অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে অর্থাৎ ১০ বছর আগে সরকার দেশি-বিদেশি সংস্থা থেকে সব মিলিয়ে ৫৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। ওই বছর এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। কিন্তু অনুন্নয়ন ব্যয় মেটাতে ও উন্নয়ন বাজেটে টাকার জোগান দিতে সরকারকে এনবিআরের আয়ের বাইরেও অতিরিক্ত অর্থ ঋণ করতে হয়েছিল, যা ছিল এনবিআরের আয়ের প্রায় ৪৪ শতাংশের সমান। পরের এক দশক সময়ে এই হার শুধু বেড়েছে।
সর্বশেষ গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে সব মিলিয়ে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। এই অর্থবছরে এনবিআরের আদায় ছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এনবিআর যে পরিমাণ অর্থ আদায় করতে পেরেছিল, খরচ মেটাতে তার তুলনায় অতিরিক্ত আরও ৫৩ শতাংশ অর্থ ঋণ করতে বাধ্য হয়েছিল সরকার।
দেশি-বিদেশি ঋণ কীভাবে চাপ বাড়াচ্ছে—সে বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাজস্ব আদায় কম এবং ঋণ বেশি নেওয়ার ফলে বাজেটের ওপর চাপ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশি-বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধে যে পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশকে খরচ করতে হচ্ছে, তা রাজস্ব আদায় ও অনুদানের ৭১ দশমিক ৮ শতাংশের সমান। চলতি অর্থবছরে তা বেড়ে ১০১ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। একটি দেশের যত রাজস্ব আদায় হয়, এর সমপরিমাণ অর্থ যদি ঋণের সুদাসল পরিশোধে চলে যায়, তা হলে উন্নয়ন ও অন্যান্য খরচ চালাতে প্রতিনিয়ত ঋণ নিতে হবে।