ব্যাঙের বিয়ের খবর পেয়ে প্রথম আলোর রাজশাহী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চারঘাটে কলাগাছের খোল দিয়ে দুটি বাক্সের মতো বানিয়ে তাতে রাখা হয় দুটি ব্যাঙ। গ্রামের ছেলেমেয়ে ও নারী–পুরুষেরা শরীরে রং মাখেন। ব্যাঙের গায়েও দেওয়া হয় রং। তারপর ব্যাঙ দুটিকে বাক্সে ঝুলিয়ে বাড়ি বাড়ি নিয়ে যায় এই দল। সব বাড়ি থেকে দেওয়া হয় মুঠো চাল।
আবুল কালামের ভাষ্যমতে, ওই দল গ্রামের বাড়িগুলোর উঠানে পানিও ঢেলে দিয়েছে। তারপর ওই কাদাপানিতে গড়াগড়ি খেয়েছে তারা। এরপর এক জায়গায় ফিরে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়। পরে ছোট একটি গর্ত করে তাতে পানি ঢেলে ছেড়ে দেওয়া হয় ব্যাঙ দুটিকে। এই আয়োজনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত গাওয়া হয়—‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে তুই, আল্লাহ মেঘ দে’ গান। এটি হলো বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা।
ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার এই সংস্কৃতি রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ফরিদপুরেও। জেলাটির সদর উপজেলার বাখুন্ডা ইউনিয়নের দয়ারামপুরের হোসনে আরা ও আসমা আক্তার এখন মাঝবয়সী। তাঁরাও কিশোর বয়সে বৃষ্টি আনতে পালন করেছেন এই লোকাচার।
হোসনে আরা মঙ্গলবার মুঠোফোনে জানান, বিয়ে দেওয়ার জন্য দুটি গর্ত করে একটিতে স্ত্রী ব্যাঙ, অপরটিতে পুরুষ ব্যাঙ রাখতেন তাঁরা। আমপাতাসহ বিভিন্ন গাছের পাতাধোয়া পানি দিয়ে গোসল করানো হতো ব্যাঙ দুটিকে। সেগুলোকে পরিয়ে দেওয়া হতো বিয়ের পোশাক। এরপর বিয়ে দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো পুকুরে। মানুষের বিয়ের উৎসবের মতো গাওয়া হতো নানা গীত। পুরো গ্রামের মানুষ তখন উপস্থিত থাকতেন। তাঁদের বিশ্বাস ছিল—এর পরই আসবে বৃষ্টি।