দেখতে দেখতে হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে ইতোমধ্যে আমরা অতিক্রম করেছি স্বাধীনতার সুদীর্ঘ ৫২টি বছর। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতিসংক্রান্ত কমিটি বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আজকের এ উত্তরণ, যেখানে রয়েছে এক বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়ার ইতিহাস। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। তার সাহসী ও গতিশীল উন্নয়ন কৌশল গ্রহণের ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাঠামোগত রূপান্তর এবং উল্লেখযোগ্য সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে এসেছে।





শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, সমুদ্রবিজয় এবং মহাকাশ বিজয় তো পুরো জাতির সামনে দৃশ্যমান। কিন্তু এমন অনেক কাজ আছে, যা মানুষের চোখের আড়ালে রয়ে গেছে, যার সুযোগ-সুবিধা মানুষ পাচ্ছে। এ সুযোগ-সুবিধার কারণটা মানুষ সঠিকভাবে জানেও না; জানতে চেষ্টাও করে না। তেমনি একটা ক্ষেত্র হলো স্বাস্থ্য খাত।

মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। মাতৃমৃত্যু হার এবং শিশুমৃত্যু হ্রাস পেয়েছে। সীমাবদ্ধ সম্পদ ও বিপুল জনগোষ্ঠী নিয়ে এ অর্জন যে প্রশংসনীয়, তা জাতীয়সহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবাই স্বীকার করেন। স্বাস্থ্য খাতের এ অর্জনের জন্য ৩টি জাতিসংঘ পুরস্কারসহ ১৬টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত। এর মধ্যে এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির প্রণয়ন এ সরকারের এক উল্লেখযোগ্য অর্জন। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের উন্নয়ন গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করা যায়। আজ নিজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৪৫টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ মোটেও সহজ কথা নয়। অনেকেই বিদেশের চিকিৎসাব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থার তুলনা করেন। আমাদের দেশের জনসংখ্যা এবং আর্থিক সক্ষমতা তারা মাথায় রাখেন না। ডাক্তার-রোগী, ডাক্তার-সেবিকার আনুপাতিক হারের বিষয়টি মাথায় রাখেন না। বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য খাতে অন্যতম পদক্ষেপ হলো কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে এ কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পটি শেখ হাসিনা সরকার গ্রহণ করে এবং প্রায় দশ হাজার ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো জনবান্ধব মানবিক উদ্যোগকে শুধু রাজনৈতিক রোষে বন্ধ করে দিয়েছিল। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৪ হাজার ২০০ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশব্যাপী বিস্তৃত স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন অনলাইন জরিপ এবং বিবিএসের তথ্য অনুসারে, কমিউনিটি ক্লিনিকের ৯০ শতাংশের বেশি গ্রাহক তাদের পরিসেবা ও সুবিধার ক্ষেত্রে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। স্থাপন করা হয়েছে হৃদরোগ, কিডনি, লিভার, ক্যানসার, নিউরো, চক্ষু, বার্ন, নাক-কান-গলাসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, অব্যাহত নার্সের চাহিদা মেটাতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নার্সিং ইনস্টিটিউট। প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন করার কাজ চলছে।

শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম আদর্শ দেশ হিসাবে স্থান করে নিয়েছে। উপজেলা হাসপাতালকে উন্নীত করা হয়েছে ৫০ শয্যায়। মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালগুলোতেও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের উন্নয়ন স্বাস্থ্য খাতকে উন্নত করছে। সব হাসপাতালে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ই-গভর্ন্যান্স ও ই-টেন্ডারিং চালু করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোকে অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতালকে কেন্দ্র করে অনলাইন সেবা কার্যক্রম চালু করতে ‘ভিশন সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে।

বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মৃত্যু রোধে এখনো পর্যন্ত সফলতার পরিচয় দিয়ে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। করোনা সামলে ওঠার সূচকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ পঞ্চম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় দেশে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হবে। ২০১০ সালে প্রকাশিত ‘গুড হেলথ অ্যাট লো কস্ট : টোয়েন্টি ফাইভ ইয়ারস অন’ শীর্ষক বইয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতির যে কারণগুলো উল্লেখ করা হয়, তার মধ্যে ছিল বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাত বিশ্বব্যাপী প্রশংসনীয় সফলতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম খরচে মৌলিক চিকিৎসা চাহিদা পূরণ, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ-নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল, অসংক্রামক রোগগুলোর ব্যবস্থাপনা ও প্রতিরোধে ব্যাপক উদ্যোগ, পুষ্টি উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সূচকগুলোর ব্যাপক অগ্রগতিতে স্বাস্থ্য অবকাঠামো খাতে অভূতপূর্ব অর্জন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছে বহুদূর। বাংলাদেশকে ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ থেকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হতে যাচ্ছে, যা মোটেও সহজসাধ্য কাজ নয়।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে ১২ জানুয়ারি থেকে তারই নেতৃত্বে ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে শুরু হয় যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের নবযাত্রা। তখন আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ১০০-১৫০ মার্কন ডলার। জিডিপি ছিল শূন্যের চেয়েও কম অর্থাৎ ঋণাত্মক। উন্নয়নের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বলতে কিছুই ছিল না। সবকিছুই ছিল ভাঙা ও বিধ্বস্ত। শূন্যের ওপর দাঁড়িয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের পথচলা। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ ডলার; অর্থাৎ মানদণ্ডের প্রায় ১ দশমিক ৯ গুণ। মানবসম্পদ সূচকে নির্ধারিত মানদণ্ড ৬৬-এর বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫ দশমিক ৪। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে উত্তরণের জন্য মানদণ্ড নির্ধারিত ছিল ৩২ বা তার কম। ওই সময় এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৭।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সবক’টি খাতেই সর্বনিম্ন সূচক থেকে অনেক উপরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞ হিসাবে আমাকে সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক আর তার কিছু উল্লেখযোগ্য উন্নতির চিত্র না বললেই নয়। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবার ওপর প্রভূত কাজ করেছে। সরকার সব জনগণ; বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মৌলিক স্বাস্থ্য সুবিধাগুলো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও প্রজনন স্বাস্থ্যসহ পরিবার পরিকল্পনার বর্তমান অবস্থা; বিশেষ করে নারী, শিশু ও প্রবীণদের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং শারীরিক, সামাজিক, মানসিক ও আত্মিক সুস্থতার ক্ষেত্রে টেকসই উৎকর্ষ স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাত (এইচএনপি) সেক্টরের মূল লক্ষ্য। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি, জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টিনীতি এবং জাতীয় জনসংখ্যানীতি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কিছু সূচক যেমন-শিশু এবং মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, শিশু ও মায়েদের টিকা দেওয়া, ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি দূরীকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে অসাধারণ অর্জন হয়েছে। তবে অন্য সূচকগুলোয় বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকায় সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য সমন্বিত প্রয়াস গ্রহণ করা জরুরি।

স্বাধীনতার এই মাসে আমি আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, জাতির পিতার নামে এ বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বসেরা সেবা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। স্পেনের সিমাগো এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস-এ দুটি বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা মানসম্মত চিকিৎসা এবং গবেষণার জন্য অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে পঞ্চম স্থান এবং দক্ষিণ এশিয়ার মেডিকেল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানের মর্যাদা দিয়েছে।

রোগীদের আরও উন্নত চিকিৎসা প্রদান করার লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যেই চালু করেছি ১৫টি ডিভিশন, খোলা হয়েছে নতুন ৭টি বিভাগ এবং ডেন্টালের ৫টি বেসিক কোর্স। দীর্ঘ ২৪ পর ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ চালু হয়েছে। অনুমোদিত হয়েছে নতুন শিশু অনুষদ। জেনোম সিকোয়েন্সিং, অ্যান্টিবডি সেন্সিটিবিটিসহ বেশকিছু গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। করোনা মহামারির সময়ে মাত্র ১৫ দিনে প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ কনভেনশন হলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল চালু করেছিলাম।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এমজিডি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নের প্রস্তুতিসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গসমতা, কৃষিতে ব্যাপক উন্নয়ন, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা, পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক বৃদ্ধি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি ও পরিশ্রমের ফসল। ইতোমধ্যে উদ্বোধন হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু এবং ঢাকা মেট্রোরেল। এছাড়া চলমান রয়েছে দেশের মেগা সব প্রকল্প।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে আসুন-আমরা দল-মত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যা হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নপূরণের একমাত্র পথ।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ : উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews