মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তার সিংহভাগ দেওয়ার ভার যুক্তরাষ্ট্র আর বহন করবে না। তিনি বিশ্বের অন্য ধনী দেশগুলোকে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ভূমিকম্পবিধ্বস্ত মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্র পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠায়নি এমন সমালোচনার মধ্যে শুক্রবার রুবিও এ আহ্বান জানান।

‘আমরা বিশ্বের সরকার নই। আমরা মানবিক সহায়তা দেব, অন্যরা যেমন দেয় তেমনই দেব, যথাসাধ্য দেব। আমাদের অন্য প্রয়োজনও আছে, সেগুলোর সঙ্গেও ভারসাম্য রাখতে হবে,’ ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রুবিওর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই ৯০ দিনের জন্য সব বিদেশি সাহায্য স্থগিত ঘোষণা করেন। এর ফলে বিশ্বব্যাপী জরুরি খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়াসহ বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা প্রধান সংস্থা ইউএসএআইডির বহু কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বে ফেডারেল সরকার ছোট করার যে প্রচেষ্টা চলছে, তার ফলে ইউএসএআইডি কার্যত ভেঙে পড়েছে। সংস্থাটির অনেক কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে অথবা বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, বাতিল হয়েছে বহু প্রকল্প। মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক রুবিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর আগের মতো বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তার প্রায় ৬০-৭০ শতাংশের ভার একা বহন করতে পারবে না। এ কাজে ‘চীন, ভারতের মতো’ বিশ্বের অন্য ধনী দেশগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। ‘আমরা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ, কিন্তু আমাদের সম্পদ অসীম নয়। আমাদের বিপুল ঋণ রয়েছে, অন্যান্য অনেক অগ্রাধিকারের কথাও ভাবতে হচ্ছে। সময় এসেছে সব পুনর্বিবেচনার। আমরা সহায়তা দেব। যতখানি সম্ভব করব। অন্য অনেক কিছুও আছে, যেগুলোর দিকে নজর দিতে হবে আমাদের,’ বলেছেন তিনি। ‘চীন খুবই ধনী দেশ। ভারতও ধনী দেশ। এছাড়াও বিশ্বে এমন অনেক ধনী দেশ আছে, তাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত,’ বলেন তিনি। কয়েক দিন আগে মিয়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ২০ লাখ ডলারের সহায়তা এবং তিন সদস্যের একটি মূল্যায়ন দল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিল। তবে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওই দলটিকে এখনো পাঠানো সম্ভব হয়নি। আগে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে যেকোনো বড় ভূমিকম্প, সুনামি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে দক্ষ উদ্ধারকর্মী পাঠিয়ে দিত। মিয়ানমারে এবার যেটা দেখা যায়নি। ইউএসএআইডি কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া আগের মতো হয়নি- এ সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে রুবিও বলেন, মিয়ানমার ‘কাজ করার মতো সহজ জায়গা নয়’, দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা যুক্তরাষ্ট্রকে পছন্দ করে না এবং মার্কিনিদের তাদের মতো কাজ করতে বাধাও দিচ্ছে। ২০২১ সালে নোবেলজয়ী অং সান সু চির বেসরকারি সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা সংকুচিত হয়েছে, অর্থনীতি হয়েছে আরও দুর্বল। ২৮ মার্চের ভূমিকম্প পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করেছে। দেশটিতে চলমান গৃহযুদ্ধ এরই মধ্যে ৩০ লাখের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে, দেখা দিয়েছে খাদ্য ঘাটতি। দেশটির জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষের এখনই ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন, বলছে জাতিসংঘ। রয়টার্স



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews