বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের কোনো একক মালিক নেই। এর দক্ষিণে নেপাল, উত্তরে তিব্বত। তারা উভয়ে এর ‘মালিক’। চীনকে তিব্বতের অধীন মেনে নিলে এভারেস্টকে চীন-ভারত সীমান্ত বলা যায়।
তবে এই শৃঙ্গের এখনকার বহুল প্রচারিত নামটি যে তিব্বতি বা নেপালিদের দেওয়া নয়, সেটা অনেকেরই জানা। ব্রিটিশ সার্ভেয়ার এন্ড্রু ওয়াহ তাঁর বস—ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীন ভারতের প্রথম সার্ভেয়ার জেনারেল জর্জ এভারেস্টের নামে ওই শৃঙ্গের নাম দেন। জুলাইয়ের ৪ তারিখ ছিল এভারেস্টের জন্মদিন। এবারের জন্মদিনে তাঁর স্মৃতি বেশ বিতর্কে পড়েছে।
১৮৪৩ সালে এভারেস্ট অবসর নেওয়ার সূত্রেই এন্ড্রু ওয়াহ সার্ভেয়ার জেনারেলের পদটা পান। কাজে নেমে ১৮৫৬ সালে হিমালয় মেপেজোখে ওয়াহর দল সিদ্ধান্ত জানায়, এর ১৫ নম্বর চূড়াটা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু (২৯০০২ ফুট)। এখন থেকে এর নাম হবে সার্ভেয়ার এভারেস্টের নামে।
কোম্পানির জরিপ দল যখন হিমালয় অঞ্চল মাপছিলেন, তখন তাদের কাগজপত্রে আজকের এভারেস্টের পাশে লেখা থাকত ‘পিক নম্বর ১৫’। তারই নতুন নামকরণ করেন জরিপ-উদ্যোক্তারা। এই নামকরণে পুরোনো কর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানো এবং সঙ্গে নিশ্চিতভাবে ব্রিটিশ সাংস্কৃতিক কর্তৃত্ব তুলে ধরার ব্যাপার ছিল।
নেপাল রাষ্ট্রীয়ভাবে যদিও ‘সাহেব’দের পদানত ছিল না, কিন্তু দুনিয়াজুড়ে শ্বেতাঙ্গরা নানা সূত্রে এভাবে তাদের ঔপনিবেশিক কর্তৃত্বের বহু চিহ্ন রেখে গেছে, সেও সবার জানা। কিন্তু সময় যত যাচ্ছে সেসব স্মারক বেশ চ্যালেঞ্জে পড়ছে। পার্শ্বফল হিসেবে কিছু ঝামেলাও হচ্ছে। এভারেস্টের বেলায়ও ব্যতিক্রম ঘটছে না।