বৃহস্পতিবার থেকে নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সপ্তম আসর। সর্বশেষ আসর হয়েছে নেপালেই, ২০২২ সালে। ওই আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ, যা তাদের ফুটবল ইতিহাসেরই সর্বোচ্চ অর্জন। ফলে বাংলার লাল-সবুজ বাঘিনীদের জন্য এবার আসর হচ্ছে শিরোপা অক্ষুণœ রাখার মিশন। আর এই লক্ষ্য নিয়েই মঙ্গলবার তারা বিমানযোগে পৌঁছেছে হিমালয়ের দেশে। সেখানে তাদের জানানো হয়েছে উষ্ণ অভ্যর্থনা।
কঠিন হলেও দেশ ছাড়ার আগে ট্রফি ধরে রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মনিকা-ঋতুপর্ণারা। মুকুট ধরে রাখার অভিযান বাংলাদেশ শুরু করবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে। ২০২২ সালের আসরে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সাবিনা-কৃষ্ণারা।
এবার কি হবে সেটা বলা মুশকিল! অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার মনে হয় গত সাফের পর পাকিস্তানও কয়েকটা ম্যাচ খেলেছে। এরপর যতটুকু জানি, তারা ক্যাম্পে ছিল না, অনুশীলনে ছিল না, তাদের ক্যাম্প সম্ভবত দুই-তিন সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছে। আমার মনে হয় না যে, পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো অঘটন ঘটবে। আমার মনে হয়, এই জায়গাতে মেয়েরা অবশ্যই সজাগ থাকবে যে প্রথম ম্যাচটাতে যেন কোনো অঘটন না ঘটে।’
গ্রুপে (এ) বাংলাদেশের আরেক প্রতিপক্ষ ভারত। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা গতবার বিদায় নিয়েছিল সেমিফাইনাল থেকে, নেপালের কাছে হেরে। টুর্নামেন্টের সফলতম দল ভারত ও গত আসরের রানার্সআপ নেপালকে এবার শিরোপার দাবিদার মানছেন সাবিনা।
কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাতেই উষ্ণ অভ্যর্থনা পান বাংলাদেশ নারী ফুটবলাররা। কাঠমান্ডু নামার পর অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ দলের সবার গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দেন। মাথায় পরিয়ে দেওয়া হয় নেপালের ঐতিহ্যবাহী টুপি। বাংলাদেশের ফুটবলাররা সেই উত্তরীয় গায়ে জড়িয়ে ফটোসেশন করেন।
নেপালের বর্তমান আবহাওয়া স্বাভাবিকই আছে। যদিও বাংলাদেশ দল মাঠে অনুশীলন করেনি মঙ্গলবার। তবে এদিন হোটেলে সাঁতারের মাধ্যমে রিকভারি সেশন করে।
এবার বাংলার বাঘিনীদের শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দলে নেই গত সাফজয়ী আসরের স্বপ্না, আঁখিসহ আট ফুটবলার। তার ওপর গত আসরের ফাইনালের জোড়া গোল করা কৃষ্ণা চোট কাটিয়ে দলে ফিরলেও পুরো ফিট নন। সবচেয়ে বড় ঘাটতি হচ্ছেÑ দলটি কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারেনি বাইরের কোনো দেশের সঙ্গে।
তার ওপর নেই গত আসরের কিংবদন্তিতুল্য কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তারপরও বেঙ্গল টাইগ্রেস বাহিনীরা সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ নিতে দৃঢ়প্রত্যয়ী। এখন দেখার বিষয়, শেষ পর্যন্ত হিমালয়ের দেশে বঙ্গকন্যারা তাদের মিশন সফল করতে পারে কি না।