তৌকীর আহমেদ। নন্দিত অভিনেতা, চিত্রপরিচালক ও নাট্য নির্দেশক। সম্প্রতি তিনি শেষ করেছেন তার পরিচালনায় নির্মিত চলচ্চিত্র 'স্ম্ফুলিঙ্গ'র দৃশ্যধারণ। নতুন এই ছবি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
মাত্র ২৩ দিনে নতুন ছবির কাজ শেষ করলেন?
মাত্র ২৩ দিন বলাটা ভুল। 'স্ম্ফুলিঙ্গ'র ড্রামা অংশের দৃশ্যধারণ শেষ। এখন বাকি গানের কাজ। গান আর কিছু প্যাচওয়ার্ক করতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। আশা করছি খুব শিগগিরই কাজগুলো শেষ করতে পারব।
'স্ম্ফুলিঙ্গ' ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন হলো?
১১ ডিসেম্বর থেকে গাজীপুরে অবস্থিত আমার রিসোর্ট 'নক্ষত্রবাড়ি'তে একটি সেট তৈরি করে ছবিটির নির্মাণকাজ শুরু করি। একটানা ২৩ দিনের এ জার্নিতে কাজের মধ্যেই ডুবে থাকতে হয়েছে। কীভাবে ছবিটি আরও ভালো করে দর্শকের সামনে নিয়ে আসা যায়, সে চেষ্টাই করেছি। বরাবরের মতো আমার ইউনিটের সবাই আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন।
ছবিটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?
সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে সবার আগে মাথায় থাকে ভালো কিছু করার। আমি সবসময় চেষ্টা করি সময়ের সবচেয়ে ভালোটা দিতে। 'স্ম্ফুলিঙ্গ'তেও তাই করেছি।
বরাবরই আপনার ছবিতে শিল্পী নির্বাচনে চমক থাকে, যা এবারেও ছিল। সিনেমায় শিল্পী নির্বাচনে আপনি কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য দেন?
তারকা নয়, যারা অভিনয়ে সিদ্ধহস্ত তাদের নিয়েই কাজ করতে ভালোবাসি, যা আপনি আমার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন। সেই ধারাবাহিকতায় এই ছবিতে যারা অভিনয় করেছেন তারা প্রত্যেকেই অভিনয়ে পরিণত। শুটিংয়েও তার প্রমাণ দিয়েছেন তারা। সবাই বেশ ভালো করেছেন। প্রত্যেকেই তাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
সিনেমায় গুণগতমান নাকি জনপ্রিয়তা। কোনটি প্রাধান্য দেওয়া উচিত?
আমি সবসময় গুণগতমানকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। কেননা, জনপ্রিয়তা প্রায়ই সস্তা হয়। ভালো জিনিস জনপ্রিয় হলে আমার কোনো সমস্যা নেই। জনপ্রিয়তার জন্য সস্তা জিনিসের পক্ষপাতী আমি নই। শুধু সিনেমা নয়, যেকোনো কাজের গুণগতমান যদি ঠিক থাকে তাহলে সেটা টিকে থাকবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের মনে থাকবে, ভালো না হলে হারিয়ে যাবে।
আপনার আগের ছবিগুলোর মতো এই ছবিও কি আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত হবে?
দেখুন, একজন নির্মাতা কিন্তু শুধু উৎসবে বা বিভিন্ন পুরস্কারের জন্য সিনেমা নির্মাণ করেন না। আমিও করি না। একটি সিনেমা যখন নির্মাণ করি, তার শুরু থেকেই একটি গল্প দর্শকদের দেখানোর চেষ্টা করি। আমি উৎসবের জন্য নয়, সিনেমা বানাই সাধারণ মানুষের জন্য। তবে এ দেশের ছবিকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করানোও জরুরি। সেখানে আমাদের ছবি যদি বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসব বা বিভিন্ন দেশে প্রদর্শিত হয়, তাহলে কিন্তু আমাদের দেশেরই নাম হয়। দেশের সংস্কৃতি বহির্বিশ্বের মানুষেরা জানতে পারেন। তাই বলতে পারি যেকোনো উৎসবে আমাদের ছবি যাওয়া মানে দেশকেই পরিচিত করা। আমার এই ছবি যদি তেমন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য আমন্ত্রণ পায়, তাহলে অবশ্যই যাবে।
এবার পরিবারের কথা বলুন। শুনলাম স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা মিলে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হচ্ছেন?
বিষয়টি যেভাবে বলা হচ্ছে মোটেও তা নয়। ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। তারা আমেরিকার একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছে। যেহেতু তাদের সেখানে থাকতে হবে। তাই মা হিসেবে বিপাশা বেশিরভাগ সময় ওদের পাশে থাকবে। সময়-সুযোগ করে আমিও যাব। কিন্তু ব্যাপারটি এমন নয় যে, দেশ ছেড়ে দিয়ে চিরতরে আমেরিকায় চলে যাচ্ছি।