উচ্চ আদালতে আগামী এক মাসের মধ্যে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আপিল শুনানি শেষ করে রায় ঘোষণার দাবি জানিয়েছে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে রায় ঘোষণার সাত কার্যদিবসের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করারও আহ্বান জানিয়েছে এ সংগঠনটি।
গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে নিজের কার্যক্রম ঠিক করতে হুঁশিয়ার করেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা। সংগঠনটির আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মেহেদী হাসান বলেন, বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে আট মাস পার হলেও মেজর সিনহার ফাঁসির রায় কার্যকরের পদক্ষেপ নেই। আশা করছি, মেজর সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের চলমান শুনানি আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে এবং উচ্চ আদালত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখবেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম প্রশংসিত হচ্ছে। একটা জায়গায় বেশ দুর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেটা আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের। তাঁকে সাবধান করতে চাই– দেশের জনগণ যেমন হাসিনাকে টেনে নামাইছে, আপনার গদিও কিন্তু ঠিক থাকবে না। আপনার কার্যক্রম ঠিক করেন। আপনি দেশের বিপক্ষে কাজ করবেন, সেটা কিন্তু হবে না।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য সচিব লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ বলেন, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে মামলা করলে র্যাব তদন্ত শেষে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
তিনি জানান, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড ছাড়াও স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে, প্রদীপ কুমার দাশ তাঁর কর্মকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে টেকনাফে এক ভয়ভীতির রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি তথাকথিত ‘ক্রসফায়ারে’ অন্তত ১৪৫ জনকে হত্যা করেছেন ও ক্রসফায়ার বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছিলেন।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল মামলার রায় দেন। রায়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন এবং সাতজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।