রাজধানী ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়টি উদ্বেগজনক। যানবাহনের জানালার পাশে বসে যখন কেউ ফোনে কথা বলেন বা নেট ব্রাউজ করেন, তখন মুহূর্তেই অপরাধীরা ফোনগুলো টান দিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।





সকাল-দুপুর কিংবা সন্ধ্যায় সড়কে অহরহ মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। জানা যায়, রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০ মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসবের মধ্যে কম দামি মোবাইলগুলো সরাসরি বিক্রি করা হয়।

আর বেশি দামি বা স্মার্টফোনের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) পরিবর্তনের পর সেগুলো দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যেগুলোর আইএমইআই পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না, সেগুলো ভেঙে পার্ট পার্ট করে বিক্রি করা হয়। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ছিনতাইকারীরা অর্থ, মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানুষের ওপর আক্রমণও করছে। একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে বা ছিনতাই হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কত ধরনের বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হতে হয় তা বহুল আলোচিত। কাজেই কারও মোবাইল ফোন সেট ছিনতাই হয়ে গেলে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে অপরাধীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার পদক্ষেপ নিতে হবে অবিলম্বে।

ছিনতাই বা এ ধরনের অপরাধের মাত্রার তুলনায় অপরাধীদের গ্রেফতার, বিচার ও শাস্তির ঘটনা কম বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য ছিনতাইয়ের মুহূর্তে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তিটি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সাহায্য সেভাবে পান না। এসব ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও তেমন কিছু করার থাকে না। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা মামলা করেন না। এসব ক্ষেত্রে কেন ভুক্তভোগীদের মামলা করার আগ্রহ কম তা খতিয়ে দেখা দরকার। যেসব অপরাধী প্রযুক্তির অপব্যবহার করে অন্য অপরাধীকে সহায়তা করে-সংশ্লিষ্ট সব অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার পদক্ষেপ নেওয়া না হলে সমাজে নতুনমাত্রায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ছিনতাইয়ের প্রতিটি ঘটনাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে কর্তৃপক্ষকে যথাযথভাবে তৎপর হতে হবে। তা না হলে সারা দেশে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। বেশিরভাগ ছিনতাইকারী হয়ে থাকে নেশাগ্রস্ত। নেশার টাকা জোগাতে তারা এ পথ বেছে নেয়।

অনেকে নেশার টাকার জোগাড় করার জন্যই ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। জানা যায়, বহু ভদ্র পরিবারের তরুণও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। কাজেই পরিবারের কোন সদস্য কখন, কোথায় কী কাজে ব্যস্ত থাকেন, এসব বিষয় বাবা-মা-অভিভাবকদের আরও সতর্ক হতে হবে। কোনো তরুণ ছোট ছোট অপরাধ করে পার পেয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে সে বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রেই আমরা জানতে পারি, কোন কোন এলাকায় ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেশি। এসব তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সক্রিয়তা বাড়ানোর মাধ্যমে অপরাধ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন কিনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উচিত প্রতিদিন প্রতিমুহূর্ত অনুসন্ধান করে দেখা। ছিনতাইসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে তৎপর হতে হবে। সমাজে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সমাজবিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষকে মনোযোগ বাড়াতে হবে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews