ত্রিশের কোঠা পেরিয়ে চল্লিশে পা রাখার পর জীবনের গতিপথ বদলে যায়। কর্মজীবন, সংসার, সন্তান পালন, অভিভাবকত্ব আর নানান প্রাপ্তবয়স্ক দায়িত্বে জীবন হয়ে ওঠে দারুণ ব্যস্ত। এই ব্যস্ততায় অনেক সময় প্রিয় বন্ধুত্বগুলো হারিয়ে যেতে বসে— না যে তারা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে, বরং জীবনের কোলাহলে তাদের জন্য সময় বের করাটা কঠিন হয়ে ওঠে।

এই বয়সে ঘন ঘন দেখা বা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও, আন্তরিক যোগাযোগ আর সচেতন প্রচেষ্টায় সম্পর্ক রাখা যায় গভীর ও উষ্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইলে কিছু নিয়ম মেনে চলাই শ্রেয়। নিচে রইল এমনই ৭টি নিয়ম, যা মেনে চললে বয়স বা দূরত্ব বন্ধুত্বে ফাটল ধরাতে পারবে না।

১. পরিকল্পনা ভঙ্গ করবেন না
ত্রিশ-পঁইত্রিশের পর সময়ই যেন সবচেয়ে দুষ্প্রাপ্য সম্পদ। এই সময়ে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করা মানেই এক ধরনের যত্ন ও মূল্যায়ন। তাই শেষ মুহূর্তে কেবল ক্লান্তি বা অনিচ্ছায় কোনো পরিকল্পনা বাতিল করলে সেটা অনেক বেশি কষ্ট দিতে পারে। সকলেই কিছু না কিছু ছাড় দিয়ে সময় বের করেন— সেই প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দিন।

২. একটুখানি খোঁজ
বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রতিদিন কথা বলা জরুরি নয়, বরং মাঝে মাঝে একটা ছোট বার্তাই অনেক কিছু বলে দেয়। “তোমাকে মনে পড়ছে” বা “ভালো আছো তো?”— এমন কিছু শব্দই প্রিয় বন্ধুকে কঠিন সময়ে ভরসা দিতে পারে।

৩. ফোন কল বা ভয়েস নোটে থাকুক উষ্ণতা
দীর্ঘ আলাপের সময় হয়তো নেই, কিন্তু হঠাৎ করে পাঁচ মিনিটের একটি কল বা হাঁটতে হাঁটতে পাঠানো ভয়েস নোট— এই ছোট প্রচেষ্টাও সম্পর্ককে গভীর করে। কণ্ঠস্বরের মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনুভূতি, যা কোনো টেক্সটে ধরা পড়ে না।

৪. ছোট বড় যেকোনো উপলক্ষ উদযাপন করুন
জন্মদিন, প্রমোশন, কঠিন সপ্তাহ পার করে ওঠা কিংবা সন্তানকে সামলে দিন পার করা—যেকোনো অর্জন বা মুহূর্ত উদযাপন করুন। “তোমার জন্য গর্বিত”, “তোমাকে দেখছি”— এই শব্দগুলো প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে হয়ে ওঠে অনেক শক্তির উৎস।

৫. দূরত্বকে বোঝাপড়ায় মাফ করুন
মাসের পর মাস কোনো যোগাযোগ না হলেও তা সবসময় অবহেলা বোঝায় না। কাজের চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব অনেক সময় মানুষকে চুপ করে দেয়। বন্ধুর নীরবতাকে ব্যক্তিগতভাবে না নিয়ে, সহানুভূতির চোখে দেখুন।

৬. নিজের চাওয়া খোলাসা করুন
বন্ধুর কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করছেন, সেটা স্পষ্ট করে বলুন। আপনি অনুভব করলে যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, সেটাও শেয়ার করুন। স্পষ্ট ও সদয় যোগাযোগই প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখার মূল চাবিকাঠি।

৭. তাদের 'লোকজন'-এর জায়গা দিন
এই বয়সে বন্ধুর জীবনে আসে পরিবার— জীবনসঙ্গী, সন্তান কিংবা শ্বশুর-শাশুড়ি। তাদের উপস্থিতি বন্ধুত্বে বাধা নয়, বরং বন্ধুকে সময় দিতে সহায়ক। একসঙ্গে পারিবারিক আড্ডা আয়োজন করলে বন্ধুরাও আর দায়বদ্ধতা অনুভব করেন না, সম্পর্ক হয়ে ওঠে স্বাভাবিক ও আনন্দময়।

এই সাতটি নিয়ম মনে রেখে একটু সচেতন থাকলেই বন্ধুত্ব থাকবে প্রাণবন্ত, উষ্ণ আর দীর্ঘস্থায়ী— বয়স যতই বাড়ুক না কেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews