উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। প্রত্যাবাসনে বিরোধিতা করে রোহিঙ্গাদের আতঙ্কে রাখতে আরসা সন্ত্রাসীরা বারবার এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে ক্যাম্পে। তবে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার আগে ওই সব কক্ষের রোহিঙ্গাদের আগেভাগে আগুন সন্ত্রাসের খবর জানিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। যার কারণে রোহিঙ্গারা কখনো এই আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয় না। এমনকি তাদের কাপড়-চোপড় আসবাবপত্রেরও ক্ষতি হয় না। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করে নিয়ন্ত্রণে এনেছে আগুন।

শুক্রবার ভোরে ১৩নং তানজিমারখোলা ক্যাম্পে ও বেলা ১১টার দিকে ১৩নং ক্যাম্পের কাঁঠাল গাছতলা বাজারে রোহিঙ্গাদের আগুন লাগানোর কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তখন তারা তাদের মালামাল ও শিশু-মহিলাদের সরিয়ে নেয়। ঠিক বেলা ১১টায়  অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটে। উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে (ক্যাম্প-১৩) দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। শুক্রবার দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করে। উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে সহসা ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নিলে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের তরফ থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার নেমে আসে। নাশকতা সৃষ্টি করতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে রোহিঙ্গাদের শেড। ইতোপূর্বে অন্তত ৭বার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগানো হয়েছে। গত বছর রোহিঙ্গারা যে জারিকেন থেকে জ্বলন্ত আগুনে পেট্রোল ঢালছে- এ ধরনের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তার পরও একাধিক এনজিও কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে তা বেশি দূর এগোয়নি। রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসার ক্যাডাররা এসব নাশকতা সৃষ্টি করছে বিভিন্ন ক্যাম্পে। অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে দোকানপাটসহ রোহিঙ্গাদের শতাধিক কক্ষ। তবে  পোড়েনি তাদের কাপড়-চোপড়। অগ্নিদগ্ধ হয়নি কোনো রোহিঙ্গা। মারা যায়নি নারী-শিশু। এমনকি হতাহতও হয়য়নি কেউ। অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, বেলা সাড়ে ১১টায় উখিয়ার ১৩ নম্বর তানজিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁঠাল গাছতলা বাজারে হঠাৎ আগুনে লাগে। এরপর মুহূর্তেই তা বাজারের অন্য দোকানপাটসহ আশপাশে ক্যাম্পের কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাৎক্ষণিক উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হলে প্রথমে তাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে স্টেশনটির আরও একটি আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছে। অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আরও বলেন, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে কক্সবাজার ও টেকনাফ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে খবর দেওয়া হয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার থেকে তিনটি এবং টেকনাফ থেকে দুইটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। কিন্তু তার আগেই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আগুন লাগার ঘটনায় আশ্রয় কক্ষ ও দোকানপাটসহ শতাধিক স্থাপনা সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ থেকে ৩০টির বেশি কক্ষ ও অন্যান্য স্থাপনা। তবে এখনো আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা খতিয়ে দেখতে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে। আগুন লাগার কেউ হতাহত হয়েছে কি না এ ব্যাপারে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews