মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ব্যবসায়িক লেনদেনের পাওনা ১৪ কোটি টাকা চাইতে গিয়ে উল্টো ২০ লাখ টাকার চাঁদাবাজি আর ২৫ লাখ টাকা মূল্যমানের রোলেক্স ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়া মামলার আসামি ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন (৫৪)। আর এই নাটকীয় ঘটনার নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ খোদ থানার ওসি জে ও এম তৌফিক আজমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওসির বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা নথিভুক্ত করে হয়রানির অভিযোগ এনে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী জানান, তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ব্যবসায়িক পার্টনার ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সৈয়দ আবু সুফিয়ান সিদ্দিকীর সঙ্গে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন। লেনদেনের হিসাব অনুযায়ী সুফিয়ানের কাছে তার পাওনা দাঁড়ায় ১৪ কোটি টাকা।

পুলিশ সুপারের কাছে দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে ও মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা সূত্রে জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার বাইমাইল গ্রামের নুর ইমলামের ছেলে সেলিম  ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সরাইল উপজেলার  শাহবাজপুর গ্রামের সৈয়দ আবু সালেহ’র ছেলে সৈয়দ আবু সুফিয়ান সিদ্দিকীর সঙ্গে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে জমি কেনাবেচার ব্যবসার সুবাদে তার কাছে ১৪ কোটি টাকা পাওনা হয়ে যান। এই পাওনা টাকা নিয়ে একাধিক সালিস বৈঠকে সুফিয়ান নিজেই দেনার কথা স্বীকার করেন।

সর্বশেষ গত বছরের ৮ই সেপ্টেম্বর থানা কম্পাউন্ডের ভেতর তৎকালীন ওসি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর ও উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক  দেওয়ান মাহবুবুর রহমান মিঠুসহ বিভিন্ন গণ্যমান্যদের নিয়ে সালিশে সুফিয়ান লিখিতভাবে অঙ্গীকারনামা দেন পাওনা টাকার মধ্যে প্রথম দফায় অক্টোবর মাসের মধ্যে পরিশোধ করবেন ৪০ লাখ টাকা। বাকি ১ কোটি টাকা ৮ই ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করবেন। আর অবশিষ্ট পাওনা টাকা হিসাবে সিংগাইরের উত্তর জাইল্যা মৌজার ১৭১ শতক জমি সেলিম হোসেনের নামে হস্তান্তরের অঙ্গীকার করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে টাকা বা জমি কোনোটিই ফেরত দেননি সুফিয়ান। উল্টো সেলিম ও তার ছেলে পলাশকে প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এরপর উপায়ান্তর না দেখে চলতি বছরের ২৯শে এপ্রিল মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন সেলিম। ওই মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ওসি জে ও এম তৌফিক আজম নিজেই। সেলিম জানান, মামলাটি তদন্ত না করে তিনি উল্টো সুফিয়ানের সঙ্গে যোগসাজশে আমার দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করার চাপ দেন। কিন্তু আমি মামলা প্রত্যাহারে অসম্মতি জানালে ওসি’র প্ররোচনায় আমার ও আমার ছেলের বিরুদ্ধে গত ২৩শে আগস্ট জোরপূর্বক ১৫ লাখ টাকা চাঁদা গ্রহণ ও ২৫ লাখ টাকার রোলেক্স ঘড়ি ছিনতাই মামলা ঠুকে দিয়ে আমাকে হয়রানি করছেন।

মামলার বাদী সৈয়দ আবু সুফিয়ান সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগী সেলিমের অভিযোগ, তার কাছে আমার ১৪ কোটি টাকা পাওনা। যা নিয়ে চলতি বছরের ২৯শে এপ্রিল মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলাটি ওসির কাছে আদালত তদন্তভার দিয়েছেন। আমার মামলার তদন্তের কোনো অগ্রগতি না করে উল্টো আমার বিরুদ্ধে আমার মামলার আসামিকে দিয়ে চাঁদাবাজি মামলা করলেন। এতে থানার ওসি সরাসরি জড়িত। এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি’র সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগের বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে মামলা থেকে বাঁচতে হয়তো এ ধরনের অভিযোগ করতে পারেন বলে জানান ওসি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews