ভারতের তামিলনাড়ুর ২ বছরের শিশু আদাভি পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তার বাবা-মা, দিনেশ এসপি এবং জানগা নন্ধিনী, তাদের মেয়ের জীবনকালীন কার্বন নিঃসরণের ভারসাম্য সম্পূর্ণভাবে ঠিক রাখতে ৬,০০০ ফলজ গাছ রোপণ করেছেন। এই উদ্যোগের জন্য আদাভি এশিয়া বুক অব রেকর্ডস থেকে "বিশ্বের প্রথম কার্বন-নিরপেক্ষ শিশু" হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
একজন ভারতীয় গড়ে বছরে ২ টন কার্বন নিঃসরণ করেন। কিন্তু আদাভির বাবা-মা তার জীবনকালীন কার্বন নিঃসরণের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ৬,০০০ ফলজ গাছ রোপণ করেছেন। তাদের এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল আদাভি জন্মানোর আগেই। তারা তামিলনাড়ুর কৃষকদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে গাছগুলো রোপণ করেন, যা আদাভির সঙ্গে বড় হবে এবং তার কার্বন ফুটপ্রিন্ট শোষণ করবে।
এই উদ্যোগ যাতে থেমে না থাকে সেজন্য আদাভির বাবা-মা আরও বড় লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে গেছেন। তারা প্রতিষ্ঠা করেছেন সীরাখু নামে একটি এনজিও। এর লক্ষ্য হলো ভারতকে কার্বন-নিরপেক্ষ দেশে রূপান্তরিত করা। এই সংস্থা গাছ রোপণের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণে ভারসাম্য তৈরি করার পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে। মাত্র দুই বছরের মধ্যে সীরাখু ৪ লাখ গাছ রোপণ করেছে। এই উদ্যোগ বনায়নের পুনর্জন্ম ঘটিয়ে এবং অন্যান্যদের অনুপ্রাণিত করে পরিবেশ রক্ষায় বড় ভূমিকা পালন করছে।
দিনেশ ও জানগা নন্ধিনীর এই উদ্যোগ একটি উদাহরণ তৈরি করেছে যে ব্যক্তিগত কর্মপ্রচেষ্টা কীভাবে বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে। তাদের গাছ রোপণের কার্যক্রম বায়োডাইভার্সিটি রক্ষা করে, বায়ুর মান উন্নত করে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে।
এই ছোট পর্যায়ের প্রচেষ্টা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরও বৃহৎ উদ্যোগের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। আদাভির বাবা-মার এই উদ্যোগ প্রমাণ করে সঠিক পরিকল্পনা এবং দায়িত্বশীল উদ্যোগ বিশ্বকে আরও টেকসই করে তুলতে পারে।
আদাভির গল্প শুধু একটি শিশুর কার্বন নিঃসরণে ভারসাম্য তৈরি করার নয়, বরং একটি পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা দেয়।