বটতলায় তখন সাত–আটটা দোকান ছিল। সব দোকানে ছাত্রদের বাকির খাতা থাকত। খাওয়ার পর বিলের অঙ্কটা নিজেই লিখে রেখে আসতে হতো। মাসের শুরুতে বেশ কিছু টাকা আগাম দিয়েও রাখতাম আমরা। আমি খেতাম বটতলায়। বটতলার দোকানিরাও আমাকে নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তেন। তরকারি ভালো না হলে খেতে পারতাম না। ভালো লাগছে না বললে তরকারি পাল্টে দিতেন, সব সময় বাড়তি টাকাও রাখতেন না। বাসি তরকারি তো দূরে থাক, শীতের দিনে দুপুরে রান্না করা তরকারি রাতের বেলায় দিতেন না আমাকে। তাঁরা জানতেন, আমি ঠিক ধরে ফেলব।
এমনিতে বাড়তি তরকারি হোটেলওয়ালারা ফেলে দেন না। ফ্রিজে রেখে পরের বেলায় গরম করে খাওয়ান। আমার বেলায় সেটা করা যেত না, তাঁরা চেষ্টাও করতেন না। মোটকথা, বাড়ির মতোই আবদার করা যেত দোকানিদের কাছে। এত কিছুর পরও খাওয়াদাওয়াটা নিয়মিত ছিল না আমার। কোনো কোনো বেলায় খেতাম না। চা-বিস্কুটেই ক্ষুধা মরে যেত। ইচ্ছা করত না খেতে। কোনো কোনো বেলায় আধপ্লেট ভাত খেতাম। ফলে স্বাস্থ্যের উন্নতি আর হচ্ছিলই না।