বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, আল্লাহর বিধানই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ বিধান; এই বিধান বাস্তবায়নের জন্যই তিনি শ্রেষ্ঠ মানুষ নবী-রসূলগণকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছিলেন। আল্লাহর খলিফা হিসাবে এ দায়িত্ব এখন আমাদের ওপর এসেছে। তাই আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য আমাদেরকে যে-কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ময়দানে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর দক্ষিণখানে জামায়াতে ইসলামী দক্ষিণ পশ্চিম থানা জামায়াত আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
থানা আমীর মুহাম্মদ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আলী হোসাইন মুরাদের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, ব্যারিস্টার আ. রহমান, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল ।
অ্যাডভোকেট জুবায়ের বলেন, বিগত প্রায় ১৬ বছর দেশে আওয়ামী-বাকশালীদের অপশাসন-দুঃশাসন চলেছে। মাফিয়াতান্ত্রিক সরকার জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে প্রায় অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। সংবিধান ও আইনের তোয়াক্কা না করে সবকিছু করা হয়েছিল গায়ের জোরে। পরিকল্পিতভাবে দেশ ও জাতিসত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। নানামুখী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করা হয়েছিল দীর্ঘ পরিসরে। দেশে সৃষ্টি করা হয়েছিল এক কালো অধ্যায়ের। কিন্তু ছাত্র-জনতার যুগপৎ বিপ্লবের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সে অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আমরা এখন অতীত ভুলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। অন্তর্বর্তী সরকারসহ সকল দেশপ্রেমী শক্তি এই অঙ্গীকার পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি দেশ গড়ার সেই প্রতিশ্রুতি পালনে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী- বাকশালীরা পরিকল্পিতভাবে দেশের সকল সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সকল অঙ্গপ্রতিষ্ঠান নির্লজ্জভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম ও গুপ্তহত্যায় দেশকে পরিণত করা হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। তাই খুনিদের খপ্পর থেকে বেড়িয়ে এসে রাষ্ট্রীয় সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। সংস্কার কাজও ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
এহসানুল মাহবুব বলেন, তবে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্কার হলেই চলবে না বরং ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে মানুষের মন-মগজেরও পরিবর্তন হতে হবে। বস্তুত আল্লাহর বিধানই সর্বশ্রেষ্ঠ বিধান। তাই আর্ত-মানবতার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। আর মানুষের তৈরি বিধান দিয়ে মানুষের কোন কল্যাণ হতে পারে না। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামী-ফ্যাসিবাদীরা জামায়াতের শীর্ষনেতাদের কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে নির্মমভাবে হত্যা করে দেশকে রীতিমতো বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে। কিন্তু বাকশালীদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলন দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। তাই এই বিজয়কে টেকসই ও অর্থবহ করতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তিনি ন্যায়- ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ পরিবারকে সম্মাননা স্মারক ও উপহার প্রদান করা হয়।