দেশভাগের সাহিত্য—টোবা টেক সিং (সাদাত হাসান মান্টো, ১৯৫৫), ওয়াতন আউর দেশ (যশপাল সিং, ১৯৬০) এবং কালো বরফ (মাহমুদুল হক, ১৯৭৭)—ভাঙনের সময় পারিবারিক ভাগ্যের নাটকীয় পরিবর্তনের কথা বলে।
এই ভূমিস্বল্পতার ভূগোলে প্রতিবেশীর মন্দির বা মসজিদের আচার-অনুষ্ঠানের চাইতে তার পায়ের নিচের জমির ওপর ছিল আসল নজর। দাঙ্গার মাধ্যমে মানুষকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে তাদের জমির দখল হচ্ছে আমাদের সব মন্বন্তরের ইতিহাসের আসল খেলা। অন্নদাপ্রসাদ রায় তাঁর ‘খুকি ও খোকা’ ছড়ায় একই বিষয় তুলে ধরেন, ‘ভাঙছ প্রদেশ ভাঙছ জেলা/ জমিজমা ঘরবাড়ি।’
পূর্ব পাকিস্তানের নতুন কর্মচারীদের বাসস্থান—যেমনটা আমার দাদার ক্ষেত্রে জুটেছিল—এবং অফিস স্থাপনের জন্য সম্পত্তি অধিগ্রহণের আইন প্রয়োজন হয়। ‘সম্পত্তি রিকুইজিশন আইন’ (১৯৪৮) বিবর্তিত হয়ে আসে ‘ইস্ট বেঙ্গল ইভাকিউজ অ্যাক্ট’ (১৯৫১)। ১৯৬৪ সালে কাশ্মীরে হযরতবাল ঘটনার পর নতুন দাঙ্গার পরে আসে ‘পূর্ব পাকিস্তান বিতাড়িত ব্যক্তি পুনর্বাসন অধ্যাদেশ’। এই নতুন আইনে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্থাবর সম্পত্তি’ হস্তান্তর সীমাবদ্ধ করা হয়। এর পর থেকে বাঙালি হিন্দুরা যেকোনো কারণে পূর্ববঙ্গ ত্যাগ করতে চাইলে তারা তাদের সম্পত্তির বৈধ বিক্রির ক্ষেত্রেও বাধার সম্মুখীন হয়।