৩০ নভেম্বর থেকে দ্বিতীয় টেস্ট হবে জ্যামাইকায়। অ্যান্টিগা ও জ্যামাইকা দুটোই পেস বান্ধব বাড়তি বাউন্সের গতিময় উইকেট। সেখানে বাংলাদেশের রেকর্ডও ভালো না। ক্যারিয়ান পেসারদের বিপক্ষে চোটজর্জর টাইগারদের কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল ২০০৪ সালে। এরপর গত ২০ বছরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ এবং ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ৪৯টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ানে তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশ ১৭টি ম্যাচ জিতলেও সেই জয়গুলোর একটিও অ্যান্টিগাতে নয়। সেখানে আর কোনো মাঠে চারটির বেশি ম্যাচ খেলে জয়হীন নেই বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে এবারের মতোই বাংলাদেশের ক্যারিবীয় সফর শুরু হয়েছিল অ্যান্টিগা টেস্ট দিয়ে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য যা হয়ে আছে ভয়ানক এক দুঃস্বপ্ন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের দাপটে প্রথম ইনিংসে ১৮.৪ ওভারে মাত্র ৪৩ রানে অলআউট হয়ে যায় সাকিব আল হাসানের দল। ৪৩ রানের ২৫-ই এসেছিল এক লিটন দাসের ব্যাট থেকে। টেস্টে তো বটেই, তিন সংস্করণ মিলিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ইনিংসের রেকর্ড হয়ে আছে এটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একমাত্র ইনিংসে ৪০৬ রান করার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ রানে অলআউট হয়ে হারে ইনিংস ও ২১৯ রানে। এবার রাজ্জাকদের প্রত্যাশা মেহেদী হসান মিরাজরা কতটা পূরণ করতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়।