প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের মাঠের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা ভোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের আচরণ পক্ষপাতমূলক হলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সোমবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ায় জামালপুরের জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এমন বার্তা দিলেন। তিনি বলেন, তফসিলের আগে এমন চিঠি দিতে কোনো বাধা নেই। পাঁচ বছরের পুরো সময়ে আমাদের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব, কর্তব্য ও এখতিয়ার রয়েছে। সিইসি জানান, সম্প্রতি জামালপুরের ডিসিকে প্রত্যাহারের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অনুরোধ করার পর সেই কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে সব জেলা প্রশাসককে সতর্ক করার জন্যও বলা হয়েছে। নির্বাচন, জনগণ, ইসি ও সরকারের আস্থার স্বার্থে এটা করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ভোটের পরিবেশ আমরা পর্যবেক্ষণ করতে থাকব। আমরা কোনোভাবেই চাইব না, কোনো জেলা প্রশাসকের আচরণ পক্ষপাতমূলকভাবে প্রতিফলিত হোক। কারও আচরণ পক্ষপাতমূলক হলে, কমিশন অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।
তফসিলের আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে চিঠি দিতে কোথাও বাধা নেই। কমিশনের এখতিয়ার রয়েছে। তফসিল ঘোষণার পরে সুনির্দিষ্ট বিষয় রয়েছে। তফসিলের আগেও যদি এমন কিছু ঘটে যেটা নির্বাচনের আস্থা, সরকার ও ইসির আস্থা, যারা নির্বাচন পরিচালনা করছেন তাদের পক্ষপাতহীন আচরণে যদি বিতর্ক উত্থাপিত হয়, তাহলে ইসি অবশ্যই সরকারের নজরে আনতে পারে।
সিইসি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর কিছু সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব, যেগুলো বাধ্যতামূলক আমাদের করতেই হবে। তফসিলটা হচ্ছে নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায়। যেখান থেকে ধাপে ধাপে আমাদের পোলিং ডে এবং নির্বাচন ঘোষণা করতে হয়।
নির্বাচনের পরিবেশ নেই বলে বিরোধী দল যা বলছে তা নিয়ে কমিশনের কাজ করার সুযোগ আছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এমন জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে না এই মুহূর্তে। তবে অবশ্যই আমরা ভোটের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করব। এটাকে বলে প্রক্ষেপণ। নির্বাচন তিন মাস পরে, চার মাস পরে, ছয় মাস পরে হবে। কিন্তু আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আপনারা তো বলেন, আমরা পারি না। মনে করেন, কালকে জেলা প্রশাসকরা একটা অ্যাসোসিয়েশন করল। তারা ঢাকায় চলে এসে বলল, এবার আমরা একটা বিশেষ দলকে অবশ্য অবশ্যই ক্ষমতায় আনব। নির্বাচন মনে করুন ছয় মাস পর। এখন আমরা কি নিশ্চুপ বসে থাকব? তাদের কিছু একটা নির্দেশনা তো দিতে হবে, যে এভাবে আপনারা আচরণ করতে পারেন না। কারণ জেলা প্রশাসক পদটা নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ।

সিইসির কাছে প্রশ্ন ছিল- প্রধানমন্ত্রীর ভোট চাওয়ার বিষয়ে কমিশনের কোনো এখতিয়ার আছে কিনা? জবাবে সিইসি বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর চট করে দিতে পারব না। এখন সবাই নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন। বিএনপি কথা বলছে, আওয়ামী লীগ কথা বলছে, জাতীয় পার্টি কথা বলছে; সবাই কথা বলছে তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন, আপনারা আমাদের ছাড়া কাউকে ভোট দেবেন না, তাহলে নিশ্চয়ই আমরা ইন্টারফেয়ার (হস্তক্ষেপ) করতে পারি। কিন্তু তিনি ভোট চাইছেন, বিএনপি ভোট চাইছে, জাতীয় পার্টিও ভোট চাইছে। কিন্তু বিষয়টি আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখিনি। যখন তফসিল ঘোষণা করা হয়, তারপর যে নির্বাচনী আচরণ... তিনি নির্বাচনে দাঁড়াবেন কি দাঁড়াবেন না, সেটা আমরা জানি না। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি করবেন না, সেটা আমরা জানি না।

কাজেই সেটা সময় হলে আমরা দেখব। নতুন করে যে সংলাপ হচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে কিনা, এ থেকে অর্জন কী- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, অর্জন তো ওখানে বলা হয়েছে। আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা আমাদের দায়িত্ব। যেমন এই আমার ওপরও একটা মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি হয়। যারা বিশিষ্টজন তারা কী বলতে চান। দায়িত্বটা শুধু আমাদের না। সরকার, রাজনৈতিক দল, ভোটার সবার যে দায়িত্ব রয়েছে। এমন সেমিনার বা আলোচনা থেকে সে ব্যাপারে কিছুটা হলেও দায়িত্ববোধ বা চাপ সৃষ্টি হতে পারে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews