করোনার সংকট মোকাবিলায়

নিউজ আপলোড : ঢাকা , শনিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২১

করোনাকালীন সংকট মোকাবিলায় বিদেশি ক্রেতাসহ সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, দেশের পোশাক খাত সংকটময় সময় পার করছে। এমন সময় বিদেশি ক্রেতাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তারা যেন ক্রয়াদেশ বাতিল না করে। আর দেশের রপ্তানিকারকদের কাজ হবে, তারা যেন নতুন বাজার খুঁজে বের করে। শনিবার (১৬ জানুয়ারী) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি আয়োজিত ‘রিকভারি অব দ্য অ্যাপারেল সেক্টর ফ্রম কোভিড-১৯ ক্রাইসিস; ইস অ্যা ভ্যালু চেইন বেইসড সল্যুশন পসিবল?’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক সংকট সামাল দিলেও এখন মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। এই ঢেউয়ে সংকট আরও গভীরে পৌঁছেছে। এর ফলে ক্রেতারা এখন অর্ডারের পরিমাণ ও মূল্য কমিয়ে দিয়েছে। এতে সংকট আরও বাড়ছে। ক্রেতারা যদি পোশাকের অর্ডার ঠিক রাখার পাশাপাশি মূল্যও কিছুটা বাড়িয়ে দেন, তাহলে এখাতের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। আমাদের নতুন নতুন বাজারে ঢুকতে হবে। যদি আমরা ঠিকমতো নতুন বাজারে ঢুকতে পারি, তাহলে হয়তো সংকট কিছুটা কমতে পারে। তৈরি পোশাক খাতে সরকারের দেয়া ঋণ সহযোগিতার সময় আরও বাড়ানো দরকার বলেও মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রণোদনার ঋণ পরিশোধের সময় আরও বাড়ানো দরকার। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। সরকার তৈরি পোশাকের বিষয়ে খুবই পজেটিভ। এই সংকটকালীন সময় যা করা দরকার তাই করা হবে।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। শ্রীলঙ্কার পোশাক রপ্তানির সংকটের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেন তিনি। শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের তুলনায় কিছুটা দামি পোশাক রপ্তানি করে জানিয়ে মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশের ২৩ শতাংশ কারখানা সংকটে রয়েছে, যেখানে শ্রীলঙ্কায় এই হার ৩১ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সংকট দীর্ঘায়িত হয়ে আগামী বছর পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে। পোশাক খাতের সংকট মোকাবিলায় সরকার, মালিক, শ্রমিক ক্রেতাদের সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার সুপারিশ করেন মোয়াজ্জেম।

অনুষ্ঠানে সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান উপস্থিত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এইচএন্ডএম এর বাংলাদেশ পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের কাছে ক্রেতা হিসেবে তার কোম্পানি কোন দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহী কিনা জানতে চান। এ সময় জিয়াউর বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান এই সংকট দূর করতে প্রতিশ্রুত। যদি সংকট মোকাবিলায় সরকার, মালিক, ক্রেতা ও শ্রমিক নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করে, তাহলে অবশ্যই এইচঅ্যান্ডএম পোশাকের মূল্য কিছুটা বাড়াতে রাজি আছে।

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, অনেকে তেমন কোন পরিসংখ্যান না জেনেই পোশাক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কথা বলছেন। এটা ঠিক নয়। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কথা বলতে হলে এই শিল্পের প্রকৃত চিত্র দেখা দরকার। এটা মনে রাখতে হবে, শিল্প না থাকলে শ্রমিদের কাজও থাকবে না। প্রথম সংকট থেকে আমরা কিছুটা উত্তরণ করতে পারলেও এখন দ্বিতীয় সংকটে পড়েছি। এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে হবে।

ন্যাশনাল গার্মেন্ট ওয়ার্কার ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, সংকটকালীন সময় টিকে থাকতে সরকার বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছে তৈরি পোশাক খাতকে। অনেক কারখানার মালিক সরকারের সেই প্রণোদনা সুবিধা গ্রহণ করেছে। আর প্রণোদনা সুবিধা গ্রহণ করেও অনেক কারখানা থেকে শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। ছাঁটাইয়ের কবলে পড়া শ্রমিকরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। লেঅফ এর কথা বলে অনেক শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। বলা হয়েছে, দুই মাস পর তারা কাজে যোগ দিতে পারবে। কিন্তু ৪/৫ মাস পার হলেও তারা এখনও কাজে যোগ দিতে পারেনি। অনেকে আর কাজে যোগ দিতে পারবে বলে মনে হয় না। অনেক কারখানায় ৩০ শতাংশ শ্রমিক ছাঁটাই করে ৭০ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে ১০০ শতাংশ কাজ করানো হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ফারভেইজ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর পোশাকের জোগান দিতে বড় ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, কোন সরকার কোন কোম্পানিকে সরাসরি নির্দেশনা দিতে না পারলেও নেদারল্যান্ডস সরকার সেদেশের পোশাক আমদানিকারকদের বাংলাদেশের অর্ডার বাতিল না করার অনুরোধ জানিয়েছে।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews