চীনে পর্বত আরোহণের সঙ্গী ভাড়া করার বিষয়টি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নতুন এই পেশা স্থানীয়ভাবে ‘পেই পা’ নামে পরিচিত। এই পেশায় তরুণরা অর্থের বিনিময়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে পর্বতে আরোহণ করেন। বিশেষত এক্ষেত্রে অভিজ্ঞরা বেশি আয় করছেন।
২৫ বছর বয়সী ওয়েন্ডি চেন পর্বত আরোহণে সঙ্গী খুঁজছিলেন। পরে তিনি মাউন্ট তাইয়ে আরোহণের জন্য একজন পেই পা ভাড়া করেন। তার সেই সঙ্গী চেন-এর ব্যাগ বহন করেন। তিনি একটি কম ঝুঁকিপূর্ণ রুটও ঠিক করে নেন। পর্বতের শীর্ষে পৌঁছে সূর্যোদয়ের মুহূর্তটি উপভোগ করতে জাতীয় পতাকা ও ছবি তোলার সরঞ্জাম নিয়েও প্রস্তুত ছিলেন সেই পেই পা। আর এজন্য চেনকে খরচ করতে হয় ৪৯ ডলার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, সাবেক সামরিক কর্মী, কিংবা অন্যান্য তরুণরা পেই পা হিসেবে কাজ করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা নিজেদের উচ্চতা, ফিটনেস ও অভিজ্ঞতার বিবরণ দিয়ে প্রোফাইল তৈরি করেন। প্রতিটি পর্বত আরোহণের জন্য তারা ৩০ থেকে ৮৫ ডলার পর্যন্ত নেন। তাদের সেবার মধ্যে থাকে গল্প বলা, গান গাওয়া, ব্যাগ বহন, ক্লান্তি দূর করার অনুপ্রেরণা দেওয়া, এমনকি হাত ধরে টেনে তোলাও।
এই পেশা শুধু পর্যটকদের সুবিধাই দিচ্ছে তা নয়, বরং তরুণদের জন্য একটি অভিনব বিকল্প উপার্জন উৎসও তৈরি করেছে। ২০ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ক্রিস ঝাং এ পেশায় তিন মাসে ২ হাজার ৮০০ ডলার আয় করেছেন। এ অর্থ তার সহপাঠীদের অনেকের তুলনায় অনেক বেশি।
অন্যদিকে, চেন উডি নামের একজন পেশাদার পেই পা মাসেই প্রায় ২ হাজার ৮০০ ডলার আয় করছেন এবং দিনে একাধিকবার পর্বতে চড়ছেন। তবে এই কাজ শারীরিকভাবে অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। এজন্য তারা এটিকে দীর্ঘমেয়াদি পেশা হিসেবে দেখছেন না।
এছাড়া এই শিল্পে নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পেই পা সেবা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত নয়, যা তরুণ নারীদের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এ ছাড়া পরীক্ষিত নয় এমন গাইডদের কারণে শৌখিন পর্বতারোহীদের বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবুও চীনে উচ্চ বেকারত্বের সময়ে পেই পা’রা তাদের স্বল্পমেয়াদি প্রয়োজন পূরণে এই পেশাকে কাজে লাগাচ্ছেন। অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোর সুযোগ তাদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা দিচ্ছে। তথ্যসূত্র: সিএনএন।