ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলায়, ফেনী নদীর গতিপথ এবং সীমান্ত লাইন এমনভাবে গঠিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের কিছু স্থানে জমির প্রস্থ মাত্র কয়েকশ মিটার, যা একদিকে নদী, অপরদিকে ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে সীমাবদ্ধ। এই এলাকাটি ভূগোলগতভাবে স্পর্শকাতর এবং তার চেয়েও বেশি কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। ভারতের দিক থেকে এই এলাকাটিকে সুরক্ষা দেওয়ার অজুহাতে নানা অবকাঠামো নির্মাণ, সীমান্তের নিকটবর্তী রাস্তা সম্প্রসারণ এবং পানি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা স্পষ্টভাবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলছে।

ফেনী নদী সংলগ্ন এই সংকীর্ণ জমি নিছক একটি সীমান্ত অঞ্চল মনে করলে মারাত্মক ভুল হবে। এটি আসলে একটি ‘প্রাকৃতিক কৌশলগত করিডোর’, যা একাধারে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, গোয়েন্দা ও অর্থনৈতিক স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। কেন এটি বাংলাদেশকে এখনই পূর্ণভাবে রক্ষা করতে হবে, তা নিচে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো:
১. সীমান্ত নিরাপত্তা বজায় রাখার নিয়ামক এই করিডোর এমনভাবে গঠিত যে, বাংলাদেশের ভূখ-ের প্রস্থ কিছু স্থানে মাত্র ৩০০ থেকে ৫০০ মিটার। এতে অতিমাত্রায় সীমান্তদুর্বলতা তৈরি হয়, যেখান থেকে সহজেই চোরাচালান, অস্ত্র পাচার, অনুপ্রবেশ বা ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর আগ্রাসী তৎপরতা পরিচালনা করা যায়। সীমান্ত সুরক্ষায় জওয়ান মোতায়েন, নজরদারি ও টহল ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে, যদি সেখানে স্থায়ী উপস্থিতি না থাকে।

২. দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বাংলাদেশের সামরিক, বাণিজ্যিক ও কৌশলগত দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলসমূহের মধ্যে অন্যতম। এই করিডোর ব্যবহার করা যেতে পারে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে যেকোনো বাহিনী পুনঃমোতায়েন, রিজার্ভ মোবিলাইজেশন ও প্রতিরক্ষা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে বিকল্প রুট হিসেবে। ভারত যদি এই এলাকা কোনোভাবে তার নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়, তাহলে সে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করতে পারবে, যা দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও যুদ্ধকালীন গতিশীলতা ব্যাহত করতে পারে।

৩. পানি ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও পরিবেশ সংরক্ষণের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ফেনী নদী, শুধু একটি সীমান্ত নদী নয়; এটি পার্বত্য ও সমতল এলাকার সেচ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, স্থানীয় কৃষি উৎপাদনের প্রাণভোমরা, পানি প্রবাহ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে একটি প্রাকৃতিক চ্যানেল। এই নদীসংলগ্ন জমি ভারত নিয়ন্ত্রণে নিলে নদীর পানি প্রবাহ নিজেদের দিকে ফিরিয়ে নিতে পারে, যাতে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ও পানির প্রাকৃতিক অধিকার ব্যাহত হবে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হবে। বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে পানির সংকট ও বর্ষাকালে প্লাবনের ঝুঁকি বাড়বে।

৪. ত্রিপুরা রাজ্য হচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার। বাংলাদেশের এই করিডোরে একটি কার্যকর গোয়েন্দা নজরদারি ও মনিটরিং ব্যবস্থা স্থাপন করলে, ত্রিপুরা ও এর সামরিক কার্যক্রমের ওপর বাংলাদেশ নজরদারি রাখতে পারে। এটি এমন একটি প্রাকৃতিক এলিভেটেড ভিউ পয়েন্ট প্রদান করে, যেখান থেকে ত্রিপুরার গুরুত্বপূর্ণ রেল, রাস্তা ও সামরিক ঘাঁটিগুলো নজরে রাখা যায়। কিন্তু যদি এই এলাকা ভারতীয় নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, তাহলে সেই গোয়েন্দা সুবিধাটিও হারিয়ে যাবে এবং উল্টো বাংলাদেশকেই নজরদারির আওতায় আনা হবে।

৫. কৌশলগত ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা, সর্বোপরি, এই করিডোর যদি ভারতীয় প্রভাবাধীন হয়ে যায় বা কোনো চুক্তির মাধ্যমে ভারতকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ তার নিজস্ব ভূখ-ে আত্মরক্ষামূলক অবস্থান হারাবে, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কৌশলগত ভারসাম্য পুরোপুরি ভারতের পক্ষে চলে যাবে এবং ভবিষ্যতে ভারত সহজেই বাণিজ্যিক বা সামরিক চাপে বাংলাদেশকে কোণঠাসা করতে পারবে। এটি কেবল একটি ভূমি নয়, এটি হচ্ছে বাংলাদেশের কৌশলগত সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ।
এই সংকীর্ণ করিডোর শুধু মানচিত্রের একটি রেখা নয়, এটি বাংলাদেশের আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, পানি অধিকার ও কৌশলগত অবস্থানের কেন্দ্রবিন্দু। সময় এসেছে এই অঞ্চলকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সামরিক, কূটনৈতিক ও অবকাঠামোগত পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসা। একবার যদি এ জমি হাতছাড়া হয়, তবে কৌশলগতভাবে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদে দুর্বল হয়ে পড়বে।
ভারত বিগত দুই দশকে এক ধারাবাহিক কৌশল অনুসরণ করে দক্ষিণ এশিয়ায় অধিপত্য প্রতিষ্ঠা, প্রভাব বিস্তার ও আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ নিয়ন্ত্রণের একটি বহুমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত, বিশেষত ফেনী নদী সংলগ্ন করিডোর, এই বৃহৎ কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভারতের জন্য এই এলাকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ তার সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সাথে মূল ভারত ভূখ-ের সংযোগ ও নিয়ন্ত্রণ রক্ষার দিক থেকে।

নিচে ভারতের সম্ভাব্য আগ্রহ ও অপব্যবহারসমূহ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
১. অবকাঠামোগত আধিপত্য: ভারত ইতোমধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিজস্ব অবকাঠামো নির্মাণে একতরফা অগ্রসর হচ্ছে। এ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে: সড়ক নির্মাণ, ব্রিজ স্থাপন, বাঁধ ও স্লুইস গেট নির্মাণ, যেগুলোর একটি অংশ সরাসরি বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা।
এগুলোর মাধ্যমে ভারত ভবিষ্যতে চাইলে সামরিক সরঞ্জাম স্থানান্তর, সেনা মোতায়েন বা দ্রুত মোবিলাইজেশনের সুবিধা নিতে পারবে। নদীসংলগ্ন অবকাঠামো নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের প্রবেশাধিকার সীমিত হয়ে যেতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে একটি নিঃশব্দ অথচ শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ কৌশল।
২. গোয়েন্দা তৎপরতা ও মনিটরিং নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ: ফেনী করিডোর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য আদর্শ একটি এলাকা। ভারত চাইছে এই অঞ্চলকে একটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বা মনিটরিং পোস্ট হিসেবে ব্যবহার করতে। এখানে স্থাপিত নজরদারি যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তারা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সামরিক ঘাঁটি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং লোকাল মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। বেতার সংকেত (radio frequency), স্যাটেলাইট ফিড ও UAV (drone) surveillance সবই এই অঞ্চলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। এভাবে ভারত বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিরক্ষা কাঠামোর উপর গোপন অথচ কার্যকর দৃষ্টি স্থাপন করতে পারবে।

৩. RAW ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার গোপন অপারেশনাল ঘাঁটি: ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW এবং অন্যান্য সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সক্রিয় উপস্থিতি বজায় রেখেছে। এই প্রেক্ষাপটে ফেনী করিডোর একটি আদর্শ ‘ফরওয়ার্ড অপারেটিং বেস’ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। এখান থেকে সে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজাতীয় গোষ্ঠী, নিপীড়িত জনগোষ্ঠী বা চোরাচালান চক্রকে টার্গেট করে রিক্রুটমেন্ট ও সন্ত্রাসে প্ররোচনা দিতে পারে। এতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং বিভিন্ন এলাকায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে।

৪. পানি রাজনীতি: ২০১৯ সালে ভারতকে ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি ত্রিপুরার সাব্রুম শহরের জন্য উত্তোলনের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ। যদিও এটি একটি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ পানিবণ্টন’ হিসেবে প্রচার করা হয়। বাস্তবতা হলো, এ ধরনের চুক্তি ভারতের পানি আধিপত্য নীতির অংশ, যেখানে তারা নদীর উজানে বাঁধ ও পানি প্রত্যাহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পানি নির্ভরতায় ফেলছে। ফেনী নদীর নিয়ন্ত্রণ পেলে সে শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশে কৃত্রিম পানি সংকট, আর বর্ষায় প্লাবনের ঝুঁকি তৈরি করতে সক্ষম হবে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত চাইলে বাংলাদেশের ওপর পানি নিয়ন্ত্রণকে রাজনৈতিক চাপে রূপান্তর করতে পারে।
ফেনী করিডোর নিয়ে ভারতের আগ্রহ শুধুমাত্র ভৌগোলিক নিরাপত্তা বা সীমান্ত স্থিতিশীলতার প্রশ্ন নয়। এটি একটি গভীরতর কৌশলগত পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে ভারত সীমান্ত অঞ্চলে সামরিক আধিপত্য, গোয়েন্দা নিয়ন্ত্রণ ও পানি রাজনীতির সুবিধা একত্রে নিশ্চিত করতে চায়।
বাংলাদেশ যদি তাৎক্ষণিকভাবে এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি, নজরদারি ও কূটনৈতিক প্রতিরোধ নিশ্চিত না করে, তাহলে ভবিষ্যতে এই করিডোর থেকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক ভারসাম্যকে সরাসরি হুমকির মুখে পড়তে হতে পারে।

বাংলাদেশের করণীয় কী হতে পারে:

১. ভূমির উপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা: ফেনী নদীসংলগ্ন সংকীর্ণ সীমান্তভূমিতে বাংলাদেশকে ‘স্থায়ী ও দৃশ্যমান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা’ করতে হবে। এর আওতায় সেনাবাহিনীর একটি ফরোয়ার্ড কোম্পানি বা অন্তত প্লাটুন আকারের ঘাঁটি স্থাপন করা উচিত। এখানে নিয়োজিত বাহিনী শুধু প্রতিরক্ষা নয়, জাতীয় পতাকা ও সার্বভৌমত্বের স্থায়ী প্রতীক হিসেবে কাজ করবে।
সীমান্ত ফ্ল্যাগ টাওয়ার, টহলপথ এবং নদীর পাড়ে মোবাইল চেকপোস্ট ও বাংকার নির্মাণ করতে হবে, যাতে অনুপ্রবেশ প্রতিহত করা ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (BGB) এর সাথে সেনাবাহিনীর সমন্বিত টহল ইউনিট গঠন করে সাপ্তাহিক রোটেশন চালু করতে হবে। এই পদক্ষেপ সীমান্তে Physical and Psychological Presence নিশ্চিত করবে এবং ভারতের একতরফা কর্মকা-কে স্থল পর্যায়ে চ্যালেঞ্জ জানাবে।
২. গোয়েন্দা নজরদারির বিস্তার ও কার্যকর সমন্বয়: এই এলাকায় শুধু বাহ্যিক উপস্থিতি নয়, গভীর গোয়েন্দা উপস্থিতি (deep intel embedding) গঠন অপরিহার্য।

স্থানীয় জনগোষ্ঠী (বিশেষত কৃষক, মাঝি, সীমান্তবাসী) ও প্রশাসনের মাধ্যমে মানব গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক (HUMINT) গড়ে তুলতে হবে, যারা গোপনে ভারতীয় কর্মকা-, বাইরের আগমন বা সন্দেহজনক চলাচলের খবর সেনা বা ইএই-কে সরবরাহ করবে। ড্রোন, থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা, মোবাইল নজরদারি টাওয়ার দিয়ে নদীর গতিপথ, ভারতীয় সীমানা ও সন্দেহজনক স্থানে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালু করা। সেনাবাহিনীর অধীনে একটি ‘ফেনী করিডোর ইন্টেলিজেন্স সেল’ (FCIC) গঠন করে সেখানে ডিজিটাল মনিটরিং, সামাজিক মিডিয়া ট্র্যাকিং এবং স্থানীয় তথ্য বিশ্লেষণ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। এই গোয়েন্দা পরিকাঠামো ভারতের RAW ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংগঠনের সম্ভাব্য তৎপরতা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
৩. অবকাঠামো উন্নয়ন ও পরিবহন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ: সীমান্ত সুরক্ষা শুধু বাহিনী মোতায়েন নয়, বরং প্রতিরক্ষা উপযোগী অবকাঠামো গড়ে তোলাও অপরিহার্য। নদীর পাশে আধুনিক কাঁচা-পাকা সড়ক, সেতু এবং জরুরি রুট তৈরি করতে হবে, যাতে যুদ্ধকালীন বা দুর্যোগকালে দ্রুত বাহিনী মোতায়েন ও লোকজন স্থানান্তর করা যায়।

স্থায়ী হেলিপ্যাড, মোবাইল মেডিকেল ইউনিট এবং জ্বালানি/রসদ সরবরাহ কেন্দ্র তৈরি করতে হবে, যা যুদ্ধকালীন জরুরি প্রয়োজন মেটাতে পারবে। স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র (border crisis shelter) গড়ে তোলা যেতে পারে, যাতে চরম উত্তেজনার সময়েও শান্তিপূর্ণ সরে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
৪. কূটনৈতিক প্রতিবাদ ও আন্তর্জাতিক অবস্থান গ্রহণ: একতরফাভাবে ভারতের নির্মাণকাজ ও উপস্থিতি বৃদ্ধি আন্তর্জাতিক আইন এবং দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত সম্মতির লঙ্ঘন। তাই, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদপত্র দেওয়া উচিত; দুই দেশের সীমান্ত রক্ষা সমন্বয় কমিটির নিয়মিত বৈঠকে এই বিষয়গুলো তোলা উচিত, যাতে পরবর্তীতে অজুহাত দেওয়া না যায়। জাতিসংঘের Border Conflict Prevention Framework ও SAARC আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংলাপ ফোরামে বিষয়টি উপস্থাপন করে আন্তর্জাতিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য চায় এমন রাষ্ট্রগুলোর (যেমন চীন, মালয়েশিয়া, তুরস্ক) সঙ্গে এই ইস্যুতে স্ট্র্যাটেজিক আলোচনার সুযোগ তৈরি করতে হবে।

ভারতের ক্রমাগত আগ্রাসী কৌশল, একতরফা প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং গোয়েন্দা তৎপরতা এই অঞ্চলটিকে এক নতুন হুমকিতে ফেলেছে। অতএব, এই জমির উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে এখনই দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে এর মূল্য হতে পারে ভয়াবহ।

লেখক: নিরাপত্তা বিশ্লেষক।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews