রাজধানীর উত্তরায় চারটি দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী গ্রুপকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই এলাকায় ছিনতাইয়ের হটস্পটগুলো বিশেষ নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার রওনক জাহান।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে উত্তরা থেকে ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন— আশরাফুল হক খান তুষার ও রাকিব হাসান আরফিন। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি ব্যাগ, স্বর্ণের বিভিন্ন গহনা, সাতটি মোবাইল ফোন, ১০০ ডলার, ৩৭০ মালয়েশিয়ান রিংগিত ও ৩ হাজার ৫০০ টাকাসহ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পুলিশ। এতে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান বলেন, এই এলাকার ছিনতাইকারীরা ভবঘুরে প্রকৃতির। তাদের কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই। যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা মাদক মামলার আসামি।
ডিসি বলেন, এসব ছিনতাইকারীদের বেশিরভাগ পরিবার বিচ্ছিন্ন। তাদের মূল টার্গেট মাদকের অর্থ সংগ্রহ করা। কোন কিছু চিন্তা ভাবনা না করেই অল্প টাকার জন্যও দুর্ধর্ষভাবে ছিনতাই করে তারা। তিনটি থানার সমন্বয়ে বিমানবন্দরসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ডিসি রওনক জাহান বলেন, গত সোমবার রাতে ভুক্তভোগী মো. শহিদুল্লাহ ও তার স্ত্রী বাসযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে উত্তরা আজমপুর বাসস্ট্যান্ডে নামেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে দুই ছিনতাইকারী সিএনজি থেকে তাদের ধারালো চাকুর মুখে জিম্মি করে সঙ্গে থাকা সব জিনিসপত্র নিয়ে নেন। পরের দিন ওই ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করে ভুক্তভোগী পরিবার। ঘটনার তদন্তে নেমে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বুধবার আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ছিনতাই রোধে উত্তরা বিভাগের বিভিন্ন পদক্ষেপ
উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার রওনক জাহান গত ১৮ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ছিনতাই প্রতিরোধে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানা ২৪ জন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তারসহ ২২০ সেট শর্ট রেঞ্জ টকিং ওয়াকিটকি, ১২২টি চোরাই মোবাইল, ৩১টি হাতঘড়ি ও অবৈধ দেশী এবং বিদেশী মুদ্রা উদ্ধার করেছে। এছাড়া বিমানবন্দর থানা ১২৩ জন ছিনতাইকারী, সাতজন মলম পার্টি, চারজন অজ্ঞান পার্টি, নয়জন টানা পার্টি, আটজন পকেটমারসহ ১৫১ জন এবং উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ ৫৩জন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা প্রদানসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উত্তরা বিভাগ ছিনতাই প্রতিরোধে দৃশ্যমান পুলিশিং ছাড়াও ছিনতাইয়ের হটস্পট ও বিভিন্ন ছিনতাইকারী গ্রুপ শনাক্ত এবং মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।