খোঁড়া ঘোড়া স্ট্রাইকার, বাজির ঘোড়া উইঙ্গার

ইংল্যান্ডের সেন্টার ফরোয়ার্ড হ্যারি কেইন ২ গোল করলেও একেবারেই ফর্মে নেই। তাঁকে নিয়ে ভীষণ চিন্তিত ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। একই অবস্থা নেদারল্যান্ডসেরও। তাদের সেন্টার ফরোয়ার্ড মেম্ফিস ডিপাইও ছন্দে নেই। তারা যেন দলের খোঁড়া ঘোড়া। 

তবে ডিপাইয়ের ছন্দহীনতা খুব বেশি প্রভাব ফেলছে না উইঙ্গার কোডি গ্যাকপোর কারণে। ইংল্যান্ড শিবিরেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বুকায়ো সাকা ফর্মে ফেরায়। সেন্টার ফরোয়ার্ডরা ফর্মে না থাকায় উভয় দলই সওয়ার হয়েছে এ দুই উইঙ্গারের ওপর। আজ ডর্টমুন্ডে ডাচদের ভরসা গ্যাকপো এবং ইংলিশদের বাজির ঘোড়া সাকা।

প্রিমিয়ার লিগে গ্যাকপোর সেরা রূপটা এখনও দেখতে পাননি ইংলিশ ভক্তরা। মোহামেদ সালাহর কারণে একটু আড়ালেই থাকতে হয় লিভারপুলের এ ডাচ ফরোয়ার্ডকে। এ সৌম্য-শান্ত দর্শন গ্যাকপোই আজকের সেমিতে ইংলিশদের প্রধান হুমকি। মেজর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভালো খেলাটা অবশ্য গ্যাকপোর পুরোনো অভ্যাস।

আর্জেন্টিনার কাছে টাইব্রেকারে হেরে ছিটকে যাওয়া ২০২২ বিশ্বকাপে ৩ গোল করেছিলেন গ্যাকপো। কাতার বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দেখেই ২৫ বছর বয়সী উইঙ্গারকে দলে ভিড়িয়েছিল লিভারপুল। কিন্তু অ্যানফিল্ডে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি গ্যাকপো। এর পেছনে অবশ্য স্পষ্ট কারণ রয়েছে। 

গ্যাকপো হলেন লেফট উইঙ্গার। কিন্তু লিভারপুলে এ পজিশনে আছেন লুইস দিয়াজ ও দিয়াগো জোতা। লেফট উইঙ্গে গ্যাকপো হলেন ক্লাবের তৃতীয় পছন্দ। তবে ডারইউন নুনেজ ব্যর্থ হলে মাঝেমধ্যে সেন্টার ফরোয়ার্ড পজিশনে নামানো হয় তাঁকে। ক্লাবের স্বার্থে পছন্দের পজিশন ছাড় দিয়ে শুধু সেন্টার ফরোয়ার্ড না, মিডফিল্ডেও খেলতে হয় গ্যাকপোকে। তবে জাতীয় দলে এ সমস্যাটা নেই। নিজের পছন্দের পজিশনে খেলতে পারছেন বলে অপ্রতিরোধ হয়ে উঠেছেন ডাচ এ তারকা। নেদারল্যান্ডস ইউরো জিতলে আসরের সেটা খেলোয়াড়ও হয়ে যেতে পারেন তিনি।

সাকার অবশ্য এ সমস্যা নেই। আর্সেনালের এক নম্বর রাইট উইঙ্গার তিনি। জাতীয় দলেও পছন্দের এ পজিশনে তিনি কোচের প্রথম পছন্দ। তবে এবারের ইউরোর গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোতে তিনি তেমন ভালো খেলতে পারেননি। তাই মনে হয়েছিল গত ইউরোর দুঃসহ স্মৃতি বুঝি এখনও তাড়া করছে তাঁকে। ইতালির বিপক্ষে গত ইউরোর ফাইনালে তিনি টাইব্রেকার মিস করেছিলেন। ওই মিসের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্ণবাদের শিকারও হয়েছিলেন তিনি। তবে নকআউটে এসে ঠিকই জ্বলে উঠেছেন তিনি। বিশেষ করে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের আক্রমণভাগে একমাত্র তিনিই খেলেছেন। ইংলিশদের অধিকাংশ আক্রমণের উৎস ছিলেন তিনি। 

রাইট উইঙ্গ দিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে অনেকগুলো ক্রস ফেলেছেন তিনি। কিন্তু সেগুলোর একটিও কাজে লাগাতে পারেননি কেইন, বেলিংহাম, ফোডেনরা। শেষ পর্যন্ত নিজেই বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে সমতা ফেরান। এর পর টাইব্রেকারে গোল করে শেষ চারে নিয়ে এসেছেন দলকে। আজও ২২ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ডের ওপরই নির্ভর করছে ইংল্যান্ডের টানা দ্বিতীয় ইউরোর ফাইনাল।

দুই উইঙ্গারের জন্যই আজ কাজটা বেশ কঠিন হবে। কারণ প্রিমিয়ার লিগে খেলার কারণেই দু’জনই প্রতিপক্ষের কাছে ভীষণ পরিচিত। এই যেমন গ্যাকপোকে আটকানোর দায়িত্ব থাকবে ইংল্যান্ডের রাইট-ব্যাক কাইল ওয়াকারের ওপর। গ্যাকপো লিভারপুলে এবং ওয়াকার ম্যানসিটিতে খেলেন বলে প্রায়ই তাদের দেখা হয়। একইভাবে সাকাকে আটকানোর দায়িত্ব থাকবে নাথান অ্যাকের ওপর। সাকা আর্সেনালে ও অ্যাকে ম্যানসিটিতে খেলেন। প্রতিপক্ষ পরিচিত বলে লড়াইটা আজ অন্য মাত্রা পেতে পারে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews