টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। এ সপ্তাহে শসা ও বেগুনের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে—বরবটি, টমেটো ও গাজরের দাম। কাঁচা মরিচের দাম এখনও দুইশ টাকার বেশি। মাস খানেকের মতো নিয়ন্ত্রণে থাকার পর পুনরায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিগত কয়েক সপ্তাহের মতো মাছ ও মুরগি বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর পুরান ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। তবে বরবটির দাম ৪০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে, ১২০ টাকার টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, চায়না গাজরের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা। এক মাস আগের ৮০ থেকে ১০০ টাকার কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে হঠাৎ ৩০০ টাকা হয়। সেখান থেকে গত তিন সপ্তাহ ধরে চলছে ২০০ থেকে আড়াইশ টাকা। ইন্ডিয়ান মরিচ আমদানি হলেও কমছে না দাম।
লম্বা ও গোল বেগুনের বর্তমান দাম ৭০ ও ১০০ টাকা, পটোল, কচুরমুখী, ঢেড়শ, লাউ, মূলা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা ও ধূনধূলের দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা। কাঁকরোল, কচুর লতি, করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। টমেটো ১৮০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, দেশি শসা ১০০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা। এছাড়া আলু ২৫, পেঁপে ৩০, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, কুমড়োর কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, চাইনিজ পাতা ৩০০ টাকা।
সবজির চড়া দামের কারণ জানিয়ে ধূপখোলা বাজারের বিক্রেতা আল আমিন বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেশি। এছাড়া বৃষ্টির সময় ভ্যান-গাড়ির ভাড়া বেশি থাকে। সবজি পঁচে যাওয়ার শঙ্কা থাকে, সেজন্য সব মিলিয়ে দামটা বেড়েছে।
কাঁচা মরিচের দাম দীর্ঘ দিন ধরে বেশি থাকার কারণ জানিয়ে নারিন্দা কাঁচা বাজারের বিক্রেতা হোসেন মিয়া বলেন, প্রতি বছর বৃষ্টির সিজনে কাঁচা মরিচের দাম বেশি থাকে। এবারও একই রকম আছে। তবে গত বছর তো ৪০০ পর্যন্ত উঠেছিল। এবার এখনও এতো দাম হয়নি।
তিনি বলেন, ইন্ডিয়ার মরিচ আসলেও বৃষ্টিতে অনেক মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। সেজন্য দাম বেশি। মরিচ হচ্ছে কাঁচা মাল। এটা বেশি দিন ধরে রেখে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। যেদিন দেখবে কাস্টমার বেশি, সেদিন হঠাৎ পাইকাররা দাম বাড়ায় দেয়। ওদের একটা হিসাব আছে বলে মনে করেন এ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
১০ টাকা বেড়েছে ডিমের দাম
এক মাসের ব্যবধানে লাল ও সাদা ডিমের ডজন ১২০ টাকা থেকে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা। দাম বেড়েছে হাঁসের ডিমেরও। ২০০ টাকা ডজন হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা।
রায়সাহেব বাজারের খুচরা বিক্রেতা সেলিম মিয়া বলেন, বৃষ্টিতে সবজি ও মাছ-মাংসের দাম কিছুটা বেশি। সেজন্য সরবরাহ ভালো থাকার পরও ডিমের দাম বেড়েছে। তিনি মনে করেন, বাজারের সব কিছুই একটা আরেকটার পরিপূরক। একটার বেশি হলে অন্যগুলোর দাম কিছুটা হলেও বাড়বে।
মাছ-মুরগি আগের দামে বিক্রি
গত সপ্তাহের দামে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সোনালি মুরগির দাম ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। তিন সপ্তাহ আগেও মুরগির দাম ১৬০ থেকে ১৫০ টাকা ছিল। সোনালি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা ছিল। এছাড়া দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
রুই মাছ ২ কেজি থেকে আড়াই কেজির দাম ৪৫০ টাকা, দেড় থেকে ২ কেজির দাম ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, এক থেকে দেড় কেজির দাম ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, এক কেজির কমগুলোর দাম ২৮০ টাকা। পোয়া মাছ ৬০০ টাকা, মিরকা মাছ ২৮০ টাকা, তেলাপিয়ার দাম আড়াইশ টাকা, এক কেজির বেশি পাঙ্গাসের দাম ১৮০ টাকা, দেড় কেজির বেশি পাঙ্গাসের দাম ২৫০ টাকা। শিং মাছ সাড়ে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা। চিংড়ি মাছ ৯০০ থেকে ১হাজার ৪০০ টাকা। ইলিশ মাছ ২ হাজার ২০০ থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।