খামেনির পোস্টার নিয়ে ইরানের জন্য রাজপথে ভারতের যে প্রান্তের মানুষরা

ছবির উৎস, IKMT

ছবির ক্যাপশান,

অক্টোবরের গোড়ায় ইরানের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন কার্গিলের শিয়ারা

  • Author,

    শুভজ্যোতি ঘোষ

  • Role,

    বিবিসি নিউজ বাংলা, দিল্লি

  • ৪১ মিনিট আগে

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধ শুরু হতে পারে, এই আশঙ্কার মেঘ যখন ঘনিয়ে আসছে – তখন ভারতেরই একটি প্রত্যন্ত অংশে মানুষ কিন্তু প্রায় রোজ নিয়ম করে ইরানের সমর্থনে পথে নামছেন, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ্ খামেনির ছবি নিয়ে মিছিল করছেন কিংবা হেজবুল্লাহ-র হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।

এতটাই, যে বাইরে থেকে এলে কেউ চট করে হয়তো বুঝতেই পারবেন না জায়গাটি ভারতে, না ইরানে!

সাধারণ গড়পড়তা ভারতীয়রা যখন ইসরায়েলের গোঁড়া সমর্থক বলে পরিচিত এবং ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও সংবাদমাধ্যমও লাগাতার ইসরায়েল-ঘেঁষা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে – তখন ভারতের এই প্রান্তটি কিন্তু গোটা দেশের মধ্যেই এক অদ্ভুত ব্যতিক্রম।

জায়গাটি আর কোথাও নয় – চীন ও পাকিস্তান সীমান্তঘেঁষা লাদাখের কার্গিলে, যা ঠিক ২৫ বছর আগের এক গ্রীষ্মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মারাত্মক লড়াইয়েরও সাক্ষী থেকেছে।

লাদাখের কার্গিল জেলার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিয়া মুসলিম, আর ইরানের সঙ্গে তাদের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও আত্মিক যোগাযোগও খুব গভীর।

ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে তারা যে ইরানের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন ও নিয়মিত সভা-সমাবেশ করছেন, তার একটা গভীর পটভূমি আছে।

বছরতিনেক আগে যখন কার্গিলে যাই, শহরের কেন্দ্রস্থলে ব্যস্ততম মোড়ের নাম যে ‘খামেনি চক’ – কিংবা সবচেয়ে বড় সমাবেশস্থলের নাম ‘হুসেইনি পার্ক’ – তা মোটেই নজর এড়ায়নি।

সে সময় ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চলছিল জোর কদমে – এখন প্রয়াত ইব্রাহিম রাইসির বিরুদ্ধে সেই ভোট লড়ছিলেন মহসেন রেজি আর আবদোলনাসের হেম্মাতি।

মজার ব্যাপার হল, কার্গিল শহরের দেওয়াল পর্যন্ত তখন ছেয়ে ছিল ‘ফেভারিট’ রাইসির পোস্টারে।

এমন কী রেজি বা হেম্মাতিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দেওয়াল লিখন বা পোস্টারও চোখে পড়েছিল তখন, যা থেকে বোঝা যায় তারা ভোটার না হতে পারেন - কিন্তু সুদূর ইরানের নির্বাচনও কার্গিলে বিরাট বড় একটা ‘ক্রেজ’!

হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর কার্গিলে শোক আর ক্ষোভ

ছবির উৎস, IKMT

ছবির ক্যাপশান,

হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর কার্গিলে শোক আর ক্ষোভ

মাসকয়েক আগে সেই ইব্রাহিম রাইসি যখন হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হলেন, তাকে শেষ বিদায় জানাতেও কার্গিল চোখের জলে পথে নেমেছিল।

শোকের কালো পোশাক পরে হাজার হাজার শিয়া নারী-পুরুষ ‘লাবাইক ইয়া খামেনি’ ধ্বনিতে মুখর করে তুলেছিলেন শহরের আকাশ-বাতাস।

ভারতের অন্যত্রও প্রচুর শিয়া মুসলিম আছেন, বস্তুত ইরানের বাইরে বিশ্বের যে দেশে সবচেয়ে বেশি শিয়া বসবাস করেন সেটি হল ভারত।

সংখ্যায় তারা মোট তিন থেকে চার কোটির মতো হবেন বলে ধারণা করা হয়।

কিন্তু ভারতের লখনৌ বা হায়দ্রাবাদের মতো শহরগুলোতে যে শিয়ারা থাকেন তারা কার্গিলের শিয়াদের মতো এতটা সংঘবদ্ধ বা এককাট্টা নন – আর যে কোনও কারণেই হোক ইরানের সঙ্গে তারা সম্ভবত অতটা একাত্মতা বোধ করেন না, কিংবা থাকলেও তা দেখান না।

কিন্তু ইরান তথা ইরানের বিপ্লবের আদর্শের প্রতি সংহতি জানাতে কার্গিলের শিয়ারা কিন্তু কখনওই দ্বিধা বা সঙ্কোচে ভোগেনি – পাশাপাশি এটাও ঠিক, ভারতের প্রতি তাদের ‘দেশপ্রেম’ নিয়েও কেউ কখনও প্রশ্ন তোলার সুযোগ পায়নি।

বিগত কয়েক দশকে ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা, বাণিজ্যিক বা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা যত বেড়েছে, ততই ভারতের অধিকাংশ মানুষজন মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে খোলাখুলি ইসরায়েলকে সমর্থন জানাচ্ছেন – কিন্তু সেখানেও কার্গিল কিন্তু ইসরায়েলের বিরোধিতায় কখনও আপোষ করেনি।

প্রশ্নটা যখন ইসরায়েল বিরোধিতার, তখন শুধু ইরান নয় – তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের হয়েও নিয়মিত পথে নেমেছেন, আওয়াজ তুলেছেন।

কার্গিলের একটি ছোট দোকানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ছবি টাঙানো। অগাস্ট ২০০০

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

কার্গিলের একটি ছোট দোকানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ছবি টাঙানো। অগাস্ট ২০০০

ভারতের একটি দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের মানুষজন কীভাবে ইরানের সঙ্গে এই নিবিড় আত্মীয়তা গড়ে তুললেন এবং এত বছর ধরে তা টিঁকিয়ে রাখলেন, মধ্যপ্রাচ্যে দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই বা তার কী প্রভাব – এই প্রতিবেদনে থাকছে তারই অনুসন্ধান।

কার্গিল কোথায়, কারা থাকেন?

কার্গিল ভারতের উত্তরতম প্রান্তে এক দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল, যা সিন্ধু নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে যে জাতীয় সড়ক সীমান্ত ঘেঁষে লাদাখের রাজধানী লেহ পর্যন্ত গেছে, কার্গিল মোটামুটিভাবে তার মাঝামাঝি জায়গায়।

ভারতের কৌশলগত নিরাপত্তার দিক থেকেও কার্গিলের অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ, চীন-ভারত-পাকিস্তানের প্রকৃত সীমানা যেখানে মিশেছে তার খুব কাছাকাছি।

কার্গিল যে লাদাখের অন্তর্গত, ২০১৯ সাল পর্যন্ত তা ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের অন্তর্গত।

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ স্বীকৃতি বাতিল করার সময় লাদাখকে একটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত প্রদেশের মর্যাদা দেওয়া হয়।

এখন এই লাদাখের দুটি প্রধান জেলা – বৌদ্ধ-অধ্যুষিত লেহ আর মুসলিম-অধ্যুষিত কার্গিল।

কার্গিলের মুসলিমদের মধ্যে আবার ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশই শিয়া, বাকিরা সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত।

কার্গিলের প্রায় দেড় লক্ষের মতো জনসংখ্যার মধ্যে মোটামুটিভাবে ৪৮ শতাংশ হলেন শিয়া, যারা ‘ইমামিয়া সেক্ট’ অনুসরণ করে থাকেন।

কার্গিলের বাকি অর্ধেক জনসংখ্যার মধ্যে সুন্নি মুসলিম, বৌদ্ধ ও সামান্য কিছু হিন্দুও আছেন।

কিন্তু কার্গিলে সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে শিয়া সম্প্রদায়ই যে সবচেয়ে শক্তিশালী ও দৃশ্যমান, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

লেহ-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক থেকে কার্গিল শহরের দৃশ্য

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

লেহ-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক থেকে কার্গিল শহরের দৃশ্য

কার্গিলে শিয়াদের মসজিদগুলোর বাইরে ও ভেতরে চোখে পড়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি কিংবা ইরানে ইসলামী বিপ্লবের নায়ক আয়াতোল্লাহ রুহোল্লা খামেনির বিরাট বিরাট প্রতিকৃতি – যে দৃশ্য কিন্তু লখনৌ বা হায়দ্রাবাদের শিয়া মসজিদগুলোতে দেখা যায় না!

কার্গিলে বেশ কয়েকটি শিয়া সামাজিক বা ধর্মীয় সংগঠনও খুব সক্রিয়, যারা আজও সেখানে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ভাবধারা প্রচার করে চলেছে।

এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও প্রভাবশালী হল ‘ইমাম খামেনি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ (আইকেএমটি) এবং ‘জামিয়াল-উল-উলামা ইশনা আশারিয়া কার্গিল-লাদাখ’ (জেইউআইএকে)।

এছাড়াও আঞ্জুমান শাহিদ জামান ও আরও বেশ কিছু শিয়া সংগঠনও কার্গিলে প্রচুর সামাজিক ও শিক্ষামূলক কাজকর্ম করে থাকে।

ইরানের কাডস ফোর্স কমান্ডার কাসেম সুলাইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হলে আমেরিকা-বিরোধী সমাবেশের আয়োজন কিংবা ২০০রও বেশি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আছড়ে পড়লে ‘বিজয় মিছিল’ – কার্গিলে এই সব কর্মসূচি পালিত হয় এই সব সংগঠনের উদ্যোগেই।

তা ছাড়া খামেনির স্মরণসভা, ইসলামী বিপ্লবের বার্ষিকী উদযাপন, শিয়াদের অন্যান্য ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন – এগুলো তো সারা বছর লেগেই থাকে।

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের বার্ষিকী পালন করছে কার্গিল

ছবির উৎস, IKMT

ছবির ক্যাপশান,

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের বার্ষিকী পালন করছে কার্গিল

লাদাখের লেহ যেমন ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় বা ভাষাগতভাবে লাগোয়া তিব্বতেরই একটি অংশ ছিল বলা চলে, লাদাখের কার্গিল কিন্তু এগুলোর অনেক দিক থেকেই সুদূর ইরানের সঙ্গে একাত্মতা তৈরি করেছে।

আর এই সম্পর্কও একদিনে নয়, তৈরি হয়েছে পাঁচশো বছরেরও বেশি সময় ধরে!

কীভাবে তৈরি হল ‘ইরান কানেকশন’?

ঐতিহাসিকরা বলেন, ইরান থেকে শিয়া ইসলাম কার্গিলে প্রবেশ করে পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে। এটা হয়েছিল মূলত সামরিক অভিযান, মিশনারি বা ধর্মপ্রচারমূলক কার্যকলাপ এবং বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের মাধ্যমে।

ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে পারস্য থেকে বিখ্যাত শিয়া মনীষী ও ধর্মপ্রচারক মীর শামসউদ্দিন আরাকি কার্গিল ও গিলগিট-বালটিস্তান সফরে এসেছিলেন, তিনি ওই পুরো অঞ্চলে বিরাট প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন।

শামসউদ্দিন আরাকির প্রভাবে কার্গিলের স্থানীয় শাসক, বিভিন্ন উপজাতির প্রধান বা গ্রামের মোড়লরা শিয়া ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ধীরে ধীরে ওই অঞ্চলে শিয়া ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

অবশ্য তারও আগে চতুর্দশ শতাব্দীতে পারস্যের বিখ্যাত শিয়া পন্ডিত, সূফি কবি ও ভূপর্যটক সৈয়দ আলি হামাদানিও ইরান থেকে কাশ্মীর-লাদাখে এসে সেখানে শিয়া শিয়া ইসলামের বীজ বপন করে গিয়েছিলেন।

মুম্বাইয়ের ‘গেটওয়ে হাউস’ থিঙ্কট্যাঙ্কের গবেষক আদিত্য সিন্ধে মনে করেন, ১৯৭৯তে ইরানের ইসলামী বিপ্লব বা ‘রিভোলিউশন’ কার্গিলের এই ‘ইরান কানেকশন’কে সম্পূর্ণ আলাদা একটা মাত্রা দিয়েছিল।

কার্গিলের ইমামবড়ায় প্রেসিডেন্ট রাইসির শোকসভা, ভাষণ দিচ্ছেন একজন শিয়া ধর্মীয় নেতা

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

কার্গিলের ইমামবড়ায় প্রেসিডেন্ট রাইসির শোকসভা, ভাষণ দিচ্ছেন একজন শিয়া ধর্মীয় নেতা

তিনি জানাচ্ছেন, “ইসলামী বিপ্লব কার্গিলে যে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সেই বিপ্লব ইরানে ‘বিলায়েত আল ফাকি’ বা ‘প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের অভিভাবকত্বে’র ডকট্রিন চালু করেছিল – যা সে দেশে গভর্ন্যান্সের পুরনো ধ্যানধারণাকেই পাল্টে দেয়।”

“সাবেকি শিয়া চিন্তাধারায় বলা হত, ধর্মীয় নেতারা সরাসরি রাজনীতি বা দেশ পরিচালনা থেকে দূরে থাকবেন। কিন্তু আয়াতোল্লাহ রুহোল্লা খামেনি বললেন, না, দ্বাদশ ইমামের অনুপস্থিতিতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিষয়গুলোর সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ থাকবে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতেই!”

আদিত্য সিন্ধে আরও বলছেন, এই বিপ্লব সারা বিশ্বেই ‘শিয়া আত্মপরিচয়’কে সম্পূর্ণ একটা নতুন চেহারা, গর্ব ও আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল – এবং ভারতের যে অঞ্চলটি বিপ্লবের এই নতুন ভাবধারায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছিল, তা হল কার্গিল।

এরপর থেকেই কার্গিলের স্থানীয় বহু ইমাম বা ধর্মীয় নেতারা বিরাট সংখ্যায় ইরানের কুম, ইস্পাহান বা তেহরানের মতো বিভিন্ন ইসলামিক সেমেনারিতে ধর্মীয় পাঠ নিতে যেতে শুরু করেন।

অনেকে যেতে থাকেন ইরাকের শিয়া-অধ্যুষিত শহর নাজাফেও।

সেই প্রবণতা এখনও অব্যাহত আছে, তার সঙ্গে হালে যোগ হয়েছে ইরানের বিভিন্ন মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কার্গিলের ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা নিতে যাওয়ার ঝোঁক।

ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোর তুলনায় কম খরচও অবশ্য এর একটি কারণ।

কোভিড মহামারিতে লকডাউন ঘোষণার পর ইরানে যখন কয়েক হাজার ভারতীয় ছাত্রছাত্রী আটকে পড়েন, দেখা যায় তার মধ্যে প্রায় নব্বই শতাংশই জম্মু-কাশ্মীর বা লাদাখের।

তাদের মধ্যেও আবার বেশির ভাগই ছিলেন কার্গিলের।

প্রেসিডেন্ট রাইসির প্রয়াণে কার্গিলের শিয়াদের শোক ও বিলাপ

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

প্রেসিডেন্ট রাইসির প্রয়াণে কার্গিলের শিয়াদের শোক ও বিলাপ

পরে উচ্চশিক্ষার জন্য ইরানে গেলে ভাষার দিক থেকে সুবিধা হবে, এই ভাবনা থেকে কার্গিলের বহু স্কুলে ছোটবেলা থেকে ফারসি ভাষাও শেখানো হয়।

কার্গিলে বহু মানুষ দেখেছি, যারা অনর্গল ফারসিতে কথাবার্তাও বলতে পারেন।

ফলে ধর্ম কিংবা ভাষা, শিক্ষা-সংস্কৃতি-রাজনীতি বা বিচারধারা – নানা ক্ষেত্রে ইরানের সঙ্গে কার্গিলের ঘনিষ্ঠতা কেন ক্রমে নিবিড় থেকে নিবিড়তর হয়েছে, তা বোঝাটা মোটেই কঠিন নয়!

‘ভারতকে ভালবাসায় কোনও খাদ নেই’

কার্গিল শহরেই থাকেন সুপরিচিত শিয়া রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট সাজ্জাদ কার্গিলি – যিনি ওই অঞ্চলের বিভিন্ন রাজনৈতিক, পরিবেশগত বা সামাজিক ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে নানা আন্দোলন করে আসছেন।

লাদাখ আসন থেকে লড়েছেন দেশের সংসদীয় নির্বাচনেও।

সেই সাজ্জাদ কার্গিলি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল যেভাবে প্রথমে গাজা, তারপর লেবানন বা ইরানে ‘ধ্বংসলীলা আর নরসংহার’ চালাচ্ছে তাতে ‘কার্গিলের এখন খুবই মন খারাপ!’

“প্রথমে ইরানের ভেতরে থাকা ইসমাইল হানিয়েকে ওরা মেরে ফেলল। তারপর লেবাননের গোপন ঠিকানায় পৌঁছে হাসান নাসরাল্লাহকে পর্যন্ত শহীদ বানাল! এরপরও ইরান কেন মুখের মতো জবাব দিচ্ছে না, কার্গিলেও কিন্তু এই প্রশ্ন উঠছিল!”

“এখন ইসরায়েলের ডোম ভেদ করে যেভাবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সে দেশে আঘাত হেনেছে, তাতে কার্গিলও খুব খুশি। সে দিন এখানকার রাস্তায় জলুস (বিজয় মিছিল) বেরিয়েছে, মানুষ আনন্দে আতসবাজি ফাটিয়েছে”, বলছিলেন সাজ্জাদ কার্গিলি।

সাজ্জাদ কার্গিলি

ছবির উৎস, Sajjad Kargili

ছবির ক্যাপশান,

সাজ্জাদ কার্গিলি

তবে, ইরানের সুখে-দু:খে একাত্মতা থাকলেও কার্গিলের শিয়াদের ‘ভারতপ্রেমে’ যে কোনও ঘাটতি নেই - এ কথাও জানাতে ভোলেন না ওই অঞ্চলের জনপ্রিয় ওই রাজনীতিবিদ তথা অ্যাক্টিভিস্ট।

তিনি বলছিলেন, “মনে রাখতে হবে, কাশ্মীরে বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে, তাতে কিন্তু শিয়ারা কখনওই যোগ দেয়নি। লাদাখের শিয়ারাও না, কাশ্মীরের শিয়ারাও না।”

“ফলে ভারতের প্রতি কার্গিলের আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও অবকাশই নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কিন্তু শিয়াদের এই দেশপ্রেমের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন”, জানান সাজ্জাদ কার্গিলি।

ভারতের সাবেক আইপিএস অফিসার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবিনাশ মোহানেনিও স্বীকার করেন, কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে ওই অঞ্চলের সুন্নি ও শিয়ারা বরাবরই ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে এসেছে।

তিনি বিবিসিকে বলছিলেন, “স্থানীয় সুন্নি গোষ্ঠীগুলোর দিক থেকে হাজারো প্ররোচনা সত্ত্বেও শিয়ারা কিন্তু এই সশস্ত্র ‘জিহাদি’ গোষ্ঠীগুলোর থেকে সব সময় নিজেদের দূরে রেখেছে।”

“এমন কী, কাশ্মীরের কিছু সুন্নি যুবক যখন ইসলামিক স্টেটের পতাকা নিয়ে শিয়া মহল্লায় গেছে, শিয়ারা ভারতের পক্ষে স্লোগান দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে – বছর কয়েক আগে এমন ঘটনাও আমরা ঘটতে দেখেছি”, জানান মি মোহানেনি।

ইসরায়েলি হামলায় হেজবুল্লাহ নেতা নিহত হওয়ার পর কার্গিলের রাস্তায় শোকের বহি:প্রকাশ

ছবির উৎস, IKMT

ছবির ক্যাপশান,

ইসরায়েলি হামলায় হেজবুল্লাহ নেতা নিহত হওয়ার পর কার্গিলের রাস্তায় শোকের বহি:প্রকাশ

ইসলামিক স্টেট বা ‘আইএস’-এর অবশ্য ঘোষিতভাবেই একটি শিয়া-বিরোধী অবস্থান ছিল, তাই তাদের পতাকার বিরুদ্ধে শিয়াদের পাল্টা আক্রমণ সহজবোধ্য।

তবে, কাশ্মীরের সুন্নিদের মতো কার্গিলের শিয়ারা যে কখনও ভারতের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেননি, তাতেও কোনও ভুল নেই।

লাদাখের এমপি বিবিসিকে যা বললেন

মাসপাঁচেক আগে ভারতের সাধারণ নির্বাচনে লাদাখ সংসদীয় কেন্দ্র থেকে প্রথমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কার্গিলের বাসিন্দা মোহমাদ হানিফা জান।

৫৫ বছর বয়সী এই শিয়া রাজনীতিবিদ শুধু কংগ্রেস ও বিজেপির প্রার্থীকেই হারাননি, ওই আসনে একাই ৪৮ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন।

একটি পার্লামেন্টারি কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লিতে আসা হানিফা জানের সঙ্গে সোমবার কথা হচ্ছিল বিবিসির এই প্রতিবেদকের।

হানিফা জানের পরিষ্কার কথা হল, কার্গিল আজ ইরানের পক্ষে রাস্তায় নেমেছে – এটা বলার চেয়ে, বরং বলা ভালো তারা ইসরায়েলের অত্যাচার ও নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

“শিয়া মতাবলম্বী হওয়ার কারণে ইরানের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অন্য রকমের, এ কথা ঠিক। তবুও বলব, কার্গিলের এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ যতটা না ইরানের পক্ষে, তার চেয়েও বেশি ইসরায়েলের বিপক্ষে।”

“আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি ইসরায়েল কীভাবে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, অসহায় নারী-শিশু-পুরুষ কাউকে রেয়াত করছে না। হাসপাতাল বা বাচ্চাদের স্কুলগুলোতে পর্যন্ত তারা আঘাত হানছে!”

লাদাখের নতুন এমপি মোহমাদ হানিফা জান

ছবির উৎস, MD HANEEFA JAN

ছবির ক্যাপশান,

লাদাখের নতুন এমপি মোহমাদ হানিফা জান

“এই অমানবিক জুলুম আর নির্যাতনের পৃথিবীতে ক’টা জায়গায় মানুষ মুখ খুলছে বলুন তো? আমি গর্বিত যে কার্গিল রোজ নিয়ম করে এই অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে পথে নামছে ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে”, প্রায় এক নিঃশ্বাসে বলে যান হানিফা জান।

কিন্তু এই ‘অত্যাচারী’ ইসরায়েলের সঙ্গে তার দেশের সরকারের যে এই ভীষণ মাখামাখি, এটা তাকে পীড়া দেয় না?

লাদাখের এমপি জবাবে বলেন, “সে তো ভারতের সঙ্গে ইরানেরও বেশ ভালো সম্পর্ক। দিল্লি ও তেহরান একসঙ্গে কত প্রকল্পের কাজ করছে, ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন স্যাংশনকেও ভারত আমলে নেয়নি। দিল্লির সঙ্গে ইরানের যেমন সম্পর্ক আছে, ইসরায়েলেরও আছে।”

তবে, তারপরই খানিকক্ষণ চুপ থেকে তিনি যোগ করেন, “ভারত একটা গণতান্ত্রিক দেশ, দেশের বেশির ভাগ মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপরই ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নির্ভর করে।

কিন্তু আমার দেশ যদি একটি নির্যাতনকারী রেজিমকে সমর্থন করে, সেটা দুর্ভাগ্যজনক তো বটেই!”

মধ্যপ্রাচ্য সংকটে ভারত ‘সব দিক বিবেচনা করে’ শেষ পর্যন্ত একটা 'সঠিক ও সুচিন্তিত' অবস্থান নেবে বলেই বিশ্বাস করেন এই পার্লামেন্টারিয়ান।

পাশাপাশি কার্গিল যে ঠিক রাষ্ট্র হিসেবে ইরানের সমর্থক নয়, বরং মানবিকতার সমর্থক – এটা প্রমাণ করতে তার চেষ্টাও নজর এড়ায় না।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ছবি ব্যাকড্রপে রেখে ভাষণ দিচ্ছেন আইকেএমটি-র পরিচালকরা

ছবির উৎস, IKMT

ছবির ক্যাপশান,

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ছবি ব্যাকড্রপে রেখে ভাষণ দিচ্ছেন আইকেএমটি-র পরিচালক

অনেকটা একই সুরে সাজ্জাদ কার্গিলিও বলছিলেন, “কার্গিলের শিয়ারা ইরানপন্থী, এটা বলাটা কিন্তু ভুল হবে। আসলে তারা হলেন ইরানের ইসলামী বিপ্লবপন্থী, ওই বিপ্লবের ভাবধারাটাকেই তারা আজও সম্মান করে চলেন।”

“কিন্তু তারা যে দেশের নাগরিক, রাষ্ট্র হিসেবে তাদের সমর্থন সেই ভারতের দিকেই। ফলে আমি বলব তারা গোটা দেশেই খুব ইউনিক বা অনন্য একটি সম্প্রদায়!”

ভারতের জন্য কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ?

কিন্তু ভারতেরই একটা অংশের মানুষজন যখন এভাবে প্রকাশ্যে ইরানের সমর্থনে ও ইসরায়েল-আমেরিকার বিরোধিতায় এগিয়ে আসেন, এবং অন্যদিকে দিল্লির সঙ্গে তেল আভিভ ও ওয়াশিংটন উভয়েরই ঘনিষ্ঠতা বাড়ে, তখন কি সেটা ভারতের জন্য কূটনৈতিক অস্বস্তির কারণ হয় না?

তাছাড়া গত মাসেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন, গাজা বা মিয়ানমারের মতো ভারতের মুসলিমরাও ‘দুর্দশার শিকার’ হচ্ছেন। ভারত তার এই বক্তব্যে তীব্র আপত্তিও জানিয়েছে।

২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ স্বীকৃতি বাতিল হওয়ার পর ইরান সে পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছিল, যদিও কাশ্মীর প্রশ্নে ইরানের কাছ থেকে ভারতের সমালোচনা খুবই বিরল!

এই পটভূমিতে কার্গিলের শিয়া সম্প্রদায় আগামী দিনে ভারতের ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তার জন্য কোনও হুমকি বা অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারেন কী না, বহু নিরাপত্তা বিশ্লেষকই এই জটিল প্রশ্নটি নিয়ে নাড়াচাড়া করেছেন।

কার্গিলের শিয়া গোষ্ঠীগুলি কখনও ভারতের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে নামেনি

ছবির উৎস, IKMT

ছবির ক্যাপশান,

কার্গিলের শিয়া গোষ্ঠীগুলি কখনও ভারতের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে নামেনি

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির বিশেষজ্ঞ, ভারতবিদ তথা পোল্যান্ডের বিয়ালিস্টক ইউনিভার্সিটির ঐতিহাসিক ক্রিস্টফ আইওয়ানেক মনে করেন, ইরান বনাম ইসরায়েল-আমেরিকা দ্বন্দ্বে কার্গিলের একটি ‘ফ্ল্যাশপয়েন্ট’ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা খুব কম প্রধানত দুটো কারণে।

‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ সাময়িকীতে তিনি লিখেছেন, “প্রথমত কার্গিল-সহ পুরো লাদাখ অঞ্চল শুধু প্রত্যন্ত ও দুর্গমই নয়, জায়গাটি বসবাসেরও অনুকূল নয়। আর এখানকার জনসংখ্যাও খুব কম। লাদাখের যে অংশটি ভারতের নিয়ন্ত্রণে, তার আয়তন প্রায় ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার, অথচ সেখানে থাকেন মাত্র পৌনে তিন লাখ মানুষ!”

“দ্বিতীয়ত, ইরান-প্রভাবিত যে সংগঠনগুলো কার্গিলে সক্রিয় সেগুলো যে কোনও ‘প্যারামিলিটারি প্রক্সি’তে জড়িত – তার বিন্দুমাত্র কোনও প্রমাণ কখনও পাওয়া যায়নি। মানে লেবাননে বা ইয়েমেনে তেহরান-অনুগত গোষ্ঠীগুলোকে যে ধরনের সশস্ত্র ভূ‍মিকায় দেখা যায়, কার্গিলে কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও কখনও দেখা যায়নি।”

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক উপপ্রধান ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে: জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন আবার মনে করেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শিয়ারা খুবই কম জড়ায় – ফলে তারা ‘ভোট ব্যাঙ্ক’ হিসেবে তেমন জুতসই নয়, এবং অনেক দিক থেকেই এটা ওই সম্প্রদায়ের জন্য একটা বড় ‘শক্তি’।

তিনি আরও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ১৯৯৯-র কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তান কিন্তু মূলত তাদের শিয়া-প্রধান নর্দার্ন লাইট ইনফ্যান্ট্রিকেই ব্যবহার করেছিল – কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের দিকে কার্গিলের শিয়াদের কাছ থেকে তারা কোনও সমর্থন পায়নি!

তা ছাড়া ভারতের শিয়া গোষ্ঠীগুলোও কখনওই কোনও সশস্ত্র আন্দোলনে জড়ানোরও আগ্রহ দেখায়নি।

কার্গিলের শিয়া নিয়ে রাধিকা গুপ্তার বইয়ের প্রচ্ছদ

ছবির উৎস, RADHIKA GUPTA

ছবির ক্যাপশান,

কার্গিলের শিয়া সম্প্রদায়কে নিয়ে রাধিকা গুপ্তার বইয়ের প্রচ্ছদ

ভারত-ইরান সম্পর্ক যেমন ‘পারস্পরিক স্বার্থভিত্তিক’ – ঠিক তেমনি কার্গিলের শিয়া সম্প্রদায় ও ইরানের মধ্যেও আদানপ্রদানটা ‘ট্রানসাকশনাল’ বা দেনাপাওনার অঙ্কেই নির্ধারিত হয় বলে মনে করেন সৈয়দ আতা হাসনাইন।

ফলে ইরানের সঙ্গে কার্গিলের শিয়াদের নিবিড় সংযোগ একদিন ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেতে পারে – তিনি অন্তত এমন কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না!

কার্গিলের শিয়াদের নৃতাত্ত্বিক সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় নিয়ে বহু বছরের গবেষণার ভিত্তিতে ‘ফ্রিডম ইন ক্যাপটিভিটি’ নামে একটি মনোগ্রাফ লিখেছেন নেদারল্যান্ডসের লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী রাধিকা গুপ্তা।

ওই বইটিতে লেখক কার্গিলের শিয়াদের ‘ডাবল মাইনরিটি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন – যারা শুধু ধর্মীয় পরিচয়েই নয়, প্রত্যন্ত সীমান্তবাসী হিসেবেও দু'রকমভাবে সংখ্যালঘুর পর্যায়ে পড়েন।

রাধিকা গুপ্তাও কিন্তু পরিষ্কার লিখছেন – কাশ্মীর উপত্যকা বা ভ্যালিতে যখন স্বাধীনতার ডাক উঠেছে, সেই কাশ্মীর সীমান্তেরই শিয়া সম্প্রদায় কিন্তু আবহমান কাল থেকে ভারতের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছেন!

আর কয়েক দিনের মধ্যেই শীত বাড়লে পুরো কার্গিল মোটা বরফের চাদরে নিচে ঢেকে যাবে।

বেশ কয়েক মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে তাদের 'লাইফলাইন' শ্রীনগর-লেহ জাতীয় সড়কও।

তার আগে কার্গিলি শিয়ারা হযতো আরও কিছুদিন ইরানের হয়ে রাস্তায় নামবেন, হুসেইনি পার্কে মিটিং-মিছিলও করবেন – কিন্তু ভারতের তাতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলেই পর্যবেক্ষকরা প্রায় একবাক্যে রায় দিচ্ছেন!



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews