ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আগামী ৩১ জানুয়ারি এবারের বিশ্ব ইজতেমা টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে। বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি কাজ ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজগুলো চলমান রয়েছে। আশা করি, নির্ধারিত সময়ের আগেই সেগুলো সম্পন্ন করতে পারবো।’
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান পরিদর্শনে শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি যারা আছেন তারাই করে থাকেন। তবে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করে থাকি। একসময় তারা নিজেরাই সবকিছু করতেন। ইজতেমার পরিধি বাড়ার কারণে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। এটা সাধারণত ইজতেমার মুরুব্বি যারা আছেন তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা তাদের ডিমান্ড অনুযায়ী সহযোগিতা করে থাকি।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, ইজতেমাকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম জমায়েত বলা হয়ে থাকে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক মুসল্লি এখানে উপস্থিত হয়। এ জন্য তাদের কিছু মৌলিক চাহিদা রয়েছে। শৌচাগার, স্বাস্থ্য, খাবার ও অজুর পানি এইসব বিষয়গুলোতে আমরা তাদেরকে সাপোর্ট দেই। যেহেতু কম সময়ে জরুরিভাবে এটা করতে হয়। এই সাপোর্টটা ওনাদের প্রয়োজন। সরকারের বিভিন্ন দফতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একটা বড় দায়িত্ব রয়েছে। এ ছাড়া পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ অন্য যারা আছেন তারা সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে সহযোগিতা করে।’
সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড ঠিকভাবে এগোচ্ছে। আমাদের অবজারভেশন ও ইজতেমার মুরুব্বিদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ধারণা পেয়েছি। আশা করছি, ইজতেমা শুরুর আগেই আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবো।’
ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্ব শুরুর পূর্বে ইজতেমা মাঠের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্রের যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে তাবলীগের শীর্ষ মুরুব্বিদের দৃষ্টি রাখার জন্য তিনি আহ্বান জানান। এসব বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট তাদের নিজ নিজ জিনিসপত্র তাদের নিজেদের হেফাজতে রাখবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘ইজতেমা কর্তৃপক্ষের ডিমান্ড ছিল চটের পরিবর্তে টিনের। তাদের চাহিদা অনুযায়ী সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইজতেমায় যাতে মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে আসতে ও ইজতেমা শেষে ফিরে যেতে পারেন সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। ইজতেমা ময়দানের আশেপাশে অবৈধ উচ্ছেদের কিছু বিষয় আছে। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকেই জেলা প্রশাসক (ডিসি) উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবেন। তবে আমি অনুরোধ জানাবো, উচ্ছেদ অভিযানের আগে শনিবারের মধ্যে যেন বিভিন্ন দোকানপাটসহ অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হয়।
পরিদর্শনের সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শফিউল আজম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিনসহ জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।