ফরিদপুর চরভদ্রাসনের গাজীরটেক ইউনিয়নে তিনশত পরিবার নিয়ে গড়ে উঠা একটি গ্রামের নাম বাঞ্ছারাম বিশ্বাসের ডাঙ্গী। তবে পরিচিতি লাভ করেছে দুয়ারীপট্টী নামে। এক সময় এ গ্রামের দেড়শত পরিবারের প্রধান জীবিকা ছিল দুয়ারী তৈরী করা। তবে তা কমে এখন পঞ্চাশ পরিবারে দাঁড়িয়েছে। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে দুয়ারী (চাঁই) শিল্প। শিল্লীরা এর জন্য দায়ী করছেন চায়না দুয়ারী ও বোতল দুয়ারীর বিস্তারকে। খুঁজছেন বিকল্প আয়ের রাস্তা।

দেড়শ টাকার একটি বাঁশ হতে ৫০টি ছোট আকৃতির দুয়ারী তৈরী করা যায়। স্থানীয় ভাষায় একে চাইয়্যা বা চাঁই দুয়ারী বলে। একজন ব্যক্তি সারাদিনে পাঁচটি দুয়ারী তৈরি করতে পারেন। প্রতিটি দুয়ারী তৈরি করতে খরচ পড়ে পঁচিশ টাকা। প্রতিটি দুয়ারী বিক্রি করেন ৪০ টাকা।

সারা বছর চাঁই তৈরি করলেও সাধারণত বৈশাখ মাসে এর চাহিদা বাড়ে। পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত পরিশ্রম করে তৈরী করেন এ শিল্প সামগ্রী। একটা সময় ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকার ও স্থানীয়  মৎসজীবীরা বাড়িতে আসত দুয়ারী কিনতে। তবে এখন আর আগের মতো চাহিদা নেই দুয়ারীর।

ওই গ্রামের দুয়রী শিল্পী শেখ শিমুল(৩৭) বলেন, চায়না দুয়ারীর কারণে চাহিদা কমেছে চাঁই দুয়ারীর। ছোটবেলা হতে তিনি পিতার সাথে এ কাজই করছেন। এ শিল্পেই নির্ভর তাদের পরিবারের। চাহিদা কমে যাওয়ায় বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা ভাবছেন।

তাসলিমা বেগম (৩৩) বলেন, আগে ভালই ছিলেন, তারা তবে এখন শুধু দুয়ারী তৈরী করে সংসারের খরচ জোগাতে কষ্ট হচ্ছে। তাই তার স্বামী এ কাজের পাশাপাশি বিকল্প আয়ের সাথে যুক্ত হয়েছেন।

গাজীরটেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইয়কুব আলী বলেন, চায়না দুয়ারীর কারণে চরভদ্রাসনের দুয়ারী শিল্প হারাতে বসেছে। এক সময় এ গ্রামের দেড়শ পরিবারের প্রধান জীবিকা ছিল দুয়ারী তৈরী করা। তবে এখন তা কমে গেছে। 

উপজেরা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, চায়না দুয়ারীর বিস্তার রোধে এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তারা প্রাচারণা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই তারা বিভিন্ন নদ নদীতে অভিযান পরিচালনা করছেন। দুয়ারী শিল্প রক্ষায় তারা অভিযান আরও জোরদার করবেন বলে জানান।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews