সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ পাইয়ে দিতে সভরেন (রাষ্ট্রীয়) গ্যারান্টি অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ অনুমোদনের ফলে এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ পেতে আইসিবির কোনো সমস্যা থাকবে না। ঋণ পেলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার সক্ষমতা বাড়বে প্রতিষ্ঠানটির। আইসিবি জানিয়েছে, সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে নেওয়া ঋণের কিছু অংশও এখান থেকে পরিশোধ করবে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ পেতে গত ১৪ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি চেয়ে আইসিবি চিঠি দিয়েছিল। গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আইসিবির কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে এফআইডি। বৈঠকে জানানো হয়, ঋণ পেতে আবেদন করলে সরকারের গ্যারান্টি সাপেক্ষে দিতে আপত্তি নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা থাকায় বৈঠক থেকে অর্থ বিভাগকে রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হলে অর্থ উপদেষ্টা সম্মতি দিয়েছেন। আইসিবিকে ঋণ দিলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যর্থতায় সরকার ঋণ পরিশোধ করবে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে বড় দর পতন হলে পুরো পরিস্থিতি বুঝতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে সংস্থাটির কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করেছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ওই বৈঠকে শেয়ারবাজারের ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধনি মুনাফায় করহার কমানোর এবং আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা প্রদানসহ বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছিল।
বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেয়ারবাজার সংকটে কিছু প্রণোদনা দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন অর্থ উপদেষ্টা। এর পরই পতনের ধারা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে শেয়ারবাজার। গত সোমবার ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধনি মুনাফায় করহার ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর দুই দিন পর এফআইডি জানাল, আইসিবিকে ঋণ পেতে গ্যারান্টি প্রদানে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সাকল্যে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৪৬৬ পয়েন্ট বৃদ্ধির পর গতকাল কিছুটা (প্রায় ১৮ পয়েন্ট) কমেছে। লেনদেন হওয়া ২১ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে ৭০ শতাংশ দর হারিয়েছে।