শুরু হয়েছে শেখ কামাল ৩৮তম জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তিন দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার প্রথম দিন তিনটি নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন অ্যাথলেটরা। এর মধ্যে কিশোরীদের ১০০মিটার স্প্রিন্টে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে স্বর্ণপদক জেতেন বিকেএসপির সুমাইয়া আক্তার। তিনি সময় নেন ১২.৪৯ সেকেন্ড (ইলেক্ট্রনিক টাইমিং)। আগে এই ইভেন্টে রেকর্ড ছিল একই সংস্থার সোনিয়া আক্তারের। তিনি ২০১৯ সালে সময় নিয়েছিলেন ১২.৬৬ সেকেন্ড (ইলেক্ট্রনিক টাইমিং)। কিশোরদের ১৫০০মিটার দৌড়ে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার মো. শাওন। ৪:১৪.১২ সেকেন্ড (ইলেক্ট্রনিক টাইমিং) সময় নিয়ে দৌড় শেষ করে সোনা জয় করেন রাজমিস্ত্রী শাওন। এই ইভেন্টে ২০১৮ সালে রেকর্ড গড়েছিলেন নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিজয় মল্লিক। তার সময় ছিল ৪:১৯.২০ সেকেন্ড (ইলেক্ট্রনিক টাইমিং)। কিশোরীদের শটপুট ইভেন্টে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন বিকেএসপির মোছা. শারমিন আক্তার। তিনি ১২.১০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে সোনা জেতেন তিনি। ২০১৬ সালে এই ইভেন্টে ১০.৪২ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন একই সংস্থার তাহমিনা আক্তার লোপা। এছাড়া কাল বালকদের ১০০মিটার স্প্রিন্টে সোনা জিতে দ্রুততম বালক খেতাব পেয়েছেন বিকেএসপির মো. শিপন মিয়া। তিনি সময় নেন ১১.৩৭ সে (ইলেক্ট্রনিক টাইমিং)। বিকেএসপির মোছা. মিম আক্তার বালিকাদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেরা হন ১২.৭০ সেকেন্ড (ইলেক্ট্রনিক টাইমিং) সময় নিয়ে। আর কিশোরদের ১০০মিটারে প্রথম স্থান পান বিকেএসপির দেলোয়ার হোসেন। ১১.২০ সেকেন্ড (ইলেক্ট্রনিক টাইমিং) সময় নিয়ে দৌড় শেষ করে দ্রুততম কিশোরের খেতাব জেতেন তিনি।

মো. শাওন এক সময় ফুটবল খেলতেন। কিন্তু কুড়িগ্রামের কোচ শফিকুল ইসলামের পীড়াপীড়িতে অ্যাথলেটিক্সে চলে আসেন তিনি। এখনতো রেকর্ডবয় এই কিশোর। এবারের জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে ১৫০০ মিটার দৌড়ে পাঁচ বছর আগের রেকর্ড ভেঙ্গে গড়েছেন নতুন রেকর্ড। নুতন রেকর্ড গড়তে কত কষ্টই না করতে হয়েছে শাওনকে। এমনকি রাজমিস্ত্রীর কাজ পর্যন্ত করতে হয়েছে তাকে। বাবা মোফাসসেল হক পেশায় একজন কৃষক। দিন চুক্তিতে অন্যের জমিতে চাষ করে ৪ ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়েই খুব কষ্টে সংসার চালান তিনি। তবে সময় বিশেষে বাবাকেও কৃষি কাজে সহযোগিতা করে শাওন। তার কথায়, ‘বাবা অনেক কষ্ট করেন। তাই উনাকে আমি সহযোগিতা করি। চার ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়। তাই বাবাকে সহযোগিতা করতেই হয়।’

সংসার চালাতে কষ্ট হয় বিধায় নিজের বাড়তি খাবারের জন্য আর বাবাকে চাপে ফেলতে চান না শাওন। তাই শুক্রবার ও শনিবার দিনে ৩৫০ টাকা চুক্তিতে এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন এই কিশোর। সেই টাকা দিয়েই নিজের বাড়তি পুষ্টির খাবার কিনেন তিনি। পাঁচগাছি দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র শাওন আরও বলেন, ‘এমনিতেই সংসার চালাতে হিমশিম খেতেহয় বাবাকে। তাই আমি মাদ্রাসা বন্ধের দুই দিন শুক্র ও শনিবার নিজে রাজমিস্ত্রীর কাজ করি। ওই টাকা দিয়ে অ্যাথলেটিক্স অনুশীলনের পর পুষ্টিকর খাবার কিনে খাই।’ আগে ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে খেলতে গিয়ে দম হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাই ১৫০০ মিটার দৌঁড়কেই বেছে নেন শাওন, ‘আমি ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে দম পেতাম না। তাই ১৫০০ মিটারে খেলছি। এতে তৃপ্তি পাই। অনুভূতিও ভাল।’ নতুন রেকর্ড গড়ায় দশ হাজার টাকা প্রাইজমানি পেয়েছে শাওন। এই অর্থ দিয়ে নিজে পুষ্টিকর খাবার খেতে চায় কুড়িগ্রামের এই অ্যাথলেট।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews