ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্র্বাচনে প্রথম দফার ভোট আগামী ১৯ এপ্রিল। তার আগেই ‘ইন্ডিয়া জোটের দলগুলো ফের এককাট্টা হয়ে ফের বিজেপি বিরোধী কর্মসূচির কথা ভাবছে। দিল্লির রামলীলা ময়দানে সোমবার দেশটির প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস ও দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির (আপ) নেতারা এক বৈঠকে এই ইঙ্গিত দেন। এদিন আম আদমির সিনিয়র নেতা সৌরভ ভরদ্বাজসহ আরও কয়েকজন মিলে কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে স্বাগত জানান।

ওই বৈঠকে সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় রাহুল গান্ধী ডি রাজার সঙ্গে খুনসুটিও করেন।  খবর আনন্দবাজার ও এনডিটিভি অনলাইনের।

রামলীলার এই দৃশ্যের পর মোদি বিরোধী শিবির মনে করছে, সম্ভবত কংগ্রেস-আম আদমি দূরত্ব ঘুচতে যাচ্ছে। আবার আসন সমঝোতা নিয়ে বামেদের অভিমান দূর করার চেষ্টা করছে কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। সব মিলিয়ে নতুন করে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র শরিকেরা এককাট্টা হয়েছে।

সেই ভিতের ওপরে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিরোধিতায় ফের নতুন কিছুর পরিকল্পনা করছে বিরোধী শিবির। জনসভার মঞ্চেই রাহুল হাসতে হাসতে সিপিআই নেতা ডি রাজাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি আমার ওপরে এখনো রাগ করে রয়েছেন?’ ডি রাজা বলেন, আমার কোনো রাগ নেই। এক সময়ে আপ-কংগ্রেস সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। এ বার দিল্লিতে সাতটি লোকসভা কেন্দ্রে দুই দল আসন সমঝোতা করেছে। দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনে সংশয় ছিল। তবে এখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উভয় দলের নেতারা কাজ করছেন। দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনই এখন বিজেপির দখলে। আপ এবার চারটি লড়াই করেছে।

চারটিতেই তারা প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, তাদের ভাগে থাকা চাঁদনি চক, উত্তর-পূর্ব দিল্লি ও উত্তর-পশ্চিম দিল্লিতে খুব শীঘ্রই জে পি আগরওয়াল, সন্দীপ দীক্ষিত ও উদিত রাজের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হবে। এদিকে আপ নেত্রী ও দিল্লির মন্ত্রী আতিশীর শঙ্কা, বিজেপির নির্দেশে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবার তাকেও গ্রেপ্তার করবে। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিজেপিতে যোগ না দিলে ইডি আমার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এক মাসের মধ্যে আটক করে হেফাজতে নেবে।

তিনি বলেন, রামলীলা ময়দানের সমাবেশ দেখে ভীত বিজেপি এবার তাদেরও গ্রেপ্তার করবে। আতিশী নিজের গ্রেপ্তারের কথা বলার পাশাপাশি জানান, আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ, দুর্গেশ পাঠক ও রাঘব চাড্ডাকেও তুলে নেওয়ার ছক কষছে ইডি। তার  কথায়, ওরা ভেবেছিল, ‘অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বন্দি করলে আপ চুরচুর ভেঙে পড়বে। কিন্তু তা না হওয়ায় এবার আমাদের তুলে নিতে ঘুঁটি সাজাচ্ছে। আতিশী আরও এক গুরুতর অভিযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দিন কয়েক আগে তারই এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মাধ্যমে তাকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

বলা হয়, ‘বাঁচতে চাইলে আমি যেন বিজেপিতে যোগ দিই। তাতে আমার রাজনৈতিক জীবন এগিয়ে চলবে। যদি তা না করি, তা হলে একমাসের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।’ তিনি বলেন, তাকে  একজন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আপের শীর্ষ নেতাদের সবাইকে জেলে পাঠাবেন বলে ঠিক করেছেন। তবে বিজেপির দিল্লির নেতারা আতিশীর এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, কেজরিওয়াল যা বলেছেন, ইডি তা আদালতে পেশ করেছে। বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা বলেন, আতিশী এভাবে জনতাকে বোকা বানাতে চাইছেন।

আসল কথা, আপে ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আতিশীর জেনে রাখা ভালো, দুর্নীতিগ্রস্তদের বিজেপি দলে টানে না। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র হরিশ খুরানা বলেন, আতিশীর বিরুদ্ধে দল অভিযোগ জানাবে। আতিশী অনর্থক উত্তেজনা ছড়াতে চাইছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে আয়কর মামলায় আপাতত স্বস্তি পাচ্ছে কংগ্রেস শিবির। ভোট না হওয়া পর্যন্ত আয়কর সংক্রান্ত বিষয়ে কংগ্রেসকে আর হয়রান হতে হবে না।

মোদি সরকার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সোমবার জানায়, ভোট না হওয়া পর্যন্ত তারা বকেয়া আদায়ে আর অগ্রসর হবে না। ভারতের লোকসভা নির্বাচন শেষ হবে আগামী ১ জুন। ৪ জুন ভোট গণনা হবে। আয়কর মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ জুলাই। অর্থাৎ তত দিন পর্যন্ত কংগ্রেসের স্বস্তি। নির্বাচনের ভারতের আগে আয়কর বিভাগের কাছ থেকে পুরোনো বকেয়া পেতে একের পর এক নোটিস পেয়ে বিব্রত ও বিড়ম্বিত কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়।

তাদের অভিযোগ, আয়কর বিভাগ পুরোনো বকেয়াসহ মোট ৩ হাজার ৫৬৭ কোটি রুপি আদায়ে তাদের নোটিস পাঠিয়েছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। জবরদস্তি হিসাব থেকে ১৩৫ কোটি রুপি আদায় করেছে। এসব কিছু তারা করছে, যাতে ভোটে দল প্রচার করতে না পারে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews