ভারতের উত্তরাঞ্চলের রাজ্য উত্তরাখণ্ডে একটি মসজিদ ভেঙে ফেলা নিয়ে স্থানীয়দের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ জনে। এতে শতাধিক বিক্ষোভকারী ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডের হালদওয়ানি শহরের পৌর কর্তৃপক্ষ মসজিদসহ কিছু স্থাপনা ভেঙে দিলে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হালদওয়ানি শহরের বনভুলপুরা এলাকায় পৌর কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার একটি মসজিদ এবং পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসাসহ বেশ কিছু অবকাঠামো বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলার অভিযান চালায়। পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, অবকাঠামোগুলো বিনা অনুমতিতে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় মুসলমানদের অভিযোগ তাদের অন্যায়ভাবে টার্গেট করা হয়েছে। নকর্তৃপক্ষের অভিযানের সময় হালদওয়ানি শহরে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন স্থানীয় মুসলিমরা।
পুলিশ বলেছে যে মুসলমানরা বিক্ষোভ জানিয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে এবং তাদের দিকে পাথর ছুঁড়ে। বিক্ষোভকারীদের পিছু হটাতে গোলাবারুদ এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েন পুলিশ সদস্যরা। এতে করে পাঁচজন নিহত ও শতাধিক বিক্ষোভকারী ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সহিংসতা ও সংঘর্ষের পর এলাকাটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্য ‘দেখামাত্র গুলি করার’ আদেশ জারি করেছে প্রশাসন।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বনভুলপুরা এলাকায় ভারতীয় রেলওয়ের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে বসবাস করছে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই মুসলমান। গত বছরের জানুয়ারিতে উচ্ছেদের নোটিশ পাঠানোর পরে এলাকাটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। পরবর্তীতে ভারতের শীর্ষ আদালত সেই উচ্ছেদ স্থগিত করে। কর্মকর্তারা বলেছেন যে মসজিদ ও মাদ্রাসা ভেঙে ফেলা ভারতীয় হাইকোর্টের একটি আদেশের ভিত্তিতে করা হয়েছে। আদেশ অনুযায়ী পৌর কর্তৃপক্ষকে ওই এলাকা থেকে অবৈধ বসতিগুলি উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বন্দনা সিং বলেন, মসজিদ ও মাদ্রাসা ভেঙে ফেলা হয়েছে কারণ সেগুলো সরকারি জমিতে বেআইনিভাবে নির্মিত হয়েছিল এবং ধর্মীয় স্থাপনা হিসেবে নিবন্ধিত ছিল না। তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ মসজিদের প্রশাসনকে এই উচ্ছেদের বিষয়ে আগে থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল।’ কিন্তু স্থানীয়রা বিষয়টি অস্বীকার করে বলছেন, আদালত মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগেই মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ভারতে গত কয়েক মাসে পর পর কয়েকটি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বেড়েছে। স্থানীয় মুসলিম গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিমদের অন্যায়ভাবে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে এবং সাধারণ নির্বাচনের আগে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও মুসলিমদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারত সরকার।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews