পদ্য

শোন একটি মুজিবরের থেকে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার

সৃজনশীল প্রশ্ন : সবুজ শ্যামল বনভূমি মাঠ নদীতীর বালুচর

সবখানে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের ঘর।

সোনার দেশের মাঠে মাঠে ফলে সোনার ধান রাশি রাশি

ফসলের হাসি দেখে মনে হয় শেখ মুজিবের হাসি।

ক) ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতাটি পাঠের উদ্দেশ্য কী?

উত্তর : ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতাটি পাঠের উদ্দেশ্য হলো—শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা।

খ) বিশ্বকবির সোনার বাংলা নজরুলের বাংলাদেশ—কথাটি কেন বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : প্রকৃতির সোনা ফলা রূপ বিশ্বকবির দৃষ্টিতে বাংলাকে ‘সোনার বাংলা’ আর নজরুলের ‘বাংলাদেশ’ করে তুলেছে। এ জন্যই এ বাংলাকে দুই কবির ‘সোনার বাংলা’ ও ‘বাংলাদেশ’ বলা হয়েছে।

‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার কবি গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার বাংলার যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা বলেছেন, তাতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৃষ্টিতে ফুলে-ফসলে সমৃদ্ধ এক বাংলার পরিচয় বিধৃত হয়েছে। বাংলার রূপে মুগ্ধ হয়ে কবি এর নাম দিয়েছেন ‘সোনার বাংলা’, যার কথা আমাদের জাতীয় সংগীতেও উচ্চারিত হয়েছে। একইভাবে কাজী নজরুল ইসলামও ‘বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি কবিতা রচনা করেছেন। তাঁর কবিতা ও সংগীত এবং প্রবন্ধে বাংলা ও বাঙালির মুক্তির কথা উচ্চারিত হয়েছে বারবার।

গ) উদ্দীপকের ভাব ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার সঙ্গে কিভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : উদ্দীপকের ভাব ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনার দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ।

‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতায় কবি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে বাংলার মানুষের জাগরণের সঙ্গে সঙ্গে সবুজ-শ্যামল বাংলার একটি বর্ণনাও তুলে ধরেছেন। পূর্ব বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এতটাই দৃষ্টিনন্দন যে তা বিভিন্নভাবে মানুষকে ভাবালুতায় আচ্ছন্ন করে। বাংলার সবুজ প্রান্তরের বুকচিরে যে পথ চলে গেছে, তা কখনোই হারিয়ে যাওয়ার নয়। বাংলার প্রকৃতির সর্বত্র যেন সোনার খনি রয়েছে, যার সন্ধান শিল্পকলা অথবা কবিতায়ও পাওয়া যাবে না। প্রকৃতির এই অনিন্দ্য রূপ-সৌন্দর্য চিরায়ত মহিমায় বিশ্বকবির দৃষ্টিতে ‘সোনার বাংলা’, নজরুলের ‘বাংলাদেশ’ আর জীবনানন্দের ‘রূপসী বাংলা’ হয়ে উঠেছে।

উদ্দীপকেও বাংলার সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি ও সোনার ফসলের রূপ বর্ণিত হয়েছে, যা ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার উপর্যুক্ত বক্তব্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ) “উদ্দীপকটি ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার একটি খণ্ডচিত্র মাত্র”—মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।

উত্তর : ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতায় মুক্তিযুদ্ধের যে আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে, উদ্দীপকে তার কোনো উল্লেখ নেই।

‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতায় বলা হয়েছে যে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে এই দেশে হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নির্বিচারে বাঙালি জনগণের ওপর হত্যাযজ্ঞের সূচনা করলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার লাখ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এর আগে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেও তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২৬ মার্চ তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস বন্দি করে রাখলেও তাঁর স্বাধীনতার ডাক কোটি বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা হয়ে বেজেছে চারদিকে। পাকিস্তানবিরোধী সব সংগ্রাম-আন্দোলনে সারা দেশেই প্রচার করা হতো তাঁর ভাষণ-বক্তৃতা। মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীনতাকামী সব মানুষের রক্তে-চেতনায় তা প্রণোদনা জাগাত।

অন্যদিকে উদ্দীপকে শুধু বাংলার প্রকৃতির চিরায়ত সৌন্দর্য ও ফসলের সম্ভারের কথা বলা হয়েছে, যা ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার একটিমাত্র দিক।

উপর্যুক্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।

আমার বাড়ি

জসীমউদ্দীন

সৃজনশীল প্রশ্ন : তুমি যাবে ভাই—যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,

গাছের ছায়ায় লতায়-পাতায় উদাসী বনের বায়।

তুমি যদি যাও দেখিবে সেখানে মোটর লতার সনে

শিম আর শিম হাত বাড়ালেই মুঠি ভরে সেই ক্ষণে,

তুমি যদি যাও সে সব কুড়ায়ে, নাড়ার আগুনে পুড়ায়ে-পুড়ায়ে,

খাব আর যত গেঁয়ো চাষিদের ডাকিয়া নিমন্ত্রণে,

হাসিয়া-হাসিয়া মুঠি-মুঠি তাহা বিলাইব দুইজনে,

ক) জসীমউদ্দীনের কবিতায় পল্লীর মানুষ ও প্রকৃতির কী দেখতে পাওয়া যায়?

উত্তর : জসীমউদ্দীনের কবিতায় পল্লীর মানুষ ও প্রকৃতির সহজ সুন্দর রূপ দেখতে পাওয়া যায়।

খ) কবি তাঁর বন্ধুকে গ্রামের বাড়িতে কী দিয়ে আপ্যায়ন করতে চান? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : কবি তাঁর বন্ধুকে গ্রামের বাড়িতে দেশজ নানা খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করতে চান।

‘আমার বাড়ি’ কবিতার কবি জসীমউদ্্দীন তাঁর শহুরে বন্ধু গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গেলে তাকে পিঁড়িতে বসতে দেবেন। তারপর শালিধানের চিঁড়ে, বিন্নিধানের খইয়ের সঙ্গে বাড়ির গাছের কবরি কলা ও ঘন দই দিয়ে তাকে আপ্যায়ন করবেন।

গ) উদ্দীপকটি ‘আমার বাড়ি’ কবিতার সঙ্গে কিভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : উদ্দীপকটি ‘আমার বাড়ি’ কবিতার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন ও উপভোগ করার দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ।

‘আমার বাড়ি’ কবিতার কবি তাঁর শহরের বন্ধুকে গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে তাকে চিঁড়া, খই, কলা এবং গামছা বাঁধা অর্থাৎ ঘন দই দিয়ে আপ্যায়ন করতে চান। শুধু তা-ই নয়, প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবে, তার কথাও তিনি বন্ধুকে জানিয়েছেন। কবি তাঁর বন্ধুকে আম-কাঁঠালের বনের ধারে শুয়ে বিশ্রাম নিতে বলেছেন; যাতে গাছের শাখা সারা রাত ধরে তাকে বাতাস করতে পারে। সে সময় চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় পরশ কবি তাঁর বন্ধুর মুখে বুলিয়ে ও তারাফুলের মালা গেঁথে বুকে জড়িয়ে দেবেন। গাই দোহনের শব্দে সকালবেলা বন্ধুর ঘুম ভাঙলে কবি তাকে নিয়ে সারাটা দিন খেলা করবেন। কবির বাড়ির ডালিমগাছে ডালিম ফুল যেমন উজ্জ্বল হয়ে ফুটে আছে, তেমনি কাজলাদিঘির কাজল পানিতে হাঁসগুলো পরম আনন্দে ভেসে বেড়ায়। কবি সবশেষে বন্ধুকে বলেছেন, তাঁর গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পথে যেখানে সে মৌরি ফুলের সুগন্ধ পাবে, সেখানেই যেন তার রথ অর্থাৎ যাত্রা থামিয়ে দেয়।

উদ্দীপকের কবিও তার শহরের বন্ধুকে গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে তাকে নিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করার নানা বর্ণনা দিয়েছেন, যা ‘আমার বাড়ি’ কবিতার উপর্যুক্ত বক্তব্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ) “উদ্দীপক ও ‘আমার বাড়ি’ কবিতার ভাবার্থ এক”— মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।

উত্তর : অতিথিকে নিমন্ত্রণ করে তাকে আপ্যায়ন ও প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়ার যে আকুলতা উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে, ‘আমার বাড়ি’ কবিতায়ও সেই একই ভাব ব্যক্ত হয়েছে।

‘আমার বাড়ি’ কবিতার কবি তাঁর শহরের বন্ধুকে নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে যেভাবে সৌজন্য, শিষ্টাচার ও ভালোবাসার পরিচয় দেবেন, তার বর্ণনা দিয়েছেন। বন্ধু তাঁর বাড়িতে গেলে তাকে পিঁড়িতে বসিয়ে চিঁড়া, খই, কলা ও দই দিয়ে আপ্যায়ন করবেন। প্রকৃতির সান্নিধ্যে বন্ধুর প্রাণ জুড়াবারও ব্যবস্থা তিনি করবেন। বন্ধুর বিশ্রাম ও আনন্দের জন্য কবি যেসব ব্যবস্থা করে রেখেছেন, তাতে বাঙালির অতিথি আপ্যায়ন, আন্তরিক প্রয়াস ও ভালোবাসা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কবির বন্ধুকে আপ্যায়ন করার জন্য আম-কাঁঠালের বন, আকাশের চাঁদ-তারা, ডালিম ফুল, কাজল দিঘির হাঁসও যেন উন্মুক্ত হয়ে আছে।

উদ্দীপকের কবির ছোট গ্রামও প্রকৃতির ঘনিষ্ঠতায় জড়িয়ে আছে। সেখানেও বন্ধুকে আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে সৌজন্য ও শিষ্টাচারের প্রকাশ ঘটেছে।

উপর্যুক্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘আমার বাড়ি’ কবিতার ভাবার্থ এক।

বাংলা ব্যাকরণ অংশ

সন্ধি

১।

‘সন্ধি’ শব্দের অর্থ কী ?



  ক) সংক্ষেপ

খ) মিলন

গ) পরিবর্তন  ঘ) বিলোপ

২।

বিসর্গ (ঃ) কিসের সংক্ষিপ্ত রূপ?



  ক) ‘হ’-র





খ) ‘স’-র





গ) ‘স’ ও ‘হ’-র  



  ঘ) ‘র’ ও ‘স’-র

৩।

শব্দের উৎস বিচারে সন্ধিকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে?



  ক) দুই

খ) তিন

গ) চার

ঘ) পাঁচ

৪।

খাঁটি বাংলা সন্ধির উদাহরণ কোনটি?



  ক) নব + অন্ন = নবান্ন

খ) হিম + আলয় = হিমালয়

 



  গ) পাঁচ + সের = পাঁশসের  ঘ) আবিঃ+ কার = আবিষ্কার

৫।

বর্গের প্রথম ব্যঞ্জনের (ক্/চ্/ট্/ৎ/প) পরে স্বরধ্বনি থাকলে বর্গের প্রথম ব্যঞ্জনস্থলে তৃতীয় ব্যঞ্জন (গ্/জ্/ড্/দ্/ব) হয়—এর উদাহরণ কোনটি?



  ক) উচ্ছেদ

খ) একচ্ছত্র গ) বিপজ্জনক ঘ) সদিচ্ছা



  উত্তর
: ১. খ ২. ঘ ৩. ক ৪. গ ৫. ঘ।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews