জম্মু-কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পর গত পাঁচ বছরে বিজেপি ভেবে এসেছে, কী করে এই এলাকাকে তাদের দখলে আনা যায়। সেই লক্ষ্যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ ও রাজ্য দ্বিখণ্ডীকরণের পর তারা বিধানসভা ও লোকসভা কেন্দ্রগুলোর সীমানা পুনর্নির্ধারণের (ডিলিমিটেশন) কাজে হাত দেয়। ডিলিমিটেশন কমিশন গঠন করে কেন্দ্রগুলোর বিভাজন এমনভাবে করানো হয়, যাতে হিন্দু অধ্যুষিত জম্মুর আসন মুসলমান অধ্যুষিত কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় বেশি বাড়ে। কমিশন জম্মুর আসন ৩৭ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ করে, উপত্যকার আসন ৪৬ থেকে বাড়িয়ে ৪৭। ফলে হলো কী, জম্মুর ১০ জেলার তুলনায় উপত্যকার ১০ জেলার আসনের ব্যবধান আগে যেখানে ছিল ৯, এখন তা কমে হলো ৪।

দ্বিতীয়ত, এটুকু করে ক্ষান্ত না থেকে কেন্দ্রগুলোর সীমানা এমনভাবে তৈরি করা হলো, যাতে জম্মুর হিন্দু অধ্যুষিত অঞ্চলে উপত্যকার মুসলমান অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলোর কিছুটা ঢুকে যায়। উদ্দেশ্য, হিন্দুপ্রধান কেন্দ্রগুলোয় জেতা-হারার ক্ষেত্রে মুসলমান ভোটারের প্রভাব কমানো। এটা করার ফলে বিজেপি মনে করছে, জম্মুতে এনসি ও কংগ্রেসের যে প্রভাব এতকাল ছিল, যার জন্য ওই দুই দল আসনও পেত, তা খর্ব করা যাবে।

এই অঙ্কের পাশাপাশি বিজেপি নজর দেয় উপত্যকায় মুসলমানদের মধ্যে এনসি, কংগ্রেস ও পিডিপির প্রভাব কমাতে। সেই লক্ষ্যে তারা গড়ে তোলে ওই দলগুলোর বিক্ষুব্ধদের মদদ দিয়ে আলাদা দল গড়তে। সেইভাবে গড়ে ওঠে পিডিপির সাবেক নেতা ও মন্ত্রী আলতাফ বুখারির ‘আপনি পার্টি’ও কংগ্রেসের দলত্যাগী নেতা গুলাম নবী আজাদের ‘আজাদ পার্টি’। কিন্তু লোকসভা ভোটে তাঁরা হতাশ করেন। ফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নজর দেন একসময়ের দেশদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে চিহ্নিত জামায়াতে ইসলামির (জেআই) ওপর।

শাহ চেয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ওই সংগঠন ভোটে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সংবিধানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে। জামায়াত নেতারা রাজিও ছিলেন। দিল্লিতে চারবার বৈঠকও হয়। কিন্তু আরএসএসের তীব্র আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারকে পিছিয়ে আসতে হয়।

জামায়াতে ইসলামি এবং তাদের মতো আরও কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবারের ভোটে স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন। বিজেপি তাঁদের পরোক্ষে মদদও দিচ্ছে। এতেও পুরোনো বিজেপি নেতারা ক্ষুব্ধ। তাঁরা মনে করছেন, এই নীতি দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে ক্ষতিকর।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews