দেশের শিল্পকারখানা ও কোম্পানিতে গঠিত ট্রেড ইউনিয়নগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। সারা দেশের জন্য একটি শ্রম আইন হবে। এ আইনে শ্রমিকের অধিকার সম্পর্কে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সারা দেশের সব কারখানাতেই ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

শ্রম খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান, বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। দেশের কারখানাগুলোয় শ্রম অসন্তোষ অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকেও শ্রম আইন পরিবর্তনসহ বিশেষায়িত অঞ্চলের শিল্পকারখানাগুলোয় ট্রেড ইউনিয়ন করার বিষয়ে তাগিদ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ শ্রমিকের কোনো অধিকার নাই। তাদের ন্যূনতম মজুরি নাই, কোনো আইনি

সুরক্ষাও নাই।’ তিনি বলেন, ‘দেশে যে ট্রেড ইউনিয়ন আছে, সেগুলো রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে প্রকৃত শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে না। আমরা যে সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন হবে স্বাধীন, দায়িত্বশীল ও রাজনৈতিক অধিকারসচেতন। তবে দলীয় রাজনীতিসম্পৃক্ত লেজুড়ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়নের সুযোগ থাকবে না। এ সংস্কার উদ্যোগে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরিকাঠামো, সামাজিক নিরাপত্তা, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং বৈষম্যমুক্ত জীবিকা নির্বাহে পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ শ্রম খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরিতে সবচেয়ে দুর্বলতা হলো বৈষম্য। আমরা যে বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্রের কথা বলছি, তার জন্য সবার আগে শ্রমিকের জন্য বৈষম্যহীন পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এজন্য শ্রমিক-মালিক উন্নত সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। এটি শুধু কাগুজে সম্পর্ক নয়, একটি আইনি কাঠামোর মাধ্যমে এ সম্পর্কের মর্যাদা নির্ধারণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিকের অধিকার ও তাদের মজুরির অধিকারের কথা রয়েছে। জাতিসংঘ এবং আইএলওর কনভেনশনেও অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক মানদ , দেশের সংবিধান, জন আকাক্সক্ষা, শিল্পের অবস্থান এবং বাস্তবতা বিবেচনা করে সংস্কারের সুপারিশ করা হবে। মূলত দুই ধরনের সুপারিশ থাকবে। কিছু সুপারিশ তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নের জন্য আর কিছু সুপারিশ থাকবে দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য।’ যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন শ্রম খাতের সংস্কারে জোর দিয়ে আসছে। রানা প্লাজা ধসের পর থেকে তারা বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেয়, যার মধ্যে শ্রম আইন সংস্কার করে ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা জোরদারের শর্ত রয়েছে। এ ছাড়া বিশেষায়িত অর্থনৈতি অঞ্চল ইপিজেড, বেপজা, বেজায় অবস্থিত কারখানাগুলোয় ট্রেড ইউনিয়নের সুবিধা চাইলেও সরকার তা বাস্তবায়ন না করে কর্মরত শ্রমিকদের ‘কল্যাণমূলক’ সংগঠনের সুযোগ দিতে সম্মত হয়েছে। এ বিষয়ে সংস্কার কমিশনের প্রধান জানান, ‘দেশে একক শ্রম আইন থাকবে। বিশেষ বিশেষ অঞ্চলের জন্য পৃথক কোনো শ্রম আইনের সুপারিশ থাকবে না।’



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews