মোস্তাফিজুর রহমান: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন ক্ষমতা নেয়, তখন আমাদের অর্থনীতি বড় ধরনের চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। সেটা অনেক বছরের পুঞ্জীভূত একটা চাপ।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি ছিল, বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছিল। বিনিময় হারে বড় ধরনের অবনমন হয়েছিল, যেটা আমদানি করা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিয়েছিল। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট করে দিয়েছিল। আমানতকারীরা টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছিলেন। ব্যাংক আমানতের একটা বড় অংশ দেশের বাইরে পাচার হয়ে গেছিল। এতে ব্যাংকাররা যে ঋণ দিচ্ছিলেন, তাতে সুদহার অনেক বেশি রাখতে হচ্ছিল। এর ফলে বিনিয়োগের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছিল। অনেক বেশি ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছিল। সবটা মিলিয়ে অর্থনীতির ওপর বড় চাপ সৃষ্টি হয়েছিল।
অন্যদিকে এনবিআর রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারিনি। আমাদের করব্যবস্থাকে অপ্রত্যক্ষ থেকে প্রত্যক্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারিনি। আমাদের অপ্রত্যক্ষ কর এখনো দুই-তৃতীয়াংশ। যাঁরা ক্ষমতাশালী ছিলেন, তাঁদের প্রত্যক্ষ করের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিল না। সাধারণ মানুষের ওপর ট্যাক্স-ভ্যাট বাড়ানোর দিকেই সরকারের আগ্রহ ছিল।
এর ফলে আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রায় পুরোটাই করতে হয়েছে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া ঋণের টাকা দিয়ে। এর সবটাই উত্তরাধিকার সূত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে গ্রহণ করতে হয়েছে।