অকারণে ক্লান্তি, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা ক্ষুধামান্দ্য—এসব ছোট ছোট উপসর্গ হয়তো বড় কোনো সমস্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো হতে পারে লিভার টিউমারের প্রাথমিক সংকেত। শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার, যা বিষাক্ত পদার্থ পরিশোধন, হজমে সহায়তা ও শক্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই অঙ্গেই যদি টিউমার গঠিত হয়, তবে সেটা শুরুতে নীরব হলেও দ্রুত ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
পুনের হেপাটোলজিস্ট ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট বিশেষজ্ঞ ডা. পবন হাঞ্চানালে জানান, “অনেক রোগী দেরি করে বুঝতে পারেন, কারণ উপসর্গগুলো শুরুতে খুব সাধারণ মনে হয়।” তাই প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিনে রাখা এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু করাই পারে জীবন বাঁচাতে।
উপর ডানদিকে পেটব্যথা: একটানা ব্যথা বা অস্বস্তি টিউমারের জন্য লিভার বা আশেপাশের অঙ্গচাপে হতে পারে।
অকারণে ওজন কমে যাওয়া: ৬ মাসে ৫–১০% ওজন কমে গেলে অবিলম্বে পরীক্ষা করানো জরুরি।
ক্ষুধামান্দ্য বা অল্প খেলেই পেট ভরে যাওয়া: টিউমার পাকস্থলীতে চাপ সৃষ্টি করলে এমন হতে পারে।
চিরস্থায়ী ক্লান্তি: লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে শক্তির ঘাটতি হয়, ফলে সারাদিন ক্লান্ত লাগে।
বমিভাব ও বমি: হজমজনিত সমস্যা ও মস্তিষ্কে বিষাক্ত পদার্থ পৌঁছানোর কারণে এমনটা ঘটে।
চোখ ও ত্বক হলুদ হওয়া (জন্ডিস): লিভার বিলিরুবিন প্রসেস করতে না পারলে এমন হয়।
পেট ফুলে যাওয়া: লিভার কার্যকারিতা কমে গেলে পেটে ফ্লুইড জমে ‘অ্যাসাইটিস’ হতে পারে।
অকারণে জ্বর: নিম্নমাত্রার জ্বর শরীরের প্রতিরক্ষা প্রতিক্রিয়ায় হতে পারে।
ত্বকে চুলকানি: লিভার যদি বাইল সল্ট ঠিকমতো ফিল্টার না করে, তাহলে তা রক্তে জমে চুলকানি সৃষ্টি করে।
পেটের ডান পাশে গাঁট বা গঠন: বড় টিউমার হলে সেটি হাতেও অনুভব করা যেতে পারে।
ডা. হাঞ্চানালের পরামর্শ:
হেপাটাইটিস বি’র ভ্যাকসিন নিন
অ্যালকোহল সেবন কমান
ধূমপান ত্যাগ করুন
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
যদি ঝুঁকিপূর্ণ হন, তাহলে প্রতি ৬ মাসে একবার লিভার পরীক্ষা করান
তিনি বলেন, “প্রতিরোধই সেরা চিকিৎসা। যত দ্রুত টিউমার ধরা পড়ে, ততই ভালো ফল পাওয়া যায়।”