বিয়ে করার আগে অবশ্যই সঙ্গীকে ভাল করে জেনে নিন। একটি প্রেমময় সম্পর্ক গড়ে তুলুন। প্রেম যেকোনো সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এ সময় একে অপরকে বোঝা, মূল্যবোধ, লক্ষ্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং প্রয়োজনগুলো জানা যায়। সাধারণ ভিত্তি গুলো সন্ধান করা যায়। সব কিছু মিলে গেলে বিয়ের মত বড় সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন। বিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্য সঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধা এবং আনুগত্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। থেরাপিস্ট জর্ডান ড্যানের মতে, “বেশিরভাগ দম্পতির জন্য, কেবল ভালবাসাই যথেষ্ট নয়। এটি এক ধরণের প্রতিশ্রুতিও। তাই বিয়ের আগে সঙ্গীর সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করে নেওয়া দরকার।
জীবনের সাফল্য বহুলাংশেই নির্ভর করে উপযুক্ত জীবনসঙ্গী নির্বাচনের উপর। ভালবেসে বিয়ে করুন কিংবা সম্বন্ধ করে— আপনার জীবনসঙ্গী স্বামী বা স্ত্রী হওয়ার উপযুক্ত কি না তা যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তা কীভাবে করবেন?
১. তুমি কেন আমাকে ভালবাসো : সব থেকে জরুরি প্রশ্ন এটি এবং এই প্রশ্নের একটা সঠিক উত্তর আপনার সঙ্গীর থেকে কাম্য। কেউ যদি এই প্রশ্নের উত্তরে বলে ‘তোমাকে ভালবাসি তাই ভালবাসি’, তাহলে সেটি খুব গ্রহণযোগ্য উত্তর হল না। আপনার সঙ্গীর উত্তর থেকে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন, সে আপনার সবটুকু মিলিয়ে আপনাকে ভালবাসে কি না। শুধু আপনার ক্ষমতা নয়, আপনার অক্ষমতাগুলোকেও সে মেনে নিতে প্রস্তুত কি না, তা বুঝে নিন।
২. তুমি কেন বাকি জীবনটা আমার সঙ্গে কাটাতে চাও : এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলবেন, ‘আমি তোমাকে ভালবাসি বলে।’ কিন্তু এটাই কি সেই উত্তর যা আপনি শুনতে চাইছেন? সম্ভবত নয়। বরং দেখুন তার উত্তর থেকে তার জীবনে আপনার প্রয়োজনীয়তা, আপনার মূল্য সম্পর্কে কোনো ধারণা তৈরি করতে পারেন কি না। আপনার সঙ্গীর মনেও এই বিষয়টি সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা গড়ে ওঠা খুব জরুরি।
৩. প্রেমকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিয়ের পর তুমি কী করবে : প্রশ্নটা আপাতদৃষ্টিতে বোকা বোকা ঠেকতে পারে। কারণ পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজন বদলে যায়। কিন্তু এই প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে আপনার সঙ্গী যদি উত্তর দিতে ইতস্তত করেন, বা বলেন যে, ‘‘সেসব ভবিষ্যতে দেখা যাবে’’, তাহলে বুঝতে হবে, আপনাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি আদৌ ভাবেন না। সেটা খুব ভাল লক্ষণ নয়।
৪. তুমি কি আমার কষ্টগুলোর ভাগ নিতে প্রস্তুত : জীবন সর্বদা সরলরেখা মেনে চলে না। জীবনে উত্থান-পতন আসবেই। সেক্ষেত্রে যে বিষয়টা বিয়ের আগে জেনে নেওয়া সবচেয়ে জরুরি তা হল, যাকে আপনি বিয়ে করতে যাচ্ছেন তিনি আপনার দুঃখ এবং কষ্টগুলোর অংশীদার হতে প্রস্তুত কিনা। আপনার জীবনের অন্ধকার সময়ে তিনি যদি আপনার কষ্টের ভাগ নিতে না পারেন, তাহলে তিনি আপনার উপযুক্ত নন।
মূল্যবোধ
আমাদের মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা আমাদের আসল পরিচয় । আমরা কোথায় বাস করতে চাই, কী করতে চাই বা কী বিশ্বাস করি তা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই যাকে বিয়ে করতে চান তার ব্যাপারে এ সব তথ্য জেনে নিন। যদিও বলা হয়ে থাকে যে, বিয়ের ক্ষেত্রে মূল্যবোধে বিশ্বাস করা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং একে অপরকে সম্মান করা গুরুত্বপূর্ণ।
যোগাযোগ
প্রতিটি ব্যক্তির যোগাযোগের নিজস্ব উপায় রয়েছে। তাই যার সাথে বিয়ে করতে চান তার যোগাযোগের উপায়গুলো খেয়াল করুন। কেউ কেউ সারাদিন ফোন দিতেই থাকে। যা কিনা বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। আবার অনেকেই আছেন যারা নিজ থেকে যোগাযোগ করেন না। এটিও একটি বিব্রতকর অবস্থা।
অর্থ
বিয়ের আগে অর্থ সম্পর্কে কথা বলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোর মধ্যে একটি। এর মানে এই না যে, আপনি লোভী। ব্যয়ের অভ্যাস এবং সঞ্চয় পরিকল্পনার ব্যাপারে কথা বলুন। এতে আপনারা একে অপরের জীবনধারা সম্পর্কে অবগত হবেন।