প্রিয়র সঙ্গে আমার শেষবার কথা হয় ওর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে, ১৯ জুলাই, শুক্রবার দুপুরে। রংপুর তখন ক্ষোভে উত্তাল। আবু সাঈদের অন্যায় মৃত্যুর পর ফুঁসে উঠেছে সবাই। আর এদিকে আমার উৎকণ্ঠা কাটে না। তাই জুমার নামাজের পর মুঠোফোনে প্রিয়কে কল দিলাম। দু-একটি কথা শেষে বললাম, ‘সাবধানে থেকো, বাবা।’ জবাবে উল্টো আমাকেই সে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিল, ‘তুমিও সাবধানে থাকিয়ো, মা।’
এটাই শেষবারের মতো তার কাছ থেকে আমার মা ডাক শোনা।
জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তোমার কাছে টাকাপয়সা কিছু আছে?’
বলল, ‘না, মা।’
ফোন রেখে ওকে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করলাম। ওর মামাকে বললাম, ‘কিছু টাকা বিকাশ করে দাও।’
চাকরি ছিল না বলে প্রিয়র টাকাপয়সার টানাটানি ছিল। দেড় মাস আগে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়েছিল প্রিয়। আরেক প্রতিষ্ঠানে চাকরির কথাবার্তা পাকা হয়ে গিয়েছিল। আমি জানতাম না। ও নাকি চাকরি পেয়ে আমাকে চমকে দিতে চেয়েছিল।
চমকে সে আমাকে দিয়েছে। কিন্তু আমার ছেলে এভাবে নিথর হয়ে গিয়ে যে চমকে দেবে, তা তো আমি চাইনি।