যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অস্টিন শহরে চালকবিহীন রোবোট্যাক্সির পরীক্ষা শুরু করেছে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা। এই পরীক্ষায় গাড়ির ভেতরে কোনো মানুষ বা নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক রাখা হয়নি। টেসলার লক্ষ্য, ২০২৬ সালের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে স্বচালিত ট্যাক্সি সেবা চালু করা।
টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, টেসলা মডেল ওয়াই গাড়ি কোনো চালক ছাড়াই অস্টিনের ব্যস্ত সড়কে চলাচল করছে। মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, গাড়িতে কোনো যাত্রী বা পর্যবেক্ষক ছাড়াই পরীক্ষা চলছে। এই খবরে টেসলার শেয়ারের দাম একদিনে প্রায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
এর মাত্র এক সপ্তাহ আগে একটি প্রযুক্তি সম্মেলনে মাস্ক জানিয়েছিলেন, শিগগিরই গাড়ি থেকে মানব নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক সরিয়ে নেওয়া হবে। এর আগে জুন মাসে টেসলা সীমিত পরিসরে রোবোট্যাক্সি সেবা চালু করে। তখন গাড়ির যাত্রী আসনে একজন নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক থাকতেন। বর্তমানে অস্টিন শহরের বড় একটি এলাকায় এই সেবা বিস্তৃত হলেও গাড়ির সংখ্যা এখনো সীমিত। প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি গাড়ি পরীক্ষামূলকভাবে চলছে।
এই অগ্রগতি টেসলাকে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের ওয়েমোর সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতায় ফেলেছে। ওয়েমো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে প্রতি সপ্তাহে প্রায় সাড়ে চার লাখ পেইড রাইড পরিচালনা করছে এবং কোটি কোটি মাইল স্বচালিতভাবে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে।
তবে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। সরকারি তথ্যে দেখা যায়, জুনের পর থেকে অস্টিনে টেসলার রোবোট্যাক্সি পরীক্ষায় অন্তত সাতটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তখন গাড়িতে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক উপস্থিত ছিলেন। গড়ে প্রতি ৬২ হাজার মাইলে একটি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে, যা সাধারণ চালকের তুলনায় বেশি।
টেসলার ভবিষ্যৎ ব্যবসার বড় অংশই স্বচালিত প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে নতুন ‘সাইবারক্যাব’ গাড়ি উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে, যেখানে স্টিয়ারিং ও প্যাডেল থাকবে না। তবে ইলন মাস্ক স্বীকার করেছেন, এই সেবা চালু করতে সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন, কারণ একটি দুর্ঘটনাও বিশ্বজুড়ে বড় খবর হয়ে উঠতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল