দীর্ঘ সময় নীরব থাকার পর হঠাৎ আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি নিউট্রন নক্ষত্র। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ঘটনা মহাবিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এক্স-রে উৎসগুলোর রহস্য বুঝতে নতুন তথ্য দিচ্ছে।
নিউট্রন নক্ষত্রটির নাম পি-১৩ (P-13)। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় এক কোটি আলোকবর্ষ দূরে এনজিসি ৭৭৯৩ নামের একটি গ্যালাক্সিতে অবস্থিত। গবেষকরা ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নক্ষত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। ২০২১ সালে এটি প্রায় নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। তবে ২০২৪ সালের মধ্যে এর এক্স-রে উজ্জ্বলতা হঠাৎ করে ১০০ গুণেরও বেশি বেড়ে যায়।
নিউট্রন নক্ষত্র হলো একটি অত্যন্ত ঘন নক্ষত্র। এতে অন্য নক্ষত্রের গ্যাস বা পদার্থ খুব দ্রুত গতিতে পড়তে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় অ্যাক্রেশন (অন্য বস্তু থেকে পদার্থ টেনে নেওয়া)। এই সময় নক্ষত্রটি শক্তিশালী এক্স-রে বিকিরণ করে। পি-১৩-এর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, গ্যাস মূলত এর চৌম্বক মেরু দিয়ে পড়ে উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ তৈরি করছে।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, নক্ষত্রটি আবার উজ্জ্বল হওয়ার সময় তার ঘূর্ণনের গতি (স্পিন) দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকে এবং এই গতি কয়েক বছর স্থায়ী হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এর মানে হলো গ্যাস পড়ার ধরন বা গঠন (অ্যাক্রেশন স্ট্রাকচার) নীরব সময়ের মধ্যে বদলে গেছে।
বিশেষ বিশ্লেষণে ধারণা পাওয়া গেছে, এই সময় নক্ষত্রটির ওপর গঠিত আলোকস্তম্ভের উচ্চতাও পরিবর্তিত হয়েছে। এতে বিজ্ঞানীরা ‘সুপারক্রিটিক্যাল অ্যাক্রেশন’ সম্পর্কে (অত্যন্ত দ্রুত হারে পদার্থ পতন) গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন।
গবেষকদের মতে, এই পর্যবেক্ষণ ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করবে কেন কিছু নিউট্রন নক্ষত্র দীর্ঘদিন শান্ত থাকে, আবার হঠাৎ করে প্রচণ্ড শক্তিশালী হয়ে ওঠে। একই সঙ্গে এটি মহাবিশ্বের অতিশক্তিশালী এক্স-রে উৎস বোঝার পথও পরিষ্কার করছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল