বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের মন্ত্রীসভার সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও কেবিনেট সচিব মরহুম আব্দুল মোমেন খানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী কাল বৃহস্পতিবার। ১৯৮৪ সালের ১২ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নরসিংদীর পলাশ ও ঘোড়াশাল উপজেলা এবং পৌর বিএনপির উদ্যোগে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। পলাশ উপজেলার মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মরহুমের ছেলে ও সাবেক মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
এদিকে মরহুম আব্দুল মোমেন খানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার এক বাণীতে তিনি মরহুমের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, ‘জনগণের নাগরিক অধিকার তথা বাক, ব্যক্তি, চিন্তার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার সংগ্রামে আব্দুল মোমেন খানের ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক। তিনি এদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন মার্জিত ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে সমাদৃত ছিলেন। বিএনপি ও পূর্বসুরী জাগদলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মরহুম আব্দুল মোমেন খান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। মন্ত্রী হিসেবেও তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, দেশ ও এলাকাবাসীর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করতে তার অবদান দল ও দেশবাসী চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। আমি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে আবদুল মোমেন খান ফজলুল হক হল প্রতিষ্ঠার পর ছাত্র সংসদের প্রথম স্পিকার (বর্তমান ভিপি) নির্বাচিত হন। তিনি উপস্থিত বক্তৃতা, বিতর্ক ও অন্য সহশিক্ষা কার্যক্রমে খুবই পারদর্শী ছিলেন, যা তার পেশা জীবনকেও সমৃদ্ধ করে। একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আবদুল মোমেন খান সুনাম অর্জন করেন এবং লাহোরে সিনিয়র সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রথম স্থান অধিকার করে তৎকালীন রেক্টর ডি কে পাওয়ার (আইসিএস) প্রদত্ত প্রশংসাসূচক ভ্যালেডিকটরিয়ান সম্মান অর্জন করেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আবদুল মোমেন খান কেবিনেট সচিব ছিলেন। তার বুদ্ধিদীপ্ত চাকরি জীবনে তিনি খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, প্রাদেশিক সরকারের গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং সেচ বিভাগের সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সচিবের দায়িত্বও পালন করেন অত্যন্ত সফলতার সাথে।’
বরেণ্য এই রাজনীতিবিদ ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে নরসিংদী-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৪১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন এবং ১৯৪২ সালে কলিকাতা গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে অনুষদের সদস্য হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। মোমেন খান লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং পরে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭৮ থেকে ১৯৭৯ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।