“যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে আমরা ক্রমাগত এই বিষয়ে আলোচনা করে আসছি। সুতরাং ব্যাপারটা আকস্মিক নয়, আমরা এর জন্য প্রস্তুত,” প্রধান উপদেষ্টার ডাকা জরুরি বৈঠক শেষে বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ করে শিগগির ব্যবস্থা, আতঙ্কের কিছু নেই: খলিল
যুক্তরাষ্ট্রের বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপের ঘটনায় ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করে প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান বলেছেন, এটি ‘আকস্মিক’ কিছু নয়, ‘প্রস্তুতি’ ছিল।
মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ কর শিগগিরই কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানোর প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের জরুরি বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে ব্রিফিংয়ে খলিলুর রহমান বলেন, ''মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ ধার্য করার ঘটনাটি আমাদের জন্য আকস্মিক কোনো ঘটনা না। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংযোগ করতে বলেছিলেন, সেই সূত্রে আমি নিজে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ওয়াশিংটনে আমেরিকান পররাষ্ট্র দপ্তর, ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার এবং অনন্যাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
“সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে আমরা ক্রমাগত এই বিষয়ে আলোচনা করে আসছি। সুতরাং ব্যাপারটা আকস্মিক নয়, আমরা এর জন্য প্রস্তুত।”
এ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা শিগগিরই কিছু ব্যবস্থা নেব এবং সেটা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করেই নেব। এখানে ভয় পাওয়ার আতঙ্কিত হবার কিছুই নেই। আমরা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।''
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, বিডার নির্বাহী আশিক চৌধুরী, অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের শতাধিক দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের মুখোমুখি হবে।
এতদিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, যা এখন বেড়ে হল মোট ৫২ শতাংশ।
বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে তৈরি পোশাকের পারিমাণ ৭৩৪ কোটি ডলার।
নতুন করে সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত বড় ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস অবশ্য এরই মধ্যে বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানে ‘ইতিবাচক অগ্রগতি’ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
আরও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক: জরুরি বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক: জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
ট্রাম্পের শুল্ক: শঙ্কায় পোশাক খাত, লড়াই কোন পথে?
আলোচনায় শুল্ক জটিলতার সমাধান হবে, 'আশাবাদী' প্রধান উপদেষ্টা
মার্কিন পণ্যের শুল্কহার 'পর্যালোচনা' হচ্ছে: প্রেস সচিব
বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭% সম্পূরক শুল্ক বসাল যুক্তরাষ্ট্র