রিলস বা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও একবার দেখা শুরু করলে সময় কোন দিক দিয়ে শেষ হয়ে যায় বোঝায় যায় না। ফেসবুক, ইউটিউব থেকে শুরু করে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম- প্রতিটি মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন নামে আধিপত্য বিস্তার করে আছে ছোট ছোট ভিডিও। এগুলো একবার দেখতে শুরু করলে আসক্তি তৈরি হয়। ফলে সহসা দেখা বন্ধ করা বেশ মুশকিল হয়ে পড়ে। অনেকে আবার রাতে ঘুমানোর আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বুঁদ হয়ে থাকেন রিলসে।

ফেসবুকে একটি রিলের দৈর্ঘ্য হতে পারে সর্বোচ্চ তিন মিনিট। ইনস্টাগ্রামে ৯০ সেকেন্ড। ইউটিউবের একেকটি শর্টস অবশ্য এক মিনিটের বেশি নয়। এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিওগুলোর প্রতি আসক্তি নানা ধরনের বিপদ ডেকে আনছে আমাদের জীবনে। সেগুলো কী কী জেনে নিন।

  1. রাতে ঘুমানোর আগে টানা রিলস দেখলে হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে তরুণ ও মধ্যবয়সীদের এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন বয়সের ৪ হাজার ৩১৮ জনের ওপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে এই ফলাফল।
  2. ঈর্ষাকাতর মানুষের রিল বা শর্টসে আসক্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। অনেক সময় তারা নেতিবাচক আবেগ থেকে মনকে ভুলিয়ে রাখতে কিংবা অন্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করতে বারবার শর্টসের কাছে ফিরে যান।
  3. স্মার্টফোনে সীমাহীন স্ক্রলিং আর অনুভূতি ভোঁতা করে দেওয়া কনটেন্টের প্লাবন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে অক্সফোর্ড বর্ষসেরা শব্দ নির্বাচিত হয়েছে ‘ব্রেন রট’, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘মস্তিষ্কে পচন।’ ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিলস দেখার অর্থ আপনি সম্ভবত ‘ব্রেন রট’-এ আক্রান্ত। 
  4. শর্টস বা রিলসে আসক্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়- এমনটা বলছে গবেষণা। বিশেষ করে মস্তিষ্কের যে অংশগুলো আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে, সেই অংশে। তার মানে এই নয় যে শর্টস বা রিল আমাদের মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে; বরং এই অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে।
  5. দীর্ঘক্ষণ রিলস দেখার সময় শরীরের সিম্পেথেটিক নার্ভাস সিস্টেম আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে ভিডিও দেখার সময় হৃৎস্পন্দন তুলনামূলক বেড়ে যায়। টানা একই কাজ করলে এর প্রভাব হতে পারে ভয়াবহ।
  6. রাতে ঘুমানোর আগে রিলসে নিয়ে পড়ে থাকলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এটি দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এছাড়া ঘুম কম হওয়ার কারণে অবসাদ, ক্লান্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে। 
  7. যেসব রিল বা শর্টসে দৃশ্য দ্রুত পরিবর্তন হয় বা যা আমাদের আবেগকে নাড়া দেয়, সেগুলো মস্তিষ্ককে একরকম ‘পুরস্কৃত’ করে। একে বলা যেতে পারে মস্তিষ্কের ‘রিওয়ার্ড সিস্টেম’। মস্তিষ্ক যদি এ ধরনের উদ্দীপনায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সে এ রকম ‘পুরস্কার’ আরও চাইতে শুরু করে। ফলে ভিডিও দেখার আসক্তি বাড়ে।
  8. রিলসের প্রতি আসক্তি তৈরি হলে কমে যেতে পারে মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা। মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ছোট ভিডিও ও খণ্ডিত তথ্যের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারে। এর ফলে দীর্ঘ ও জটিল বিষয়ে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হতে পারে।
  9. আমাদের মস্তিষ্কের ‘প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স’ অংশটি পরিকল্পনা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ছোট ভিডিও বেশি দেখলে এই অংশের কার্যক্ষমতা কমতে পারে, ফলে ভিডিও দেখা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়। ফলে পরিকল্পনা করা কঠিন বলে মনে হয়।
  10. রিলস দেখার অভ্যাস নেতিবাচক আবেগ আরও বাড়িয়ে দেয়। 


তথ্যসূত্র: এমএসএন, ডেভ ইউএ ও এনসিবিআই



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews