ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান কিংবা আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর বা ইফেসাসে আর্টোমিসের মন্দিরকে পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য মনে করা হয়। তবে অষ্টম আশ্চর্য নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জলকন্যা কেটি লেডেকির কাছে অলিম্পিকের অষ্টম স্বর্ণ জেতাই যেন হবে অষ্টম আশ্চর্য। সাতটি স্বর্ণ, তিনটি রৌপ্য জেতা এই সাঁতারু চোখ এখন আট নম্বর স্বর্ণ পদকে। ২৬ জুলাই শুরু হতে যাওয়া প্যারিস অলিম্পিকই তাঁর সেই বাসনা পূরণ করতে পারে।
২০১২ সালটা লেডেকির জন্য ছিল স্পেশাল। সেই সময় লন্ডনে সামার অলিম্পিকে এক তরুণীর ঝলক দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শকরা। ৮০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে অন্যদের পেছনে ফেলে জিতে নেন স্বর্ণপদক। এর পর আর পেছনে ফিরতে হয়নি। অলিম্পিক ছাড়াও ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে দেখান চমক। ২০১৩ সালের ওই প্রতিযোগিতার চারটি ভিন্ন ইভেন্টে স্বর্ণ জিতে নেন লেডেকি। যেখানে ৪০০, ৮০০ ও ১৫০০ মিটারের ফ্রি স্টাইলের পাশাপাশি ৪/২০০ মিটারেও শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরেন। তাও আবার রেকর্ড গড়ে। তাঁর এমন সফলতায় অন্য প্রতিযোগীরাও ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েন।
কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, লেডেকি নাকি কালা জাদু জানেন। যেটা রীতিমতো হইচই ফেলে দেয়। এর পর এক এক করে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর নামডাক। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে পুল কাঁপান লেডেকি। পাঁচটি ভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে একটিকে দ্বিতীয় হলেও বাকি চারটিতে জিতে নেন স্বর্ণপদক। এবার প্যারিসে সৌরভ ছড়ানোর পালা। লেডেকির বয়সটাও কম হয়নি। ২৭ পেরিয়ে যাচ্ছেন এই আমেরিকান। তবু কমেনি তাঁর জয়ের ক্ষুধা। আরও একবার স্বর্ণের মেডেলটা গলায় ঝোলাতে চান, ‘দেখুন এখন তো আর আগের মতো এটাকে (পদক) আমি স্বপ্ন হিসেবে দেখি না। তবে স্বর্ণপদক জেতার আশাটা কমেনি। এটা সব সময়ই থাকে। যতদিন খেলব, চেষ্টা থাকবে সেরা খেলাটাই খেলার। এবারও সেই চেষ্টাটাই করব।’
কেউ একটা স্বর্ণ পেলেই তুষ্ট, আবার কেউ সাতটা পেয়েও আরও চান। লেডেকির বেলায় তেমনটাই যেন হলো। তিনি যতদিন সাঁতরাবেন, সেরা হওয়ার জন্যই। যেমনটা বললেন প্যারিসের পুলে নামার আগে। হয়তো আগের মতো আর একই আসর থেকে তিন-চারটি স্বর্ণ জেতা নাও হতে পারে। তবে একটা স্বর্ণ জিতলেই সেটা হতে পারে তাঁর কাছে অষ্টম আশ্চর্যের মতো।