বিশ্বের অন্যতম বিমান প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোয়িং। বিশ্বব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তাদের তৈরি হাজার হাজার বিমান। তবে এবার সামনে এসেছে ভয়ংকর তথ্য। কোম্পানিটির কয়েকশ বিমান মাঝ আকাশে বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। খবর আরটির অনলাইনের।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান পরিষেবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, বোয়িংয়ের ৭৭৭ সিরিজের অন্তত ৩০০ বিমান মাঝ আকাশে উড্ডয়নের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব বিমানকে ত্রুটিযুক্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে এগুলোর সবই যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ রুটে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য যেসব দেশে বোয়িং ৭৭৭ সিরিজের বিমানগুলোকে রয়েছে তাদের যুক্ত করা হয়নি। মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকা একই সিরিজের অন্য বিমানগুলো ঝুঁকির বাইরে নয়। এফএএ জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে ৭৭৭ সিরিজের ৭৭-২০০, ২০০ এলআর, ৭৭৭-৩০০, ৩০০ ইআর এবং ৭৭৭ এফ উপসিরিজের বিমান। ছোট ছোট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঝুঁকিতে পড়ছে বিমানগুলো। মার্কিন এ সংস্থার তথ্যমতে, বিমানগুলোর জ্বালানি ট্যাংক শীতল এবং ঝুঁকিমুক্ত রাখতে যে প্রযুক্তি বা ইগনেশন সোর্স ব্যবহা করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্বল। ফলে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হলে তা জ্বালানি ট্যাংকে প্রভাব ফেলতে পারে। এতে করেই মাঝ আকাশে ঝুঁকিতে পড়বে বিমানগুলো। এফএএ জানিয়েছে, এ সমস্যার জন্য দায়ী বিমানের ফুয়েল ট্যাঙ্কের ভেতরে থাকা ত্রুটিপূর্ণ ইগনিশন সোর্স।
এ ছাড়া তারা অবিলম্বে বোয়িং কর্তৃপক্ষকে ৭৭৭ সিরিজের সব বিমান পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। ১৯১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল শহরে বোয়িং কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে এর সদর দপ্তর ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আর্লিংটনে স্থানান্তর করা হয়। ১০০ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো দাপট দেখাচ্ছে কোম্পানিটি। যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ বিমান পরিবহন সংস্থা আমেরিকান এয়ারলাইন্স এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের সব অপারেশন বোয়িং সিরিজের বিমান দিয়ে পরিচালনা করে আসছে। এর আগে ২০২১ সালে বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের তদন্ত শেষে ওই বছরই ড্রিমলাইনার সিরিজের বিমান তৈরি স্থগিতের নির্দেশ দেয় এফএএ। এ ছাড়া এই সিরিজের সব বিমান গ্রাউন্ডেড করে যথাযথ পরীক্ষা এবং ত্রুটি সারানোর দেয় নির্দেশ দেয় এফএএ।